স্তন ক্যানসারের পিছনে দশ
‘রোগ’, দাবি বিজ্ঞানীদের
কটা-দু’টো নয়, দশ-দশটা কারণ রয়েছে স্তন ক্যানসারের পিছনে। এমনটাই দাবি বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক দলের। ‘নেচার’ পত্রিকায় তাঁদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে।
ব্রিটেন ও কানাডার বেশ কিছু হাসপাতাল থেকে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত প্রায় দু’হাজার মহিলার নমুনা সংগ্রহ করেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা দেখেন, এই রোগের পিছনে প্রায় দশটা কারণ রয়েছে। তার ভিত্তিতেই স্তন ক্যানসারকে দশ ভাগে ভাগ করেন তাঁরা। গবেষকদের দাবি, কে কোন ধরনের স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত, তা চিহ্নিত করে চিকিৎসা শুরু করলে রোগীকে বাঁচানো সহজ হয়ে যাবে। তবে এই তথ্য মেনে চিকিৎসা শুরু করতে এখনও অনেক দেরি বলে জানান তাঁরা।
ঠিক কোন পথে চলেছিল গবেষণা? স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত ওই দু’হাজার মহিলার ক্যানসার কোষের জেনেটিক গঠন খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন বিজ্ঞানীরা। কোন জিনে মিউটেশন (পরিবর্তন) ঘটেছে, কোন জিন কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে, কোন জিন ঠিকমতো কাজ করছে না বা তুলনায় কম করছে এ সবই দেখেন তাঁরা। গবেষকেরা দেখেন, স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পর ওই কোষগুলিতে কোনও না কোনও জিন অস্বাভাবিক আচরণ করা শুরু করেছে। এই কারণগুলিকে মাথায় রেখে ‘ইন্টক্লাস্ট’-১ থেকে ১০ এই দশটি ভাগে স্তন ক্যানসারকে ভাগ করে ফেলেন তাঁরা। জিনের পরিবর্তন একই রকম ঘটেছে, এমন ক্যানসার কোষগুলিকে একটি ভাগে রাখেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, গবেষণায় ধরা পড়েছে, প্রত্যেক রোগিনীর স্তন ক্যানসার ওই ১০টি ভাগের কোনও না কোনও একটিতে পড়ছে।
এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন অধ্যাপক কার্লোস ক্যালডাস। তাঁর দাবি, “স্তন ক্যানসার কোনও একটি রোগ নয়। বরং বলা যায়, দশটা আলাদা রোগ রয়েছে এর আড়ালে।” তাঁর কথায়, “আমাদের গবেষণার ফলে ডাক্তাররা আগে থেকেই বুঝতে পারবেন, ঠিক কোন ধরনের স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন রোগিনী এবং ঠিক কোন ওষুধ তাঁর শরীরে কার্যকরী হবে। ফলে চিকিৎসা পদ্ধতি এখনকার তুলনায় অনেক সহজ হয়ে যাবে।” যেমন তাঁর ব্যাখ্যা, স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত কোনও মহিলার শরীরে যদি ‘হার২-রিসেপটর’ নামের প্রোটিন থাকে, তা হলে তাঁর ক্যানসারের ভয়াবহতা অনেকটাই বেশি। সে ক্ষেত্রে ‘হার২’-কে কব্জা করতে ‘হারসেপটিন’ ওষুধ দেওয়া হবে ওই রোগিনীকে।
অধ্যাপক ক্যালডাস জানান, স্তন ক্যানসারের ৭০ শতাংশ রোগিনীই হরমোন থেরাপিতে সাড়া দেন। তাঁর কথায়, “কেউ একেবারে সুস্থ হয়ে যান। আবার অনেকের শারীরিক অবস্থা আগের থেকে আরও খারাপ হয়। এই কারণে স্তন ক্যানসারের শ্রেণিবিভাগের প্রয়োজন রয়েছে।” গোটা গবেষণার পিছনে রয়েছেন এক ভারতীয় বিজ্ঞানীও। হরপাল সিংহ। গবেষণার কাজে অর্থ ঢেলেছেন তিনিই। হরপালের কথায়, “স্তন ক্যানসার নিয়ে ভাবনাচিন্তাই বদলে দেবে এই গবেষণা। চিকিৎসা পদ্ধতিতেও আমূল পরিবর্তন আসতে চলেছে কয়েক বছরে।’’
একই মত কলকাতার ক্যানসার শল্যচিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায়েরও। তিনি বলেন, “রোগের কারণ চিহ্নিত করা গেলে চিকিৎসাও সহজ হয়। বিজ্ঞানীদের বড় অংশ এখন মনে করেন, ক্যানসার জেনেটিক। সে ক্ষেত্রে কোনও মহিলার স্তন ক্যানসারের পিছনে কোন জিন দায়ী ও কোন ওষুধ কাজ করবে, তা জানা গেলে ভবিষ্যতে এই রোগের চিকিৎসা সত্যিই সহজ হয়ে যাব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.