দুর্বাচটি মিলন বিদ্যাপীঠ |
প্রতিষ্ঠা১৯৪৮।
ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৩৬৮।
শিক্ষক-শিক্ষিকা২৮ জন।
পার্শ্বশিক্ষক-শিক্ষিকা---৪ জন। শিক্ষাকর্মী ১ জন।
২০১১ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৩৬ জন।
উত্তীর্ণ১২৭ জন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন
১২৪ জন। উত্তীর্ণ ১১৪ জন। |
|
অর্থাভাবে পড়ুয়াদের প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই করা যায়নি |
|
জ্যোতির্ময় জানা
(প্রধান শিক্ষক) |
|
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার সুন্দরবন অঞ্চলের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই কিছু বিদ্যোৎসাহী মানুষের আন্তরিক প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছিল এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দিনটা ছিল ১৯৪৮ সালের ১০ জানুয়ারি। মাটির দেওয়াল আর খড়েপ ছাউনির ঘরে জনা কয়েক পড়ুয়াকে নিয়ে পথ চলা হয়েছিল দূর্বাচটি মিলন বিদ্যাপীঠের। যত সময় এগিয়েছে বেড়েছে পড়ুয়ার সংখ্যা। পরিবর্তন ঘটেছে এক সময়ের ছোটো সেই চালাঘরের। চালা ঘরের বদলে আজ সেখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে তিনতলা পাকা ভবন। যদিও তার বয়সও হয়ে গিয়েছে অনেক। আর বয়সের কারণে স্বাভাবিক নিয়মেই জীর্ণ হয়েছে তার সর্বাঙ্গ। বিদ্যালয়ের আর্থিক সঙ্গতির দূরবস্থার কারণে সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। তবে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বাড়ায় এ সি আর নির্মাণ প্রকল্পে কয়েকটি নতুন ক্লাসঘর তৈরি হয়েছে। এই প্রকল্পে আরও ৭-৮ টি ক্লাসঘর তৈরি হলে সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে। ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে স্কুলের চারপাশে প্রাচীর দেওয়ার কাজে তিনদিকের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু অর্থাভাবে একদিকের কাজ শেষ করা যায়নি। আর্থিক সাহায্য পেলে সেই কাজ সম্পূর্ণ হতে পারে। ২০০৭ সালে বিদ্যালয় উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়। কলা, বিজ্ঞান, বাণিজ্য শাকার পাশপাশি বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। বিদ্যালয়ে দূরদুরান্ত থেকে ছাত্রছাত্রীরা পড়তে আসে। সে ক্ষেত্রে দু’টি হস্টেলের আশু প্রয়োজন। কিন্তু অর্থাভাবে সে কাজ আজও শুরু করা যায়নি। বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যায় শিক্ষক-শিক্ষিকা, করণিকের অভাব রয়েছে। পরিকাঠামোগত এই সব সমস্যার সুরাহা হলে পঠনপাঠ আরও উন্নত হবে। সে ক্ষেত্রে উপকৃত হবেন ছাত্রছাত্রীরা। তবে শুধু পড়াশোনা নয়, ছাত্রছাত্রীদের নৈতিক চরিত্র গঠন, শরীরচর্চা, মৌলিক চিন্তার বিকাশের দিকেও নজর দেওয়া হয়। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের উদ্যোগে সাহিত্য পত্রিকাও প্রকাশ করে। তবুও মাঝেমধ্যে ছন্দপতন ঘটে যায়। কিন্তু এটাও সত্য যে অন্ধকারের অপর দিকেই থাকে আলোর উৎস। সেই প্রত্যয় নিয়েই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে ছাত্রছাত্রী সকলেই আমরা এগিয়ে চলেছি। |
আমার চোখে
প্রিয়াঙ্কা দাস
(ক্লাস টেন-এর ফার্স্ট গার্ল) |
|
|
ছোট্ট প্রাথমিক স্কুলের গণ্ডী পেরিয়ে যে দিন এই বিদ্যালয়ে প্রকাণ্ড ভবনে পা রেখেছিলাম সেদিন বুকটা দুরু দুরু করে উঠেছিল। ক্লাস ফাইভের সেই ছোট্ট মেয়েটি এখন দশম শ্রেণির ছাত্রী। বিদ্যালয়ের প্রথম সেই দিন বিশাল বড় স্কুল, এত জন শিক্ষক-শিক্ষিকা আর ছাত্রছাত্রীদের দেখে মনে ভেবেছিলাম এই বিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী হিসাবে নিজেকে প্রমাণ করতে পারব তো? আজ পর্যন্ত নিজেকে কতটা প্রমাণ করতে পেরেছি জানি না, কিন্তু প্রথম সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অকুণ্ঠ সহযোগিতা পেয়েছি নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে। দেখেছি প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর প্রতি জন্য তাঁরা কতটা যত্নবান। তবে বিদ্যালয়ে আরও কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকার ব্যবস্থা করা হলে ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হয়। ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য প্রয়োজন ছাত্রবাসের। ছাত্রীদের জন্য কমন রুমের ব্যবস্থা করা হলে উপকার হয়। তবে যখন শুনি নানা সমস্যা সত্ত্বেও এই বিদ্যালয় থেকে অনেক কৃতী ছাত্রছাত্রী বেরিয়েছেন তখন অনুপ্রাণিত হই।
|