ইমাম -ভাতা নয়
সংখ্যালঘুদের চাকরি চান সিদ্দিকুল্লা
ম্প্রতি মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সরকারের প্রশংসাই করেছিলেন। কিন্তু ইমাম -ভাতা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার বিরোধিতা করলেন জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দের সভাপতি সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। বৃহস্পতিবার বর্ধমানের উৎসব ময়দানে দলীয় সভায় তিনি বলেন, “রাজ্যে প্রায় ৬৭ হাজার মসজিদ রয়েছে। সেগুলির কোনটিতে একজন, কোনওটিতে দু’জন করে ইমাম রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এত কমজনকে (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী, ৩০ হাজার ইমামকে ভাতা দেওয়া হবে ) ভাতা দিতে গেলে তো আমাদের মধ্যেই মারামারি বেধে যাবে ! তা ছাড়া, মাসে আড়াই হাজার টাকা ভাতা মানে দৈনিক ৮০ টাকা। তার অর্থ, একবার নমাজ পড়িয়ে ইমাম পাবেন মাত্র ১৬ টাকা ! এই টাকায় কী কারও গ্রাসাচ্ছাদন হয়? মমতা শুনে রাখুন, সংখ্যালঘুরা ভাতা চান না। তাঁদের চাকরি প্রয়োজন। রাজ্যের তিন কোটি সংখ্যালঘুর জন্যই চাকরি দরকার।” সংখ্যালঘুদের চাকরির দাবিতে তাঁরা আগামী দিনে আন্দোলনে নামবেন বলেও জানিয়েছেন সিদ্দিকুল্লা।
শাসক শিবির সূত্রের খবর, আগামী পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখেই মমতা ইমামদের জন্য ওই ভাতার কথা ঘোষণা করেছিলেন। যে সিদ্ধান্তের বিরোধিতা প্রধান বিরোধীদল সিপিএম বা সরকারের জোটশরিক কংগ্রেসও প্রকাশ্যে করতে পারেনি। রাজ্য বিজেপি অবশ্য ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। কিন্তু তা ‘রাজনৈতিক’ বিরোধিতা। সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে এই প্রথম ওই সিদ্ধান্তের ‘বিরোধী স্বর’ শোনা গেল।
বর্ধমানে সিদ্দিকুল্লা। ছবি : উদিত সিংহ
সিদ্দিকুল্লা বলেছেন, “মসজিদ রাজনীতির আওতায় পড়ে না। মুখ্যমন্ত্রী মসজিদের ইমামদের টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করার পর দেখা গিয়েছে, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সমর্থকেরা উল্লাসের সঙ্গে বলে বেড়াচ্ছেন, সংখ্যালঘুদের টাকা দিয়েছে সরকার। মসজিদকে রাজনীতির বাইরে রাখতেই ইমামদের এই ভাতা নেওয়া উচিত নয়। ভাতা শেষ পর্যন্ত দেওয়া হলে তা দেওয়া হবে ওই বিশেষ রাজনৈতিক দলের পেটোয়া কিছু ইমামকে। এই ভাতা পাওয়া না -পাওয়া নিয়ে তো ভাইয়ে -ভাইয়ে মারামারি লেগে যাবে ! এই অবস্থা কিছুতেই সৃষ্টি হতে দেওয়া যায় না।” সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য আবুল কাসেম আরও একধাপ এগিয়ে বলেন, “মাত্র আড়াই হাজার টাকা ভাতা দিয়ে কি মুখ্যমন্ত্রী ইমামদের নিজেদের মধ্যে মারপিটের দিকে ঠেলে দিতে চান? না -হলে তিনি মুষ্টিমেয় ক’জন ইমামকে ভাতা দেওয়ার কথা বলতেন না।”
সিদ্দিকুল্লা বলেন, “রাজ্যের মুসলিম সমাজ চিরদিনই বঞ্চিত। কী বাম আমলে, কী নতুন সরকারের আমল। বঞ্চনা চলছেই। এখনও ওয়াকফ সম্পত্তি দখল চলছে। দখল করে -রাখা ওয়াকফ সম্পত্তি ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে বামেরা উচ্চবাচ্য করত না। নতুন সরকারও ব্যাপারে চুপ। আমরা কিন্তু চুপ করে বসে থাকতে পারব না। গোটা রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিয়ে আন্দোলনে নামব।” বর্ধমানের উৎসব ময়দানের সভায় ভিড় হয়েছিল ভালই। সিদ্দিকুল্লা সেই ভিড়ের মতামত চেয়ে বলেন, “আপনারা বলুন, ইমামদের ওই আড়াই হাজার টাকা ভাতা নেওয়া উচিত হবে কি না? যদি আপনারা মনে করেন ভাতা নেওয়া উচিত নয়, আমরা ব্যাপারে রাজ্যের সংখ্যালঘু ভাইদের ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনে নামব।” উপস্থিত জনতা কোরাসে বলে, “না ! কোনওমতেই ওই ভাতা নেওয়া যাবে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.