সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে আগামী জুন মাসের মধ্যে অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য ‘স্মার্ট কার্ড’ চালু করবে রাজ্যের শ্রম দফতর। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে অংসগঠিত শ্রমিকদের সহয়তা প্রকল্পে ওই ঘোষণা করেন রাজ্যের শ্রম মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। তিনি জানান, ওই কার্ডের নাম দেওয়া হবে সামাজিক মুক্তি। সেখানে একজনকে শ্রমিকদের জীবনপঞ্জি থাকবে। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের কোন কোন প্রকল্পে কী কী সুবিধে একজন অসংগঠিত শ্রমিক পাবেন তা নিয়ে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া থাকবেন।
তিনি বলেন, “অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকরা সরকারি সুযোগ সুবিধে সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল নন। ফলে শ্রম দফতরে খুব সংখ্যক শ্রমিক নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। কাউকে দোষ না দিয়েও বলছি নতুন সরকারের দশ ১০ লক্ষ শ্রমিকের নাম আমরা নথিভুক্ত করেছি। গত ১০ বছরে ১০ লক্ষ নথিভুক্ত হয়েছে। শ্রমিকদের কাছে পৌঁছতে না পারা ও ওই প্রকল্প সম্বন্ধে না জানাতে পারার জন্যই আমরা পিছিয়ে আছি। আমরা চেষ্টা করছি গতি বাড়ানোর জন্য। সমস্ত ট্রেড ইউনিয়ন এবং শ্রম দফতরের আধিকারিকদের যৌথ উদ্যোগে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছতে হবে। সে ব্যপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।” মন্ত্রী জানান, বর্তমানে শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করার ফর্মটি অনেক জটিল। ‘সামাজিক মুক্তি’ কার্ড সে সমস্যা দূর হবে। রাজ্যে প্রায় কয়েক কোটি অসংগঠিত শ্রমিক রয়েছে বলে শ্রম দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
মন্ত্রী এদিন জানান, সামাজিক মুক্তি কার্ডের পাশাপাশি অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিকদের সহয়তা দ্বিগুণ করা হবে। মৃত্যুকালিন সহায়তা, পড়াশোনা, মাতৃত্বকালিন সহায়তা দ্বিগুণ করা হবে। নির্মাণ, বিড়ি, পরিবহণ সহ প্রায় ৬১টি ক্ষেত্রের শ্রমিক ওই সহায়তা পাবেন। বর্তমানে মাতৃত্বকালিন এবং পড়াশোনা ক্ষেত্রে ৩ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসংগঠিত শ্রমিকদের দেওয়া সমস্ত সহায়তা দ্বিগুণ করার কথা অনেকদিন আগে ঘোষণা করেছেন। আমরা খুব শীঘ্রই তা দ্বিগুণ করব।” এদিন সকালে শিলিগুড়ি সার্কিট হাউসে উত্তরবঙ্গের শ্রম দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন মন্ত্রী। সেখানে শ্রমিকদের সমস্ত সুযোগ সুবিধে দেওয়ার প্রকল্পগুলি নিয়ে কাজে জোর দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের বন্ধ থাকা তিনটি চা বাগান খোলার ব্যপারেও উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। মন্ত্রী বলেন, “তিনটি চা বাগান বন্ধ রয়েছে। সেগুলি যাতে খোলা যায়, সে ব্যপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে। দার্জিলিংয়ের রিংটং চা বাগান সোমবার খোলার কথা ছিল। তা হয়নি। আমরা ফের আলোচনায় বসব। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের হাতে থাকা ডুয়ার্স ও পাহাড় মিলিয়ে তিনটি চা বাগান রয়েছে সেগুলি লোকসানে চলছে। সেগুলি পিপিপি মডেলে করার ব্যাপারে ভাবনা চলছে।”
এদিনের সভায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, বিধায়ক তথা দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার, সিটুর দার্জিলিং জেলা সভাপতি অজিত সরকার সহ আইএনটিইউসি, আইএনটিটিইউসির নেতারা সভায় উপস্থিত ছিলেন। অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য একযোগে কাজ করার কথা বলেন।
এ দিন অসংগঠিত ক্ষেত্রের কয়েক জন শ্রমিকের হাতে সাইকেল, টাকা তুলে দেন মন্ত্রী। আধিকারিকরা জানান, এই পর্যায়ে ১১৫৬ জন শ্রমিকের হাতে ১৪ লক্ষ ৬৮৯২৭ টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে। |