|
|
|
|
অর্থ আত্মসাতে অভিযুক্ত স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক |
নিজস্ব সংবাদদাতা, এগরা |
শ্রেণিকক্ষ, রান্নাঘর তৈরি এবং কম্পিউটার কেনার টাকার একাংশ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠল স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদকের বিরুদ্ধে। ভগবানপুর-১ ব্লকের কাকরা বালিকা বিদ্যালয়ের (জুনিয়র) অভিযুক্ত সম্পাদক তথা স্থানীয় সিপিএম কর্মী পিনাকীরঞ্জন দাসের বিরুদ্ধে এফআইআর করার দাবিতে বৃহস্পতিবার স্কুলে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল নেতা-সমর্থকরা। তাঁদের দাবি মেনে এ দিন থানায় অভিযোগও দায়ের করেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা। পিনাকীবাবু অভিযোগ অস্বীকার করলেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নিরূপমা দিণ্ডা (ভুঁইয়া) বলেন, “সম্পাদকের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের তথ্য-প্রমাণ আছে। এলাকার মানুষ এফআইআর করার দাবিতে স্কুলে তালা দিয়েছেন। কিন্তু স্কুল খোলা রাখা জরুরি। তাই থানায় যেতে হল। প্রশাসনই তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।”
কাকরা বালিকা বিদ্যালয়ে বরাবরই ক্ষমতায় রয়েছে সিপিএম। মাস আটেক আগে স্কুল ভোটেও অভিভাবক প্রতিনিধি হিসাবে সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীরাই জেতেন। তবে, স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য প্রীতিরঞ্জন গিরি, তৃণমূল কর্মী বাবলু পাত্রও নতুন পরিচালন সমিতিতে রয়েছে। বাবলুবাবু আবার পরিচালন সমিতির সহ-সভাপতি। গত দু’বছরে সর্বশিক্ষা, অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ তৈরি, মিড-ডে মিলের রান্নাঘর তৈরি, বই-পোশাক কেনা, বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রভৃতি খাতে ১৭ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা পেয়েছে স্কুল। বাবলু পাত্র, প্রীতিরঞ্জন গিরিদের অভিযোগ, “স্কুলের ঘর তৈরির সঙ্গে সঙ্গে সম্পাদক নিজের বাড়ি তৈরি করেছেন। স্কুলের জন্য বরাদ্দ সরঞ্জাম নিজের বাড়ির কাজে ব্যবহার করেছেন। স্কুলের কম্পিউটার কেনার জন্য এক বছর আগে ৫০ হাজার তুলে নিলেও কম্পিউটার কেনা হয়নি।” স্কুলেরই তিন জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকার কাছ থেকে মোট দেড় লক্ষ টাকা স্কুলের নাম করে নিয়ে পিনাকীবাবু আত্মসাৎ করছেন বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে তাঁরা সম্পাদকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানালে বুধবার স্কুলে আসেন পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি হারুন রশিদ। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগের স্বপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তবুও স্কুলের কথা ভেবে আমি বলেছিলাম সম্পাদক অর্থ ফেরত দিয়ে মীমাংসা করে নিক। কিন্তু স্থানীয় মানুষ সম্পাদকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে চান।” ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নিরূপমাদেবী বলেন, “সম্পাদক আমাকে এড়িয়ে টাকা খরচ করতেন। পরে নিজের মতো করে হিসাব দিতেন। আমি বিশ্বাসও করতাম। সম্প্রতি আর্থিক অনিয়ম ধরে ফেলেন বাবলু পাত্র। কিন্তু সম্পাদক এখনও তা স্বীকার করছেন না।” অভিযুক্ত পিনাকীবাবুর বক্তব্য, “স্কুল ও বাড়ির কাজ একসঙ্গে হচ্ছে বলে মালপত্র প্রায়ই একসঙ্গে আনায় ওরা মিথ্যে সন্দেহ করছে।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “পরিচালন সমিতি দখল করার লক্ষ্যে তৃণমূল স্কুলে চাপ তৈরি করছে। প্রধান শিক্ষিকা তৃণমূলের চাপে অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্কুলে অর্থদান করে আজীবন সদস্য হয়েছি। তা-ও এই অভিযোগ মানা যায় না।” |
|
|
|
|
|