যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য বাড়াতে রাজ্য ও জাতীয় সড়কে নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর -অন্তর ‘হাইওয়ে মোটেল’-এর ধাঁচে বিশেষ ধরনের যাত্রী আবাস তৈরির সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। সেখানে থাকবে রাত্রিবাসের সুবিধে -সহ যাত্রী আবাস, শৌচালয়, রেস্তোরাঁ ও যাত্রী -ছাউনি। বৃহস্পতিবার মহাকরণে এ কথা জানিয়ে রাজ্যের আবাসনমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “গত ৩৪ বছর ধরে এ রাজ্যে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের কথা তো ভাবাই হয়নি। দীর্ঘ রাস্তায় সফররত যাত্রীদের বিশেষত মহিলাদের অনেক সময়েই বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সে কথা মাথায় রেখেই এ ধরনের ‘ফোর ইন ওয়ান’ যাত্রী আবাস তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
পর্যটনের পরিকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ ধরনের ‘হাইওয়ে মোটেল’ তৈরির ভাবনা খুবই প্রয়োজনীয়। বিদেশে এ ধরনের ভাবনা অনেক আগে থেকেই জনপ্রিয়। এমনকী, এ দেশে পর্যটনে এগিয়ে থাকা অনেক রাজ্যেই ইতিমধ্যে বড় বড় সড়কের ধারে এ ধরনের যাত্রী আবাস তৈরির চল রয়েছে। এত দিন ধরে পর্যটনকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য এ রাজ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের কথা ঘোষণা হলেও কখনওই যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য বাড়ানোর উপরে কখনওই নজর দেওয়া হয়নি।
আবাসন দফতর সূত্রে খবর, যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবেই যাত্রী আবাসের কথা ভাবা হয়েছে। যাত্রীরা রাস্তায় অনেক অসুবিধায় পড়েন। রাতে হঠাৎ করে গাড়ি খারাপ হেলে যাত্রীরা অসহায় অবস্থায় পড়ে যান। |
রাতবিরেতে খাবার এবং থাকার ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান যাত্রীরা। এ সব অসুবিধের কথা মাথায় রেখেই রাজ্যের বড় বড় রাস্তাগুলিতে ৩০ -৪০ কিলোমিটার অন্তর অন্তর এ ধরনের যাত্রী আবাস তৈরি করা হবে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, যে সব জাতীয় সড়ক রাজ্যের পূর্ত দফতর রক্ষণাবেক্ষণ করে এবং সব রাজ্য সড়কে এ ধরনের যাত্রী আবাস তৈরি হবে। প্রাথমিক ভাবে কলকাতা বাদ দিয়ে বাকি ১৮টি জেলাতেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে ৬৫টি যাত্রী আবাস তৈরির কথা ভাবা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। এক -একেকটি যাত্রী আবাস তৈরিতে খরচ হবে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। প্রায় ১২ কাঠা এলাকা জুড়ে তৈরি হবে প্রতিটি যাত্রী আবাস। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করবে আবাসন এবং পূর্ত দফতর যৌথ ভাবে। মন্ত্রী জানান, এই প্রকল্পের জন্য জমি দেবে পূর্ত দফতর। তৈরির দায়িত্বেও থাকবে পূর্ত দফতর। তবে অর্থ দেবে আবাসন দফতর। অরূপবাবু জানিয়েছেন, আবাসন দফতর থেকে মোট ৪০ কোটি টাকা এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।
সড়কের পাশে এ ধরনের যাত্রী আবাস তৈরির জন্য জমি পেতে কোনও অসুবিধে নেই বলে দাবি করেছেন রাজ্যের পূর্ত দফতরের সচিব অজিত রঞ্জন বর্ধন। তিনি বলেন, “বেশির ভাগ সড়কের পাশেই পূর্ত দফতরের জমি আছে। সেখানেই ১০ -১২ কাঠা করে জমি নিয়ে এই যাত্রী আবাস তৈরি করা হবে।”
তিনি জানান, আবাসগুলি তৈরি হয়ে গেলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণ এবং চালানোর জন্য লিজ দেবে সরকার। প্রতি বছর সেই লিজ পুনর্নবীকরণ করা হবে বলে জানান তিনি। অরূপবাবুর দাবি, এই প্রকল্পের ফলে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য যেমন বাড়বে তেমনই স্থানীয় যুবক -যুবতীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হবে। |