পার্ক স্ট্রিট-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত কাদের খান এখন কোথায়, সে ব্যাপারে ঘটনার আড়াই মাস পরেও অন্ধকারে পুলিশ। তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান দেখে দেশের ভিতরে তার গতিবিধির ব্যাপারে সূত্র পেয়েছিল পুলিশ। তা থেকে জানা যায়, ওই ঘটনার পরে কাদের মুম্বই যায়। বর্তমানে সে বাংলাদেশে রয়েছে বলে লালবাজারের একাংশের দাবি।
মঙ্গলবার জানা গিয়েছে, কাদেরকে মুম্বইয়ে পালাতে সাহায্য করেছিল ওই ঘটনায় আর এক অভিযুক্ত সুমিত বজাজ। সে নিজে কাদেরকে মুম্বইয়ে পৌঁছে দিয়ে শহরে ফিরে এসেছিল। ওই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতা থেকেই সুমিত-সহ রুমান খান এবং কাদেরের ভাই নাসির খানকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা বিভাগের গুণ্ডাদমন শাখা। বর্তমানে ওই তিন জনই জেল হাজতে রয়েছে।
এ দিন কলকাতা হাইকোর্টে সুমিতের জামিনের আবেদন করা হয়। এর আগে নিম্ন আদালতে বেশ কয়েক বার তার জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। এ দিনও আবেদন খারিজ করে দিয়েছে বিচারপতি অসীম রায় ও বিচারপতি তফিকুদ্দিনের ডিভিশন বেঞ্চ।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে পার্ক স্ট্রিটের একটি পাঁচতারা হোটেলের ডিস্কো থেকে বেরোনোর পরে এক মহিলাকে গাড়িতে তুলে ‘গণধর্ষণ’ করা হয় বলে অভিযোগ। ৯ ফেব্রুয়ারি ওই মহিলা পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সুমিত এবং তাঁর সঙ্গীদের গ্রেফতারের পরে পুলিশ জানতে পারে, ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ (১৪ ফেব্রুয়ারি)-র রাতে কলকাতা ছেড়েছিল কাদের। তদন্তকারীরা জানান, সেই সময়েই কাদেরকে মুম্বই পৌঁছে দিয়ে কলকাতায় ফেরে সুমিত। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, কলকাতা থেকে পালানোর পরে কাদের মুম্বই, বিহার, দিল্লি-সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছে। গোয়েন্দারাও তার খোঁজে তল্লাশি চালিয়েছেন একাধিক জায়গায়। কিন্তু কাদের ধরা পড়েনি। এ দিন আদালতে সরকার পক্ষের আইনজীবী দেবাশিস রায় জানান, ওই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত কাদেরকে এখনও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
এ দিন কলকাতা হাইকোর্টে সুমিতের আবেদনের সপক্ষে বলা হয়, পুলিশের তদন্তের জন্য তাকে আর প্রয়োজন নেই। দীর্ঘদিন তিনি জেল হেফাজতে রয়েছেন। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে বিচারপতিরা জানান, যে হন্ডা সিটি গাড়িতে ওই ধর্ষণ হয়েছিল বলে অভিযোগ, সুমিতই তার মালিক। টি আই প্যারেডেও অভিযোগকারিণী এবং গাড়ি পার্কিংয়ের কর্মরত কর্মীরা সুমিতকে শনাক্ত করেছিলেন। এমনকী, গাড়িটিকেও চিহ্নিত করেছিলেন অভিযোগকারিণী। সুমিতের গাড়ি থেকে ওই মহিলার কানের একটি দুলও পাওয়া গিয়েছে। |