ময়না-তদন্তের কাজে বিলম্বের অভিযোগে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন মৃত বধূর পরিজন ও পাড়ার লোকেরা। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ আড়াল করার জন্যই ময়না-তদন্তে অযথা দেরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা। উত্তেজিত জনতা হাসপাতালের সহকারি সুপার নুরুল ইসলামের অফিসঘরটি লক্ষ করে ব্যাপক ইট-পাথর ছোড়েন বলে অভিযোগ। সহকারি সুপারের অফিসঘরের জানলার কাঁচ ভেঙে যায়। ইটের ঘায়ে ঘরের ভিতরের আসবাবপত্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জখম হন হাসপাতালের দুই কর্মী। এক চিকিৎসকের মোটর সাইকেল ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়। যদিও লাঠিপেটার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। তবে ওই ঘটনায় হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীরা রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
বুধবার সকালে ঝাড়গ্রাম শহরের পুরনো ঝাড়গ্রাম এলাকার শ্বশুরবাড়িতে মলিনা আখতার নামে এক তরুণী বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। ওই ঘর থেকে একটি মৃত্যুকালীন লিখিত জবানবন্দিও উদ্ধার হয় বলে পুলিশ জানায়। মলিনার বাপের বাড়ি শহরেরই নৃপেনপল্লিতে। শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই মলিনাকে খুন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মৃতার পরিজনেরা। পুলিশ অবশ্য কাউকে গ্রেফতার করেনি। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ তখনও ময়না-তদন্ত শুরু না-হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতার আত্মীয়-পরিজনেরা। |
হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। ওই সময় ভারপ্রাপ্ত সুপার সুদীপ কাঁড়ার হাসপাতালে ছিলেন না। কিছুক্ষণ পরে সুপার হাসপাতালে ফিরতেই তাঁর দিকে তেড়ে যান বিক্ষোভকারীরা। কোনও মতে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে পড়েন সুদীপবাবু। বিক্ষোভকারীরা সহকারি সুপারের অফিস ঘর লক্ষ করে যথেচ্ছ ইটপাথর ছুড়তে থাকেন। ময়না-তদন্তের ঘরের সামনে তুমুল বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাঠিপেটা করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। গোলমাল থামার পরে দুপুর দু’টো নাগাদ পুলিশি প্রহরায় ময়না-তদন্তের কাজ শুরু হয়। ময়না-তদন্তের পর মৃতদেহ পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অসিত বিশ্বাস বলেন, “মৃতার পরিজনেরা সকালবেলা হাসপাতালে এসে ময়না-তদন্ত কখন হবে তা জেনে গিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও বেশ কিছু লোকজন ময়না-তদন্ত ঘরের সামনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেন। ইট-পাথর ছুড়ে সহকারি সুপারের অফিস ঘরটির ক্ষতি করা হয়।” অসিতবাবু বলেন, “কোনও অভিযোগ থাকলেই হাসপাতালে ভাঙচুর চালানোটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ময়না-তদন্তে বিলম্বের অভিযোগ ভিত্তিহীন।” |