|
|
|
|
ঝড়ে ছেঁড়া তারে মৃত্যু বালুরঘাটে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বালুরঘাট |
ঝড়ে ছিঁড়ে পড়ে থাকা তারের ছোঁয়ায় তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হল এক শিশুর। বৃহস্পতিবার সকালে ওই ঘটনার পরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমণ্ডি থানার শিংতোর এলাকায়। পুলিশ জানায়, মৃত শিশুর নাম আসিফ ইসলাম (৪)। এলাকাতেই তার বাড়ি। তিনদিন আগে ঝড়ে তারটি ছিঁড়ে পড়ে। এতদিন কেন সেটি মেরামত করা হয়নি এই প্রশ্ন তুলে বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে এলাকার বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। সকাল ৮টা থেকে কুশমন্ডি-রায়গঞ্জ রাজ্য সড়ক অবরোধও করেন জনতা। খবর পেয়ে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক নারায়ণ মজুমদারের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী পৌঁছয়। এলাকায় যান কুশমন্ডির বিডিও প্রিয়াংকা দেব। বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির স্থানীয় স্টেশন অফিসের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে শাস্তির দাবি জানান বাসিন্দারা। পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে গাফিলতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে সাড়ে তিন ঘন্টা পর বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ উত্তেজনা কমে। স্থানীয় বাসিন্দা সুনীল সরকার, মতিউর রহমান, এক্রামূল শেখ, আবাদুল কালামেরা অভিযোগ করেন, রবিবার রাতের ঝড়ে বিদ্যুতের তারটি ছিঁড়ে পড়ে। এরপর বিদ্যুৎ দফতরে বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি বিভাগের টোল ফ্রি ফোন নম্বরে জানানো হয়েছিল। তাঁরা ব্যবস্থা নিলে শিশুটিকে অকালে প্রাণ হারাতে হত না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা বিদ্যুত বন্টন কোম্পানির ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার অভিজিত চন্দ। |
|
বালুরঘাটে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে শিশুর মৃত্যুর প্রতিবাদে অবরোধ। ছবি: অমিত মোহান্ত |
তিনি বলেন, “তার ছিঁড়ে পড়লে সাধারণত ওই লাইন ‘ডকেট’ হয়ে যায়। শুনেছি এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। তিনদিন ধরে তার ছিঁড়ে পড়েছিল বলে বাসিন্দাদের যে অভিযোগ, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কুশমন্ডির স্টেশন ম্যানেজার অরুণ ঘোষকে তদন্তে এলাকায় পাঠানো হয়েছে।” এসডিপিও বলেন, “মৃত শিশুর বাবার তরফে বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে থানায় গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুনিয়াদপুর-কুশমন্ডি রাজ্য সড়ক থেকে শিংতোর গ্রামের দিকে সরু রাস্তার পাশে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছিল। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে ঘটনাটি ঘটে। শিশুটি খেলার সময় রাস্তার দিকে চলে যায়। সে সময় বাড়ির লোকজন কেউ খেয়াল করেননি। এরপরই ওই তারের সংস্পর্শে এসে তড়িদাহত হয়ে মারা যায় সে। এরপর বাড়ির লোকজন শিশুকে খুঁজতে গিয়ে ওই দৃশ্য দেখে চিৎকার করলে বাসিন্দারা ছুটে যান। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় বিদ্যুৎ দফতর ও থানায়। এলাকায় বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়। দিশাহারা হয়ে পড়েন শিশুর মা মাহমুদা বেগম। শিশুটির বাবা রাজ্জাক হোসেন বলেন, “ছোট্ট ছেলেটা মারা যাওয়ার পর তৎপর হয়ে লাইন বিচ্ছিন্ন করা হল। আগে এটা হলে এই পরিণতি হত না। বাচ্চাকে হারাতাম না। প্রশাসনের কাছে এর বিচার চেয়েছি।” বিডিও বলেন, “ব্লক প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত ওই পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেবে। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।” |
|
|
|
|
|