|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর |
সমাধান সুদূর |
তৃষ্ণা তীব্র |
দেবাশিস দাস |
এগারোটি অঞ্চলের জন্য মাত্র চারটি জলাধার। সেখানেও জোগান কম। ফলে গরম পড়তেই উত্তর ও দক্ষিণ সোনারপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা এবং সংলগ্ন চম্পাহাটি এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট শুরু হয়েছে।
ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনে অন্তত দু’বার পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করার কথা। কোনও দিন এক বার জল আসে, কোনও দিন তা-ও আসে না। তা ছাড়া, অনেক সময় সরবরাহ করা জল পান করা যায় না। স্থানীয় সূত্রে খবর, জোগান কম থাকায় পানীয় জল নিতে এসে অনেক সময় বাসিন্দারা তীব্র বচসায় জড়িয়ে পড়েন। মাঝেমধ্যে তা হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়।
এই সময়ে দক্ষিণ সোনারপুরের কালিকাপুর এক ও দুই, প্রতাপনগর, কামরাবাদ, খুঁড়িগাছি, খেয়াদহ এক ও দুই, উত্তর সোনারপুরের বনহুগলি এক ও দুই, লাঙলবেড়িয়া, পোলঘাট ও বারুইপুর সংলগ্ন চম্পাহাটি এলাকায় পানীয় জলের কলের সামনে কলসি, বালতি, বোতল, গামলার লম্বা লাইন দেখা যায়। কেউ কেউ আবার এই জলের ভরসা না করে টিউবওয়েলের মুখে গামছা বেঁধেও পানীয় জল সংগ্রহ করেন।
|
|
চম্পাহাটি এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, অনেক সময় এমন জল আসে যা পান করা যায় না। কিছুক্ষণ রাখার পরেই সেই জল ঘোলাটে বা লাল হয়ে যায়। অনেক সময় জলে দুর্গন্ধও থাকে। স্থানীয় সূত্রে খবর, এই সব সমস্যার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে সম্প্রতি বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়েন জেলার জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের আধিকারিকরা।
স্থানীয় বাসিন্দা রানিবালা মৈত্রর কথায়: ‘‘সারা বছরই পানীয় জলের সমস্যা থাকে। গরম পড়লে সেই সমস্যা আরও তীব্র হয়।” দক্ষিণ ২৪ পরগনার জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগ সূত্রে খবর, এই সব এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করা হয় বজবজের নোদাখালির জল প্রকল্প থেকে। একটি জলাধারের উপরে তিনটি বা চারটি এলাকা নির্ভরশীল। অনেক সময় পাইপ ফেটে যায়। অনেক জায়গায় আবার পানীয় জলের পাইপ ফুটো করে সেই জলকে অন্য কাজে লাগানো হয়। ফলে জলের অপচয়ও হয়। তা ছাড়া গত কয়েক বছরে এই সব এলাকায় বেআইনি জলের সংযোগও বেড়েছে।
জেলার জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তরুণ দাস বলেন, “এই সব এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল ঠিকমতো সরবরাহের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা হচ্ছে বেআইনি জলের সংযোগ। এই বেআইনি সংযোগ বেড়ে যাওয়ায় জলের চাহিদাও বেড়ে গিয়েছে। ফলে জল সরবরাহের ক্ষমতার সঙ্গে চাহিদার পার্থক্য বেড়ে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে।”
|
|
সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সুধন্য রং বলেন, “প্রতিটি পঞ্চায়েত সমিতির বৈঠকে আমরা বাসিন্দাদের এই সমস্যা সমাধানের কথা বলি। কিন্তু আলোচনায়ই সার, গত চার বছরে সমস্যা সমাধানের কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি।”
সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তার পাশে পানীয় জলের কল থাকলেও গ্রামের ভিতরে এখনও অনেক জায়গায় জলের লাইন পৌঁছয়নি। সেই সব জায়াগায় গভীর নলকূপ দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হলেও তা ঠিকমতো হয়নি। কারণ, এলাকাটি আর্সেনিক প্রবণ। এ ছাড়া, অর্থের অভাবে পানীয় জলের পাইপলাইন ঠিকঠাক রক্ষণাবেক্ষণও করা যাচ্ছে না।
সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাধিপতি তৃণমূলের ভাস্কর চক্রবর্তী বলেন, “এই এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এলাকায় জলাধারের সংখ্যা না বাড়লে এই সমস্যা সহজে সমাধান হওয়ার নয়।”
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|