তিন লোকালে তাণ্ডব
মারল যারা, তাদের ছেড়ে পুলিশ ধরল আক্রান্ত যাত্রীদেরই
বার সেই একই অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। যারা টিটাগড়ে ট্রেন আটকে যাত্রীদের বেধড়ক মারধর করল, ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও তাদের ধরতে পারল না পুলিশ। উল্টে যাঁরা মার খেলেন, পুলিশ গ্রেফতার করল তাঁদেরই তিন জনকে! গত কয়েক দিন ধরে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় পুলিশের বিরুদ্ধে বারবার যে-অভিযোগ উঠেছে, বুধবার তারই পুনরাবৃত্তি হল ব্যারাকপুর স্টেশনে।
বুধবার টিটাগড়ে তিনটি লোকাল ট্রেনের যে-সব যাত্রী আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদেরই তিন জনকে ধরা হল কেন? পুলিশের যুক্তি, ওই তিন জন ট্রেনে তাণ্ডবের প্রতিবাদে ব্যারাকপুরে বিক্ষোভ-অবরোধে যোগ দিয়েছিলেন। জিআরপি থানায় হামলা চালানোরও অভিযোগ আছে তাঁদের বিরুদ্ধে।
কিন্তু যারা টিটাগড় স্টেশনে ক্ষুর, লাঠি, লোহার রড, চপার নিয়ে ট্রেনযাত্রীদের উপরে হামলা চালাল, তাদের ধরা হল না কেন? রেল পুলিশের এক কর্তার যুক্তি, “আমাদের লোকবল কম। তবে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। খোঁজখবর নেওয়ার পরে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা হবে।’’
ভুক্তভোগী যাত্রীদের প্রশ্ন, তত দিনে ওই অভিযুক্তেরা কি নিজেদের বাড়িতে পুলিশের অপেক্ষায় বসে থাকবে? এর কোনও উত্তর অবশ্য দিতে পারেনি রেল পুলিশ। শিয়ালদহের ভারপ্রাপ্ত রেল পুলিশ সুপার চন্দ্রকান্ত মহাপাত্র শুধু বলেন, “তদন্ত চলছে। টিটাগড়ের ঘটনায় অভিযুক্তেরা শীঘ্রই ধরা পড়বে।”
বুধবার রাতে শিয়ালদহ-কল্যাণী লোকালে এক যুবকের সঙ্গে কয়েক জন যাত্রীর বচসা হয়েছিল। ওই যুবকই মোবাইলে ফোন করে তার বন্ধুদের টিটাগড় স্টেশনে আসতে বলে। ট্রেনটি টিটাগড়ে এলে ওই যুবক নেমে যায়। তত ক্ষণে কল্যাণী লোকাল টিটাগড় স্টেশন ছেড়ে দিয়েছে। ওই সময় টিটাগড় স্টেশনে পরপর ঢোকে নৈহাটি, ব্যারাকপুর ও শান্তিপুর লোকাল। ওই যুবকের সঙ্গীরা তিনটি লোকালের যাত্রীদের উপরে চড়াও হয়।
যাত্রীদের অভিযোগ, স্টেশনে আরপিএফ থাকা সত্ত্বেও তারা যাত্রীদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে তাণ্ডব চলে টিটাগড়ে। ব্যারাকপুর পৌঁছে ওই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেন আহত যাত্রীরা। পরে সেই বিক্ষোভে যোগ দেন আরও বহু যাত্রী। অভিযোগ, ব্যারাকপুরে বিক্ষোভের শুরুতে পুলিশ এবং আরপিএফ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে বিক্ষোভ ক্রমশ বাড়তে থাকে। পরে ঘটনাস্থলে আসে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, তখন পরিস্থিতি কার্যত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। বিক্ষোভকারীরা সাদা পোশাকের এক পুলিশকর্তাকে তাড়া করে। বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে বাঁচতে এক পুলিশকর্মীকে নিজের উর্দি খুলে ভিড়ে মিশে যেতেও দেখা যায়। এর মধ্যে ব্যারাকপুরের এক রেলকর্মী এসে পুলিশকর্তাদের বলতে থাকেন, ‘‘স্যার, কয়েক জন কেবিনে ঢুকে টেবিলের উপরে নাচানাচি করছে। সব সিগন্যাল লাল করে দিয়েছে।’’ এই কথা শুনে পুলিশকর্তারা বলেন, ‘যান, নিজের ঘরে যান।’ এর পরে আসে র্যাফ। তারাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.