পূর্ব কলকাতা
বিধাননগর
বেহাল বাসস্ট্যান্ড
থা ছিল করুণাময়ীতে আধুনিক মানের বাসস্ট্যান্ড গড়ে তোলা হবে। প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। স্বল্প বৃষ্টিতেই অবস্থা বেহাল। অভিযোগ, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের ন্যূনতম ব্যবস্থাটুকুও নেই।
তবে করুণাময়ী ব্যতিক্রম নয়, বিধাননগরের অধিকাংশ বাসস্ট্যান্ডেরই একই দশা। এই বাসস্ট্যান্ডগুলির পরিকাঠামো নিয়ে যাত্রী থেকে পরিবহণকর্মীদের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। বাসস্ট্যান্ডগুলির দেখভালের দায়িত্ব নগরোন্নয়ন দফতরের। নগরোন্নয়ন দফতর অবশ্য বাসস্ট্যান্ডগুলির সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে স্বল্প দূরত্ব এবং দূরপাল্লার সরকারি-বেসরকারি বাস ছাড়ে। অসংখ্য যাত্রী এই বাসস্ট্যান্ড ব্যবহার করেন। তাঁদের অভিযোগ, পরিকাঠামোর বেহাল দশা। সমস্যা দীর্ঘ দিনের, কিন্তু প্রশাসন উদাসীন। কর্মসূত্রে বিধাননগরে রোজ যাতায়াত করেন বারাসতের বাসিন্দা গৌতম ঘোষ।
তিনি বলেন, “পরিকল্পিত উপনগরী, অথচ সে শহরে প্রধান বাসস্ট্যান্ডটি দীর্ঘ দিন ধরে এমন অবস্থায় পড়েআছে। এক দিক, কার্যত গণপ্রস্রাবাগারে পরিণত হয়েছে। রয়েছে ঝুপড়ি দোকান। বাসস্ট্যান্ডের মধ্যে বড় বড় গর্ত। অল্প বৃষ্টিতেই অনেকটা জায়গা জুড়ে জল জমে যায়। জলে-কাদায় চলাচল করা বিপজ্জনক। তা ছাড়া আলোর অভাবও রয়েছে।” বিধাননগরবাসী তুহিন ঘোষাল বলেন, “দ্রুত শৌচাগার, পর্যাপ্ত আলো ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।”
নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর, বিধানসভা নির্বাচনের আগে ওই বাসস্ট্যান্ডের সংস্কার শুরু হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন ও পরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ চলায় তা বন্ধ হয়ে যায়। বাম আমলে এখানে ফুটপাথ সংস্কার, শৌচালয় তৈরি, যাত্রী প্রতীক্ষালয় তৈরি-সহ নানা পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। দিনে দিনে টার্মিনাসের অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে বলেই অভিযোগ পরিবহণকর্মী ও নিত্যযাত্রীদের।
অন্য বাসস্ট্যান্ডগুলিরও খারাপ অবস্থা। যেমন, ১২ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে জিডি বাসস্ট্যান্ড। কয়েকটি বেসরকারি রুটের বাস এই স্ট্যান্ড থেকে চলাচল করে। পরিবহণকর্মীদের অভিযোগ, স্ট্যান্ডে আলোর অভাব রয়েছে। যাত্রী প্রতীক্ষালয় নেই। যদিও বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ তথা স্থানীয় কাউন্সিলর দেবাশিস জানা বলেন, “পুরসভা ওই বাসস্ট্যান্ডের দেখভাল করছে। সংস্কারের কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই শৌচালয়ের কাজ করা হয়েছে। যাত্রী প্রতীক্ষালয়-সহ অন্যান্য পরিকাঠামোর কাজও করা হবে।”
বিধাননগরের অন্যতম পুরনো লাবণি বাসস্ট্যান্ডের একই দশাও। লাবণি আইল্যান্ড থেকে ই এম বাইপাসমুখী রাস্তার এক দিকে বাস দাঁড়ানোর জায়গা। এক সময় সেখানে একাধিক সরকারি-বেসরকারি বাস দাঁড়াত। সম্প্রতি এই বাসস্ট্যান্ড থেকে বন্ধ থাকা দু’টি সরকারি বাস চালু হয়েছে। কিন্তু শৌচালয়, ক্যান্টিন কিংবা যাত্রী প্রতীক্ষালয় কিছুরই ব্যবস্থা নেই। বিধাননগর পুরকর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের অভিযোগ স্বীকার করেছেন।
অভিযোগের জবাবে পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ডের সংস্কার হবে। বাকি বাসস্ট্যান্ডগুলি মেরামতের জন্য পুরসভাকে বলা হয়েছে।”

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.