১১ বছর পরেও রায়গঞ্জের রবীন্দ্রভবন নির্মাণের কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। শহরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক কমিটি ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন দ্রুত ওই কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের কাছে। জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া বলেন, “কাজ শেষ করতে অন্তত আরও প্রায় ২ কোটি টাকা প্রয়োজন। রাজ্য সরকার ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের কাছে টাকা বরাদ্দের আর্জি জানানো হয়েছে। টাকা পেলেই কাজ শেষ হবে।” জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে আগামী ৮ মে রবীন্দ্র জয়ন্তীর অনুষ্ঠান নির্মীয়মাণ ভবনে আয়োজন করা যায় কিনা তা খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। ২০০১ সালে রবীন্দ্রভবন তৈরি শুরু হয়। জেলার ডান ও বাম দুই সাংসদ তাঁদের সাংসদ তহবিল থেকে কয়েক লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন। প্রায় ৭ বছর কাজ চলার পর টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় জেলা প্রশাসন ও পূর্ত দফতরকে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থা কাজ বন্ধ করে দেয়। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত সাংসদ তহবিলের টাকা ছাড়াও রাজ্য সরকারের প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। সাংসদ তহবিলের টাকা ধরে তার পরিমাণ প্রায় পৌনে দু’কোটি টাকা। খরচ হওয়া টাকায় ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হলেও টাকার অভাবে ওই ভবনে সাউন্ডসিস্টেম, বিদ্যুদয়ণ, শৌচাগার ও পানীয় জলের পরিকাঠামো গড়ে তোলা যায়নি। দর্শকদের বসার জন্য কয়েকশো চেয়ারও বসানো সম্ভব হয়নি। রায়গঞ্জ নাগরিক কমিটির সম্পাদক তপনকুমার চৌধুরী বলেন, “শহরের তিনটি অনুষ্ঠান হল আছে। তবে দুটি হলের পরিকাঠামো ভাল নয়। ফলে সংস্কৃতি চর্চা বিঘ্নিত হচ্ছে। সরকার, জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা তৎপর হলে বহুদিন আগেই রবীন্দ্রভবনের কাজ শেষ হত। আমরা প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছি।” |
পাশাপাশি শহরের শিল্পী ও বাসিন্দাদের আবেগকে গুরুত্ব দিয়ে নির্মীয়মাণ রবীন্দ্রভবনেই এ বছর সরকারি উদ্যোগে রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠান আয়োজন করার আর্জি জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান। রায়গঞ্জ কালচারাল ফোরামের সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “বহুবার প্রশাসনে জানিয়েও লাভ হয়নি। এ বছর আমরা বকুলতলা এলাকার রাস্তার ধারে রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেখানে জেলার কয়েকশো শিল্পী কাজ শেষ করার দাবিতে জনমত সংগ্রহ করবেন।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, “আমি বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানিয়েছি।” রায়গঞ্জ শহর বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নীলকমল সাহার অভিযোগ, কংগ্রেসের অভিযোগ ভিত্তিহীন। বামফ্রন্ট সরকারের উদ্যোগেই নির্মাণ-কাজ শুরু হয়। বর্তমানে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট সরকারও কাজ শেষ করার ব্যাপারে উদাসীন। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ বলেন, “সরকার দ্রুত রবীন্দ্রভবন নির্মাণের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে।” |