অদম্য ইচ্ছাশক্তি এবং হার না মানা মানসিকতাই সম্বল। এই দু’য়ের জোরেই চরম আর্থিক প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে বঙ্গীয় ভূগোল মঞ্চের মেধা অনুসন্ধান অভীক্ষায় রাজ্যে প্রথন স্থান দখল করলেন দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মাধব রায়। তিনি তুফানগঞ্জের নাটাবাড়ি হাইস্কুলের ছাত্র। আগামী ৬ মে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাধবের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন ভুগোল মঞ্চের কর্তারা। মাধবের এমন সাফল্যে খুশির হাওয়া এলাকায়। উচ্ছ্বসিত এলাকার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষও। বঙ্গীয় ভূগোল মঞ্চ প্রতি বছর পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যে মেধা অনুসন্ধানের অভীক্ষার আয়োজন করে। গত বছর নভেম্বরে মাসেঅভীক্ষা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে অভীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। বঙ্গীয় ভূগোল মঞ্চের সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত চিঠিতে মাধবের প্রথম স্থান প্রাপ্তির খবর এসেছে। নাটাবাড়ি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রণজিৎ সেন বলেন, “এরকম প্রত্যন্ত এলাকায় থেকে আর্থিক দুরাবস্থার মধ্যে লেখাপড়া করে মাধব এমন সাফল্য পাওয়ায় আমরা গর্বিত। আগামী ৬ মে কলকাতায় পুরস্কার নিতে যেতে ওর যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা আমরা দেখছি। স্কুলের পক্ষ থেকে মাধবকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।” নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “মাধবের সাফল্য দারুণ প্রশংসাযোগ্য। ইচ্ছাশক্তি থাকলে প্রত্যন্ত এলাকায় থেকেও যে রাজ্যের সেরা হওয়া যায় তা মাধব প্রমাণ করেছে। শীঘ্রই ওর বাড়িতে যাব। ভবিষ্যতে ওর পড়াশোনার যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা দেখব।” নাটাবাড়ির ছাটবড়চৌকি গ্রামে মাধবদের বাড়ি। বাবা রাজেন রায় দিনমজুর। মা মধুমালাদেবী সংসার সামলান। টানাটানির সংসার। তিন ছেলের মধ্যে মাধব দ্বিতীয়। মাধ্যমিকেও মাধব প্রথম বিভাগে পাশ করে। পড়াশোনায় মাধবের আগ্রহ দেখে শিক্ষকেরা ওর দিকে বাড়তি নজর দিতেন। স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক অচ্যিন্ত সাহা, ভূগোল শিক্ষক সঞ্জীব সেন ভূগোল অভীক্ষার ব্যাপারে মাধবকে উৎসাহ দেন। শিক্ষক হতে চায় মাধব। ওর কথায়, “শিক্ষকদের উসাহ ও সাহায্যেই ভাল ফল হয়েছে। তবে রাজ্যে প্রথম হব ভাবিনি।” ভাইয়ের সাফল্যে খুশি মাধবের দাদা রথেশ্বর রায় বলেন, “সংসারের অবস্থা ভাল নয়। স্কুলের শিক্ষকেরা পাশে না দাড়ালে এটা সম্ভব ছিলনা। আমাদের খুবই আনন্দ হচ্ছে।” |