আত্মীয়েরা তাঁকে জেল থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাননি। তাই পুরুলিয়া মহিলা সংশোধনগার কর্তৃপক্ষই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড শেষে আরতি রায় সামন্তকে পুলিশ দিয়ে তালড্যাংরার মহদা গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন। প্রায় ১৮ বছর হাজতবাসের পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি শ্বশুরের ভিটেতে পা রাখতেই পড়শিরা ভিড় জমালেন। বুক ভরে শ্বাস নিয়ে আরতিদেবীও বললেন, “বাড়ি ফিরে ভাল লাগছে।”
১৯৯৩ সালের ডিসেম্বরের এক রাতে নিজের চার সন্তানকে খুন করার পর থেকে জেলেই আরতিদেবীর দিন-রাত কেটেছে। ১৯৯৭ সালে আদালত তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেয়। অবশেষে রাজ্যপাল ৪০ জন বন্দির সঙ্গে আরতিদেবীকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন। |
কিন্তু সন্তান ও স্বামী হারানো আরতিদেবীকে কেউ ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আসেননি। পুরুলিয়ার মহিলা সংশোধনাগারের সুপার সুদীপ বসু বলেন, “ওঁর আত্মীয়রা নিয়ে যেতে অস্বীকার করায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পুলিশি প্রহরায় আরতিদেবীকে তাঁর গ্রামে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।” জেলে কাজ করার জন্য সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ তাঁর হাতে কিছু টাকা তুলে দেন। সংশোধনাগারের এক আধিকারিক মনে করিয়ে দেন, “আরতিমাসি ঠিক সময়ে খাওয়া-দাওয়া করবে। মনে করে ওষুধ খাবে।”
সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁকে দূর সম্পর্কের দেওরের কাছে পাঠানো হয়েছে। বুধবার পুরুলিয়ায় আরতিদেবীর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে নিজের অক্ষমতার কথা জানিয়েছিলেন ভিক্ষাছেলে শম্ভু মুখোপাধ্যায়। এ দিন তিনি দেখা করে যান। তাঁর সঙ্গে তপন চক্রবর্তী, অদ্বৈত্য চক্রবর্তী বলেন, “আরতিদেবী যাতে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন, আমরা সে ব্যাপারে নজর রাখব।” |