|
খুশিতে বাঁচুন |
চাঙ্গা থাকুন গরমে
এই গরমে শরীরচর্চা করতে ইচ্ছা করছে না।
কী করবেন? জানাচ্ছেন চিন্ময় রায়জানাচ্ছেন চিন্ময় রায় |
|
নতুন বছর শুরু হল। মাঝেমধ্যে কালবৈশাখী এলেও পারদ ক্রমেই চড়ছে। শরীরচর্চায় কেমন যেন অনীহা। গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে এসে অল্প রদবদল করলে এই উত্তাপও জয় করা যায়।
আগে জেনে নিন কী কী বদল আনবেন:
• ব্যায়ামের সময় কমিয়ে আনুন। এতে শরীরের জলীয় পদার্থ কম খরচ হবে। ক্লান্তি বোধ কমবে।
• ব্যায়ামের তীব্রতা বাড়িয়ে দিন। আগে জগিং করলে এখন দৌড়ান। এতে অল্প সময়ে অনেক বেশি ক্যালরি খরচ হবে।
• নতুন কিছু করুন। যেমন, হাঁটার বদলে সাইক্লিং, দৌড়ের বদলে সাঁতার।
• এক দিন বাড়ির ভিতরে, অন্য দিন বাড়ির বাইরে ব্যায়াম করুন।
এ বার গরমের কয়েকটি শরীরচর্চার কথা জানাচ্ছি। এগুলি বাড়ির ভিতরে বা বাইরে
করা যায়।
শুরুতেই খান পাঁচ-ছয়েক ডায়নামিক স্ট্রেচ করুন। ডায়নামিক স্ট্রেচ মানে সচল অবস্থায় পেশির প্রসারণ। যেমন, সোজা লাথি ছুড়লে হ্যামস্ট্রিং-এর প্রসারণ হয়। পাশাপাশি লাথি ছুড়লে অ্যাডাক্টর পেশির প্রসারণ হয়। কয়েক বার স্ট্রেচ করলেই দেখবেন ঘাম ঝরছে। এ বার দু’টি সহজ কোর স্টেবিলিটির ব্যায়াম করুন। |
এক পায়ে পুশ আপ |
রেনিগেড রো |
|
এক পায়ে পুশ আপ: এ ক্ষেত্রে পুশ আপ দেওয়ার সময়ে একটি পা শূন্যে থাকবে। মোট ১৬-২০টি পুশ আপ দিন। ৮টি পুশ আপের পরে পা বদলে নিন। বুকের মাংসপেশি, ট্রাইসেপের দারুণ ব্যায়াম।
রেনিগেড রো: একটি টুল নিন। এক হাতে টুলের উপর ভর দিন। অন্য হাতে ডাম্বেল অথবা দু’ লিটারের জলের বোতল নিন। এ বার হাতটিকে সোজা থেকে ভাঁজ করে টেনে পিঠের দিকে নিতে হবে। দু’ হাতেই ১২ বার করে করুন। ব্যায়াম করার সময় পিঠ যেন টানটান থাকে। কোমর আর পিঠ এক সরলরেখায় থাকবে। ট্রাপিজিয়াম, ল্যাটিসিমাস ডর্সি ইত্যাদি পেশি এতে শক্তিশালী হয়। |
এক পায়ে ডায়নামিক ব্রিজ |
ডায়নামিক বার্ডডগ |
|
ডায়নামিক বার্ডডগ: হাঁটু গেড়ে দুই তালুর উপর ভর রেখে উপুড় হোন। এ বার ডান হাত কাঁধ বরাবর সামনে তুলুন। একই সঙ্গে ডান পা সোজা করে কোমর বরাবর তুলুন। হাত-পা একই সঙ্গে ১২ বার নামান ওঠান। এর পরে হাত-পা বদলান। এই ব্যায়ামটি দু’বার করুন। তার পরে দশ সেকেন্ড বিশ্রাম। কোমরের গভীরের মাংসপেশি শক্তিশালী করার দুর্দান্ত ব্যায়াম।
এক পায়ে ডায়নামিক ব্রিজ: মাটিতে শুয়ে দু-পা ভাঁজ করে রাখুন। দু’হাত মাটিতে রাখা। একটা পা এ বার শূন্যে তুলে অন্য পায়ে ভর রেখে কোমর উপর-নীচ করুন। অত্যন্ত ধীরে করুন। কোমরের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন। ১২ বার করার পরে পা বদলান। দু’পায়েই ১২ বার করে মোট দু’ বার করুন। কোমরের গভীরের লাম্বার মাল্টিফিডাস পেশির কার্যক্ষমতা বাড়ানোর আদর্শ ব্যায়াম। গা গরম আর কোর এক্সারসাইজ শেষ করার পরে ২ মিনিট মতো বিশ্রাম নিন।
