গরু পাচারকারীরা হামলা চালাল স্বরূপনগরের সীমান্তবর্তী গ্রাম তারালিতে। ৮-১০টি বাড়িতে ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা। মহিলার শ্লীলতাহানি করা হয় বলেও অভিযোগ। দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্তারা পরে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’ করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন সীমান্তবর্তী গ্রামের মধ্যে দিয়ে গরু পাচারের ঘটনা ইদানীং বেড়েছে। ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিবাদ করলে ভিনদেশি দুষ্কৃতীরা প্রায়ই এ দেশের গ্রামের মানুষকে মারধর, হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। স্বরূপনগরের তারালি সীমান্ত দিয়ে বয়ে গিয়েছে সোনাই নদী। ও পারে বাংলাদেশের তারাগাঝি গ্রাম। নদী এই এলাকায় এমনিতেই সরু। তার উপরে প্রচণ্ড গরমে জল শুকিয়ে আসায় হেঁটেই পারাপার করা যাচ্ছে।
অভিযোগ, সোমবার রাতে হাকিমপুর বিথারি পঞ্চায়েতের তারালি গ্রামের মধ্যে দিয়ে কয়েকশো গরু নিয়ে পাচার হচ্ছিল। বাধা দেন বিএসএফের ১৫২ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানেরা। তখনকার মতো পিঠটান দেয় পাচারকারীরা। জওয়ানেরা ফিরে যেতেই রাত দেড়টা নাগাদ ৪০-৫০ জন বাংলাদেশি পাচারকারী লাঠি-দা-বল্লম নিয়ে চড়াও হয় তারালি গ্রামে। গ্রামবাসীদের মারধর শুরু করে দুষ্কৃতীরা। লুঠপাট, ভাঙচুর চলে কয়েকটি বাড়িতে। কয়েক জন মহিলাকে বাড়ি থেকে টেনে বের করে শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ।
রুস্তম সর্দার, আমজাদ সর্দার, কুদ্দুস সর্দারেরা বলেন, “গ্রামের লোক গরু পাচারের খবর বিএসএফকে দিয়েছিল বলে ধরে নেয় দুষ্কৃতীরা। সে জন্যই হামলা চালায়। মহিলাদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেছে। সোনাই নদীতে থাকা কয়েকটি নৌকোও ভাঙচুর করে ওরা।” মঙ্গলবার সকালে ঘটনার কথা জানাজানি হতেই সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ আসে। ১৫২ নম্বর ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কম্যান্ডার ভিপি সিংহও গ্রামে আসেন। বিকেলের দিকে তারালি মোল্লাপাড়ার কাছে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্তারা ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’ করেন। পুলিশ ও হাকিমপুর বিথারি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আনিসউদ্দিন গাজিও ছিলেন সেখানে। গরু পাচারকারীদের নামের একটি তালিকা তুলে দেওয়া হয় বিজিবি কর্তার হাতে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। আনিসউদ্দিন বলেন, “ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে দিকে লক্ষ রাখতে বলা হয়েছে বিজিও কোম্পানি কম্যান্ডারকে। তিনি দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের পাশাপাশি ভাঙা নৌকো মেরামতিরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।” |