|
|
|
|
তমলুকে আনন্দ বিপণির উদ্বোধন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
সাহিত্যের সঙ্গে পাঠকের যোগ মননের। জ্ঞান পিপাসু পাঠকের কাছে ভাল বই পৌঁছানোর সেতু বন্ধন হল আজ। মঙ্গলবার তমলুক শহরের ভীমার বাজারে আনন্দ পাবলিশার্সের নতুন পুস্তক বিপণির উদ্বোধন করে এ কথা বললেন তমলুক রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সম্পাদক স্বামী সত্যাত্মানন্দ।
পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক বর্গভীমা মন্দিরের কাছে শুভ অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে ‘আনন্দ’ র এই বিপণি উদ্বোধন উপলক্ষে ছিল উপচে পড়া ভিড়। জেলার শিক্ষা ও সাহিত্য চর্চার সঙ্গে জড়িত বিশিষ্টদের উপস্থিতির পাশাপাশি ছিল নবীন প্রজন্মের পাঠকদের ব্যাপক আগ্রহ। এ দিন বিপণির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর বইয়ে ডুব দিলেন শিক্ষক-গবেষক থেকে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাহিত্যিক তিলোত্তমা মজুমদারকে পেয়ে আপ্লুত পাঠকরা। তিলোত্তমার লেখা গল্প সংকলন কিনে তাঁর সই আবদার করে বসলেন তমলুকের বাসিন্দা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী দেবপ্রীতি জানা। লেখক-পাঠিকার এমন মিলনে আবেগঘন হয়ে উঠল বিপণির অন্দর। তিলোত্তমা বলেন, “তমলুক প্রাচীন ঐতিহ্যময় শহর। এখানকার মানুষ শিক্ষা ও সাহিত্য অনুরাগী। এই বিপণির মাধ্যমে সাহিত্যিক প্রকাশক ও পাঠকের সম্পর্ক আরও নিবিড় হবে। তমলুক শহরে আসতে পেরে আমি আনন্দিত।” |
|
বিপণির উদ্বোধনের পরই পছন্দের বই খুঁজতে মগ্ন হয়ে পড়েন তমলুকের বিশিষ্ট ইতিহাস গবেষক প্রদ্যোৎ মাইতি। অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক প্রদ্যোৎবাবু বলেন, “নিজের পছন্দমত বই বেছে নেওয়ার সুযোগ বেড়ে গেল। এই বিপণির মাধ্যমে পাঠকদের চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে এই বিপণি। কলেজের অধ্যাপক সুস্নাত জানা বলেন, “নিজের বাড়ির কাছে শহরে ‘আনন্দ’র বই কেনার এমন ব্যবস্থা হওয়ায় অনেক দিনের চাহিদা মিটল। |
|
বিপণি ঘুরে দেখছেন স্বামী সত্যাত্মানন্দ, তিলোত্তমা মজুমদার। সামনে উৎসাহীদের ভিড়। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস। |
অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক প্রণব বাহুবলীন্দ্র বলেন, “নতুন জেলা হলেও সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অগ্রণী এই জেলার পাঠক-শিক্ষা মহলের চাহিদা পূরণে আনন্দ পাবলিশার্স কতখানি গুরুত্ব দেয় এই বিপণি উদ্বোধন তার প্রমাণ। বাংলা সাহিত্যের সম্ভার জেলার পাঠককুলের আরও কাছাকাছি হল।” স্কুল শিক্ষক কৃতিসুন্দর পাল, সরকাকি কর্মী প্রদীপ্ত খাটুয়া, গবেষক কমল কুণ্ডু, কবি মল্লিনাথ চট্টোপাধ্যায়ের একই কথা, শহরে এমন সাহিত্য বিপণির খুব প্রয়োজন ছিল। এতদিনে তা পূরণ হওয়ায় পাঠকমহল উপকৃত হবেন। হলদিয়া থেকে আশিস মিশ্র, কাঁথি থেকে আসা দেবাশিস প্রধান উছ্বসিত হয়ে বলেন, ‘‘গোয়েন্দা ফেলুদা থেকে সমকালীন কবিতা সব ধরণের বই জেলার এই বিপণিতে পাওয়ার সুযোগ হল। আমরা এই উদ্যোগে আনন্দিত।”
আনন্দ পাবলিশার্সের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর সুবীর মিত্র জানান, “এটা আমাদের ১৯ তম বিপণি। প্রায় ৩০০০ টাইটেলের বই এখানে পাওয়া যাবে। সিগনেট প্রকাশিত নানা বইও এখানে পাওয়া যাবে।” সুবীরবাবু বলেন, “দুই মেদিনীপুর জেলা শিক্ষা সংস্কৃতিতে অগ্রণী। এই বিপণির মাধ্যমে পাঠকদের কাছাকাছি পৌঁছানোর সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।” তমলুক বিপণির পথে দেবব্রত দত্ত জানান, “বই ছাড়াও এখান থেকে পাওয়া যাবে ফেলুদা বা প্রফেসর শঙ্কুর ছবি দেওয়া টিশার্ট। এ ছাড়াও বিভিন্ন মূল্যের আনন্দ উপহার (গিফট কুপন) পাওয়া যাবে, যা দিয়ে পছন্দের বই কিনতে সুযোগ পাওয়া যাবে।” এ দিন বিপণির উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন তমলুক শহরের দুই কাউন্সিলার রবীন্দ্রনাথ সেন, জয়া দাস নায়েক। প্রবীণ রাজনীতিক রবীন্দ্রনাথবাবু বাড়ি ফেরার আগে খুদে নাতনির জন্য বই কিনতে ভোলেননি। |
|
|
|
|
|