এ বার শরীরের উপরের চারটি অংশের শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম করুন। পর পর করতে হবে। একটি শেষ হলেই অন্যটি শুরু করতে হবে। যাকে বলে ‘সার্কিট সিস্টেম’। একটি সার্কিট শেষ হলে দু’মিনিট বিশ্রাম নিন। মোট তিন-চারটি সার্কিট শেষ করার চেষ্টা করুন। এক দিন শরীরের উপরের অংশ, অন্য দিন নীচের অংশের শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম করুন। প্রচণ্ড গরমে কার্ডিও ওয়ার্কআউটের থেকে সার্কিট সিস্টেম বেশি কার্যকর। এতে কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমেরও কার্যক্ষমতা বাড়ে। |
উডচপ |
এক পায়ে শোল্ডার প্রেস |
|
এক পায়ে শোল্ডার প্রেস: ব্যায়মটিকে একটু কঠিন করতে এক পায়ে করার চেষ্টা করুন। দু’টি ডাম্বেল অথবা জলের বোতলকে দু’হাতে ধরে কাঁধের পাশ থেকে মাথার উপর তুলুন। উপরে ওঠার সময় দুটো হাত ইংরেজি ‘A’ অক্ষরের মতো এক সঙ্গে গিয়ে মিলবে। এক পায়ে ৬ বার করে অন্য পায়ে ৬ বার করুন। কাঁধের ডেলটয়েড পেশি শক্তিশালী হবে।
উডচপ: হাঁটু সামান্য ভাঁজ করে দাঁড়ান। একটা ডাম্বেল বা বোতল দু’হাতে ধরে ঠিক কাঠ কাটার ভঙ্গিতে শরীরের আড়াআড়ি কাঁধের উপর থেকে বিপরীত হাঁটুতে নামিয়ে আনুন। শরীরের দু’দিকেই মোট ১২ বার করে উডচপ করুন। একে বলে ‘রোটেশনাল কোর’ এক্সারসাইজ। পেটের গভীরের পেশিগুলি এতে
কার্যক্ষম হবে।
এই চারটি ব্যায়াম পর পর করলে একটি সার্কিট হবে। মোট ৩-৪ সার্কিট করার পরে ২-৫ মিনিট বিশ্রাম নিয়েই নীচের কার্ডিও ওয়ার্কআউটে ঢুকে যান। |
ফিগার-৪ হাই-নি |
সাইডওয়েজ মুভ অ্যান্ড সাইড কিক |
|
সাইডওয়েজ মুভ অ্যান্ড সাইড কিক: পা মেপে দশ পা দূরত্বে দু’টি বোতল মার্কিং হিসাবে রাখুন। এ বার যে কোনও এক প্রান্ত থেকে পাশাপাশি যত দ্রুত পারেন সরার চেষ্টা করুন। অন্য প্রান্তে পৌঁছেই পাশাপাশি লাথি ছুড়ুন। এ ভাবে পাশাপাশি সরুন আর দু’ প্রান্তেই লাথি ছুড়ুন। সাধ্য মতো ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট করুন। ১ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ৪-৫ বার এই ড্রিলটা করুন।
ফিটনেস ভাল থাকলে আর একটি কার্ডিও ড্রিল করতে পারেন।
ফিগার-৪ হাই-নি: দু’টি দড়িকে গোল করে এক হাত দূরত্বে সোজাসুজি রাখুন। এ বার হাঁটু দু’টি কোমর সমান তুলে এগোতে থাকুন। হাতও সমানে চলবে। চলার সময় দড়ি দু’টির বাইরে দিয়ে ইংরেজি ‘৪’ অক্ষরের মতো পাক দিন। এ ভাবে ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিটের মতো করুন। ১ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ৩-৪ বার এই ড্রিলটি করুন।
|
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য |
|