চার বিঘা জমির ভাগ নিয়ে গোলমালের জেরে দাদাকে গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠল দুই ভাইয়ের নামে। সোমবার রাতে ইংরেজবাজার থানার কাজীগ্রামের গোপালপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম ভুরন মণ্ডল (৩৫)। মঙ্গলবার মরা ভাগীরথী নদীর বাঁশের সাঁকোর নিচের কচুরিপানার মধ্যে থেকে দেহটি উদ্ধার হয়। ভুরনের গলায় দুটি এবং বুকে একটি গুলি করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী চন্দনাদেবী দুই দেওর এবং শাশুড়ির বিরুদ্ধে স্বামীকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার পরেই উত্তেজিত গ্রামবাসীরা অভিযুক্ত এক ভাই এবং নিহতের মাকে বেধড়ক মারধর করেন। জখম অবস্থায় গ্রেফতারের পর তাঁদের মালদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অভিযুক্ত এক ভাই পালিয়ে গিয়েছে। মালদহ জেলা পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। জমিকে ভাগকে কেন্দ্র করে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ এসেছে। অভিযুক্ত এক ভাই ও মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত আরেক ভাই পালিয়ে গিয়েছে। নিহতকে ঠিক কে গুলি করল তাও দেখা হচ্ছে।” নিহতের স্ত্রী চন্দনাদেবী বলেন, “স্বামী প্রাপ্য জমির ভাগ চাওয়ায় দুই দেওর ওঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিল। রাতে একা পেয়ে দুই দেওর ওঁকে গুলি করেছে। এই ঘটনায় শ্বাশুড়িও যুক্ত রয়েছে।” ভুরন মণ্ডল, তাপসিয়া মণ্ডল ও উপোসিয়া মণ্ডল তিন ভাই। তাঁদের মা ফেলো মন্ডল। নিহত দুগার্পুর স্টিল প্ল্যান্টে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতেন। বাকি দুই ভাই এলাকায় চাষের কাজ করেন। বেশ কিছুদিন ধরেই পরিবারের ৪ বিঘা জমি নিয়ে তাঁর সঙ্গে গোলমাল চলছিল। সম্প্রতি ভুরন বাড়িতে এসেছিলেন। তার পরেই জমি নিয়ে তাঁর সঙ্গে দুই ভাইয়ের গোলমাল শুরু হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, গত সোমবার মরা ভাগীরথী নদীর ওপারে সাইকেল নিয়ে ভুরন এক শ্রাদ্ধবাড়িতে নিমন্ত্রণে গিয়েছিলেন। রাত ১২টা নাগাদ বাঁশের সাঁকো পার হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় তাঁকে গুলি করা হয় বলে অভিযোগ। তবে নেহাতই জমির গোলমালের জেরে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে না এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। সেই সময় অভিযুক্তরা কোথায় ছিলেন তাও পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। স্থানীয় গ্রামবাসী রমেশ মণ্ডল, উমেশ মণ্ডল জানান, ৪-৫টি গুলির শব্দ শুনতে পাই। দুই ভাই যে দাদাকে গুলি করতে পারে তা ভাবতেই পারিনি। সকালে কচুরিপানার মধ্যে একটি পা দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। গ্রামবাসীরা তাপোসিয়া ও উপোসিয়া মন্ডলের বাড়িতে চড়াও হয়। নিহতের মাকে বার করে মারধর শুরু করে। পুলিশ এসে মহিলাকে উদ্ধার করে। এক কীতর্নের আসর থেকে অভিযুক্ত উপোসিয়াকে ধরে মারধর শুরু করে গ্রামবাসীর। তাঁকে পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। তাপসিয়া পালিয়ে যায়। |