দারুণ দহনে শান্তিজলের আশা আপাতত নেই। উল্টে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া আরও অস্বস্তিকর হয়ে উঠতে পারে বলে বৃহস্পতিবার পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহওয়া দফতর।
অস্বস্তি বাড়তে পারে কী ভাবে?
আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, বাংলাদেশের ঘূর্ণাবর্ত শক্তিশালী হওয়ায় বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প ঢোকার পরিমাণ বাড়বে। তাতে মেঘ তৈরি হবে ঠিকই। মেঘাচ্ছন্ন আকাশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও কমবে কিছুটা। কিন্তু বৃষ্টির সম্ভাবনা আপাতত নেই। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যে-ভাবে ৪০-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে গিয়েছিল, তাতে তাপপ্রবাহের আশঙ্কা ছিল। সেই আশঙ্কার কথা জানিয়েও দেওয়া হয়েছিল পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলির প্রশাসনিক কর্তাদের। আকাশে অতিরিক্ত জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি সেই আশঙ্কা দূর করবে বলেই মনে করছেন আবহবিদেরা। কিন্তু এতে আর্দ্রতা বাড়বে অত্যধিক মাত্রায়। তাতে বায়ুপ্রবাহের তীব্রতা কমবে। ঘাম শুকোতে দেরি হবে। বাড়বে অস্বস্তি। এবং সেই অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিতে হাজির বিদ্যুৎ-বিভ্রাটও।
বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার তাপমাত্রা বেড়ে হয়েছে ৪১.৯ ডিগ্রি। বীরভূমের শ্রীনিকেতনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.৫ ডিগ্রি। বর্ধমানের শিল্পাঞ্চল, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়াতেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি ঘোরাফেরা করেছে। ওই সব জেলায় আর এক ডিগ্রি তাপমাত্রা বাড়লেই তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হত। কিন্তু সেই পরিস্থিতি থেকে আপাতত রেহাই মিলেছে বলে জানান আবহবিদেরা। আকাশে যথেষ্ট মেঘ থাকায় এ দিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমেছে। বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৬ ডিগ্রি। এ দিন তা কমে হয়েছে ৩৬.৫ ডিগ্রি।
এ দিন কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বুধবারের তুলনায় এক ডিগ্রি কমেছে। কিন্তু অস্বস্তি বেড়েছে বহু গুণ। কারণ বেড়ে গিয়েছে অস্বস্তিসূচক। আজ, শুক্রবার তা আরও বাড়বে বলে জানাচ্ছেন আবহবিদেরা। এই অস্বস্তির সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ-বিভ্রাটে নাজেহাল মহানগরীর মানুষ। বুধবার কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় বিদ্যুৎ ছিল না। বৃহস্পতিবারেও তা-ই। তবে সিইএসসি জানাচ্ছে, উৎপাদনে সমস্যা নেই। বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহজনিত সমস্যার জন্যই এই অবস্থা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ-বিভ্রাটে মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চল অন্ধকারে ডুবে যায়। বিদ্যুৎ চলে যায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ-সহ বিভিন্ন হাসপাতালেও। এক সময় মেট্রো রেলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। |