ঘুষ-কাণ্ডে বঙ্গারু তিহাড়ে, চাপের মুখে কংগ্রেস উজ্জীবিত তহেলকায়
ফর্স কেলেঙ্কারি নিয়ে গত কালও সনিয়া গাঁধীর বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলে সংসদ অচল করে দিয়েছিল বিজেপি। আজ তাদেরই প্রাক্তন সভাপতি বঙ্গারু লক্ষ্মণ তহেলকা ঘুষ-কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হয়ে গেলেন তিহাড় জেলে।
বিরোধী পক্ষকে পাল্টা চেপে ধরার মোক্ষম সুযোগ পেল স্পেকট্রাম থেকে বফর্স কেলেঙ্কারি নিয়ে চাপে থাকা কংগ্রেস। দল ও সরকারের নেতারা একযোগে এ দিন ময়দানে নেমে পড়লেন বিজেপি-কে আক্রমণ করতে। যার মোদ্দা বিষয় হল, কাচের ঘরে থেকে অন্যের দিকে ঢিল ছোড়া বন্ধ করুক বিজেপি।
২০০১ সালে কেন্দ্রে এনডিএ সরকারের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিল অনিরুদ্ধ বহেলের নেতৃত্বে তহেলকা ওয়েবসাইটের এক ‘স্টিং অপারেশন’। ব্রিটিশ সংস্থার প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে সেনাবাহিনীর জন্য ‘থার্মাল ইমেজার’ বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিলেন তাঁরা। এ ব্যাপারে সরকারের উপরে প্রভাব খাটাবেন এই শর্তে লক্ষ টাকা ঘুষ নেন বঙ্গারু। সেই টেপ প্রকাশ্যে আসার পরে সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। ফৌজদারি মামলা চলতে থাকে। ১১ বছর পর বিশেষ সিবিআই আদালত আজ দোষী সাব্যস্ত করল তাঁকে। শাস্তি নিয়ে শুনানি হবে কাল। রাজসাক্ষী হওয়ায় আর এক অভিযুক্ত বঙ্গারুর ব্যক্তিগত সচিব টি সত্যমূর্তিকে ক্ষমা করা হয়েছে। বিচারক কানওয়ালজিৎ অরোরা আজই বঙ্গারুকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে জানান, শাস্তি ঘোষণার আগে জামিনের আর্জি বিবেচনা করা হবে না। কান্নায় ভেঙে পড়েন বঙ্গারু। পাশে ছিলেন তাঁর মেয়ে।
রায় জানার আগে বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি বঙ্গারু। ছবি: পিটিআই
বঙ্গারুর দল অবশ্য এতে মচকাচ্ছে না। বর্তমান পরিস্থিতিতেও বরং পাল্টা আক্রমণকেই আত্মরক্ষার হাতিয়ার করছে তারা। গত কাল জনতা পার্টির নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমের ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ তুলেছেন, তা নিয়ে আজও সংসদে সরবই ছিলেন বিজেপি নেতারা। চিদম্বরমকেই বরং ফাইলপত্র নিয়ে গিয়ে কংগ্রেস কোর গ্রুপের বৈঠকে ব্যাখ্যা করতে হয়েছে যে, তাঁর ছেলে কার্তি টুজি দুর্নীতিতে (এয়ার ম্যাক্সিস চুক্তি, যা নিয়ে সিবিআই তদন্ত করছে) জড়িত নন। বৈঠক থেকে বেরিয়ে বলতে হয়েছে, স্বামীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হবে।
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে গেলেও নিঃসন্দেহে অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। দলের প্রাক্তন সভাপতি হওয়ার সুবাদে বঙ্গারু এখনও দলের এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্য। তাঁর থেকে আজ দূরত্বই রাখতে চেয়েছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র শাহনওয়াজ হোসেন বলেন, “দল আগেই বঙ্গারু লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। তাঁকে সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আদালত রায় দিয়েছে ব্যক্তিগত ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে। এ বার তিনি উচ্চতর আদালতে যাবেন কি না, সেটা তিনিই ঠিক করবেন।” কাল সাজা ঘোষণার পর রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি বুঝে বঙ্গারুর দলীয় সদস্যপদ খারিজ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিজেপি।
স্বাভাবিক ভাবেই আজকের রায়ে উজ্জীবিত কংগ্রেস। রায় ঘোষণার পরেই কোর গ্রুপের বৈঠক ডাকেন সনিয়া-মনমোহন। কংগ্রেসের নেতারা বিগত দিনগুলিতে বারবারই বঙ্গারু প্রসঙ্গ তুলে বিজেপি-র আক্রমণ সামলেছেন। কিন্তু তহেলকা-কাণ্ড পুরনো হয়ে গিয়েছে, ঘরোয়া মহলে সেটাও স্বীকার করতেন তাঁরা। আজ কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, সুইডিশ পুলিশ-কর্তার এক সাক্ষাৎকারে যদি বোতল থেকে ফের বফর্সের ভূত বেরিয়ে আসতে পারে, তবে তহেলকাতেই বা তা হবে না কেন? বড় বিষয় হল, বিজেপি-র আক্রমণকে ভোঁতা করা এখন সহজ হবে। কালই সংসদে বফর্স নিয়ে বিচারবিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি করেছে বিজেপি। আজ সিব্বল পাল্টা আক্রমণে দিয়ে বলেন, “বিজেপি-র উচিত ছিল তহেলকা-কাণ্ড নিয়ে তদন্ত দাবি করা।” সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, “দেশের রাজনীতিতে আজ সব থেকে বড় দুঃখের দিন। ইতিহাস তৈরি করল বিজেপি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.