অভিযোগ পাওয়ার পরে কখনও তাঁরা ‘নিষ্ক্রিয়’, কখনও ‘অতিসক্রিয়’। কিন্তু প্রতিটি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগের পরেই কার্যত ‘চাপে’ পড়ে শেষে ‘সক্রিয়’ হতে হচ্ছে পুলিশকে।
যেমন ঘটল বৃহস্পতিবার, বারুইপুরে অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী ও তাঁর মেয়েকে মারধর ও শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত গৌতম পালকে ঘটনার চার দিন পরে গ্রেফতারের ঘটনায়। যদিও এ ক্ষেত্রে পুলিশের প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল কমই। গৌতমবাবু থানায় ‘আত্মসমর্পণ’ করতে গেলে পুলিশ তাঁকে ধরে। ফলে অভিযোগ, এখানেও গৌতমবাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে নিতান্তই দায়সারা ভাবে, ঠিক যে ভাবে নেটরঙ্গ-কাণ্ডে অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রের উপরে হামলায় অভিযুক্তদের ধরা হয়েছিল ‘নিয়মরক্ষার্থে’। নববর্ষের রাতে বাইপাসে এক তরুণীর শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্তকেও প্রথমে থানা ছেড়ে দেওয়ার পর ‘চাপে’ পড়ে গ্রেফতার করে পুলিশ। জগদ্দলে শিল্প-ধর্মঘটের দিন মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তদেরও হাইকোর্টের চাপে পড়ে ধরা হয়। |
পুলিশ জানায়, এ দিন সকালে গৌতমবাবুর কয়েক জন আইনজীবী তাঁকে নিয়ে বারুইপুর থানায় যান। থানাতেই তাঁকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। বিচারক তাঁকে তিন দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ই-মেলে ব্যঙ্গচিত্র পাঠানোর অভিযোগে অম্বিকেশবাবুকে রাতভর থানায় আটকে রাখা হলেও তাঁকে মারধরে অভিযুক্তদের ‘চাপে’ পড়ে কার্যত একই ভাবে আদালতে পেশ করে পুলিশ। গৌতমবাবুকে যে ‘চাপে’ পড়ে ধরা হয়েছে, তা জানান তাঁর আইনজীবী হাফিজুর রহমান। তাঁর মতে, পুলিশ সংবাদমাধ্যমের চাপেই তাঁর মক্কেলকে গ্রেফতার করেছে। তাঁর দাবি, চলতি বছরের গোড়ায় প্রথমে বাড়ি দখলের অভিযোগ দায়ের করেন গৌতমবাবুই। গত রবিবার অপরেশবাবু ও তাঁর মেয়ে গৌতমবাবুর স্ত্রী ও বোনকে আগে মারধর করেন বলেও তাঁর অভিযোগ। অপরেশবাবু ও তাঁর মেয়ের অভিযোগ ছিল, রবিবার গৌতমবাবু ও এলাকার একদল যুবক তাঁদের রাস্তায় ফেলে মারধর করে। জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলে ওই তরুণীর শ্লীলতাহানিও করা হয়। ঘটনার অনেক পরে পুলিশ আসে। সব কথা জানালেও পুলিশ অপরেশবাবু ও তাঁর মেয়ের অভিযোগ নথিভুক্ত করেনি। উল্টে যাওয়ার সময়ে তারা গৌতমবাবুকে ‘গৌতমদা, আসি’ বলে চলে যায়। পরে জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে মঙ্গলবার বারুইপুর থানা অপরেশবাবু ও তাঁর মেয়ের অভিযোগ নিলেও গ্রেফতার করা হয়নি কাউকে। অভিযোগ, এ নিয়ে শোরগোল হওয়ায় শেষমেশ দায়সারা ভাবে অভিযুক্ত গৌতম পালকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, গৌতমবাবুর স্ত্রী মধুমিতা ঘোষ পালের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ তাঁকে এখনও গ্রেফতার করেনি। ওই মহিলাকে এ দিন বিচারকের এজলাসে বসে থাকতেও দেখা গিয়েছে। |