অবশেষে রিয়াং শরণার্থীরা ঘরে ফিরতে চলেছেন। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে এই প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। মোট পাঁচ পর্বে রিয়াং শরণার্থীদের ত্রিপুরা থেকে মিজোরামে, স্বভূমিতে ফেরানো হবে।
এই ঘটনাকে, রিয়াং-সমস্যা সুরাহার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমের সাম্প্রতিক প্রয়াসেরই সুফল বলে মনে করছে ত্রিপুরা প্রশাসনের একাংশ। ত্রিপুরার কাঞ্চনপুরের বিভিন্ন শিবিরে বসবাসকারী মিজোরামের ৬৬৯ রিয়াং পরিবার এই পার্যায়ে মিজোরামে ফিরে যাবেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যের ত্রাণ সচিব স্বপন সাহা। ২৬ এপ্রিল থেকে এই প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু হবে। এই বিষয়ে উত্তর ত্রিপুরার জেলা প্রশাসন এবং মিজোরামের মামিত জেলা প্রশাসন স্তরে আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে: ২৬ এপ্রিল, ৪ মে, ৮ মে, ১১ মে এবং ১৫ মে এই পাঁচ পর্যায়ে রিয়াং পরিবারের ৩৬৫২ জন সদস্য স্বভূমি মিজোরামে ফিরে যাবেন। গত বছরের গোড়ার দিকে তিন পর্বে কয়েক শো পরিবার মিজেরামে ফিরেছিলেন। কিন্তু অজ্ঞাত কোনও কারণে সেই প্রক্রিয়া হঠাৎ থমকে যায়।
উল্লেখ্য, গত এক দশকের বেশি সময় ধরে মিজোরাম থেকে আগত রিয়াং জনগোষ্ঠীর সদস্যরা কাঞ্চনপুরের পুনর্বাসন শিবিরে দিন গুজরান করছেন। আগরতলায়, সচিবালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৬ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া যদি সুষ্ঠু ভাবে শেষ হয়, তবে দুই রাজ্যের প্রশাসনিক স্তরে আলোচনার পর পরবর্তী পর্যায়ে প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়ে আলোচনা শুরু হবে।
ত্রিপুরার পুনর্বাসন শিবিরে বসবাসকারী রিয়াং-ব্রু পরিবারগুলির আর্থ-সামাজিক সমস্যার জট খুলতে গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর সফরে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তারপর তিনি মিজোরাম সফরেও যান। ত্রিপুরায় থাকলে কোনও ভাবেই রিয়াং বা ব্রু জনগোষ্ঠীর সমস্যা বিষয়ে আলোচনা সম্ভব নয়, কাঞ্চনপুর সফরে এসে সে কথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী। মিজোরামে ফিরে গেলেই তাঁদের সমস্যা সমাধানে কেন্দ্রীয় সরকার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে, এ কথা বলে তিনি রিয়াং প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করেছিলেন। উল্লেখ্য, প্রায় ১৪-১৫ বছর আগে জাতিগত সমস্যার কারণে মিজোরাম থেকে বাস্তুচ্যূত হয়ে রিয়াং জনগোষ্ঠীর প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ উত্তর ত্রিপুরার কাঞ্চনপুরে এসে আশ্রয় নেন। গত বছরে কয়েক শো পরিবার স্বভূমিতে ফিরে গেলেও এখনও কাঞ্চনপুরের ৬-৭টি শিবিরে বাস করছেন ৫ হাজার ৯০০ পরিবার। |