আইপিএলে তাঁর টিমের জোলো পারফরম্যান্স নিয়ে উদাসীন আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের এক নম্বর বোলার। মনে করেন, লম্বা লিগে ঘুরে দাঁড়াতেই পারে ডেকান চার্জার্স। আইপিএলে শেষ ওভারে বোলিং থেকে টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ এবং সদ্য ভারতে পা রাখা বান্ধবী অভিনেত্রী জিয়ান কিয়েৎজমান, টিম হোটেলে আনন্দবাজার-কে একান্ত সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সব কিছুই খোলসা করে দিলেন ডেল স্টেইন।
|
টিম হোটেলে স্টেইন।
ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
প্রশ্ন: লোকে ধরেই নিয়েছে এ বারের আইপিএলে ডেকানের আশা নেই... স্টেইন: আশা নেই বিশ্বাস করি না। ইডেনের আগে যে পাঁচটা ম্যাচ খেলেছি, তাতে আর একটু পরিণতি দেখালে ৪-১ জিতে থাকতাম। আট পয়েন্ট হত। সব কিছুই ভাল হয়েছে, শুধু ফিনিশটা ঠিকঠাক করতে পারিনি। এখনও দশ-এগারোটা ম্যাচ বাকি। ডেকান ঘুরে দাঁড়াবেই।
প্র: টি-টোয়েন্টিতে চার-ছক্কার ছড়াছড়ি, শেষ ওভারে কুড়ি-বাইশ তুলে জিতে যাচ্ছে এক-একটা টিম। মনে হয় না, এই ফর্ম্যাটটা শুধুই ব্যাটসম্যানদের? আপনারা বেলাররা পড়ে আছেন শুধু মার খাওয়ার জন্য?
স্টেইন: (হেসে) আমার মনে হয় না। এটা ঠিক, চার-ছয়ই লোকে টি-টোয়েন্টিতে দেখতে চায়। কিন্তু উইকেটও তো পড়ে। শেষ ওভারে একটা ভাল ইয়র্কার, স্লোয়ার বা পারফেক্ট লেংথ বলও তো ম্যাচ ঘোরায়। আমার এই ফর্ম্যাটে বোলিং করতে বেশ লাগে। আপনি যখন জানেন আপনাকে ওড়ানোর চেষ্টা করবেই, তখন বলটা ঠিক জায়গায় রাখাটা তো স্কিল।
প্র: ক্যাপ্টেন যদি শেষ ওভারে আপনার হাতে বল তুলে দেয়, বিপক্ষের দশ রান বাকি থাকে, ছ’টা বল কী ভাবে করবেন?
স্টেইন: এটা এ ভাবে বলা যায় না। কে ব্যাটসম্যান, ম্যাচের পরিস্থিতি কী, উইকেট কী রকম, সব কিছুর উপর নির্ভর করবে। তবে চ্যালেঞ্জটা নিশ্চয়ই নেব। টি-টোয়েন্টিতে শেষ ওভারে বল করাটাই তো চ্যালেঞ্জ। টেস্টে সারা দিনে আপনি ১৫-২০ ওভার করতে পারেন। একটা স্পেল খারাপ করলেও পরে ফিরে আসার সুযোগ থাকে। টি-টোয়েন্টিতে সেই সুযোগ নেই।
প্র: এত বছরের কেরিয়ারে কোন পাঁচ ব্যাটসম্যানকে সবার আগে
রাখবেন, যাদের বল করতে চাইবেন না?
স্টেইন: বল করতে চাইব না কেন? শুনুন, আমি কোনও ব্যাটসম্যানকে কোনও দিন ভয় পাইনি।
প্র: ফর্মে থাকা সচিনকে বল করতে হলেও ঘাবড়াবেন না?
স্টেইন: (মুখ কুঁচকে) একেবারেই না। সচিন ঠিক আছে। কিন্তু নিজের দিনে সহবাগ ভয়ঙ্কর। যদিও ওকে আমি পাঁচ-ছ’বার আউট করেছি। রিকি পন্টিং খুব ভাল। ফর্মে থাকলে ওকে আউট করা কঠিন। কালিস-ও খুব বড় ব্যাট।
প্র: ইডেনেই তো আপনার বিপক্ষ টিমে কালিস?
স্টেইন: ওর কাছ থেকে অনেক শিখেছি। আমরা একে অপরের বিষয়ে জানি। মাঠে লড়াই হলে জমে ভাল। আর আমার অবাক লাগে ইউসুফ পাঠানকে দেখে। ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যান।
প্র: আইপিএলের জন্য ভারতে টেস্টের দর্শক কমে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে টেস্ট ক্রিকেট বাঁচবে?
স্টেইন: ঠিক জানি না। তবে টেস্ট ম্যাচে দর্শক কমে যাওয়াটা ভয়ের। আইসিসি নিশ্চয়ই কিছু ব্যবস্থা নেবে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় ক্রিসমাসের সময় বা নতুন বছরে খেলা কোনও টেস্টে দর্শকাসন ফাঁকা থাকে না।
প্র: এক জন ফাস্ট বোলারের জন্য মনোবিদ ঠিক কতটা জরুরি?
স্টেইন: খুব জরুরি। কোনও টেস্ট বা ওয়ান ডে-তে প্রত্যাশামতো বোলিং না করতে পারলে অনেক বারই মনোবিদের সাহায্য নিয়েছি। বড় ফাস্ট বোলারের জন্য বড় মনের ক্যাপ্টেন লাগে। সেটাও আমি পেয়েছি। গ্রেম স্মিথ, কালিস, বাউচারদের পাশে পাওয়াটা বড় প্রাপ্তি। ওদের সাহায্য না পেলে এই ডেল স্টেইনকে আপনারা পেতেন না।
প্র: তা-ও প্রোটিয়ারা এক বারও বিশ্বকাপ জেতেনি। এক নম্বর টেস্ট দলও নয়..
স্টেইন: আমি তো সবে একটা বিশ্বকাপ খেলেছি। ২০১১। নক-আউটে হেরেছিলাম। আর র্যাঙ্কিং আমার কাছে একটা নম্বর মাত্র। আমরা অবশ্যই বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দল হওয়ার ক্ষমতা রাখি।
প্র: মাঠে এত বদরাগী মনে হয়। মাঠের বাইরে এত শান্ত থাকেন কী করে?
স্টেইন: ফাস্ট বোলারকে কি মাঠের বাইরেও রুক্ষ হতে হবে?
প্র: দু’মাস ভারতে থাকবেন। অবসরে কী করবেন?
স্টেইন: আইপিএলের সময় অবসর পাওয়া খুব কঠিন। বড্ড ঘুরতে হয়। আমার বান্ধবী জিয়ান কাল রাতে এসেছে। ও আপনাদের দেশটা ভাল করে দেখতে আগ্রহী। সময় পেলে ওকে নিয়ে বেড়াব। খেলার ফাঁকে অবসর সময়টা শুধু জিয়ানকে দিতে চাই। |