মায়ের পর মেয়ের সম্মানহানির হুমকি, ফের অভিযুক্ত তৃণমূল
কাঁথির উত্তর কানাইদিঘির বামসমর্থক মহিলার কিশোরী কন্যার ‘চরম সম্মানহানি’র হুমকি দিল তৃণমূল। গ্রামের সালিশিসভায় ওই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধরের ঘটনা নিয়ে পুলিশে অভিযোগ করাতেই এই হুমকি বলে দাবি কিশোরীর। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি বয়ে এসে তৃণমূলের লোকজন তাকে এই হুমকি দেয় বলে ওই পরিবারের অভিযোগ। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তবে মায়ের সম্ভ্রমহানি নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন যে তরুণ, তিনিই এ বার বোনকে দেওয়া হুমকি নিয়ে ফের পুলিশের শরণাপন্ন হয়েছেন। তিনি অবশ্য গ্রামে ঢুকতে সাহস পাচ্ছেন না। বোনের কাছ থেকে এই দিন ফোনে ওই হুমকির কথা শুনে ওই তরুণ সোজা চলে যান কাঁথির এসডিপিও-র কাছে। পুরো ঘটনা নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সিপিএমের মহিলা সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি’ও কাঁথির মহকুমাশাসক সুমিত গুপ্ত এবং এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ বসুর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে।
পুলিশ অবশ্য কাউকেই রাত পর্যন্ত গ্রেফতার করেনি। হুমকির মধ্যে চরম উৎকণ্ঠায় বৃদ্ধা ঠাকুমাকে নিয়ে একা ঘর সামলাচ্ছে ওই কিশোরী। এসডিপিও-র অবশ্য আশ্বাস, “তদন্ত চলছে। যথাযথ ব্যবস্থাই নেওয়া হবে। ওই গ্রামে তল্লাশি চলছে। কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি মহিলার নিরাপত্তায় মহিলা পুলিশকর্মীও মোতায়েন করা হয়েছে।”
বাম-সমর্থক ওই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধরের ঘটনা বা তাঁর মেয়েকে হুমকির কোনও অভিযোগই অবশ্য মানতে চননি তৃণমূল নেতৃত্ব। তাদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা রটনা’ হচ্ছে দাবি করে এ দিন সকালে উত্তর কানাইদিঘি গ্রামে ‘প্রতিবাদ-মিছিল’ও করে তৃণমূল। নেতৃত্ব দেন কাঁথি-৩ ব্লক তৃণমুল সভাপতি সমরেশ দাস, ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি সুভাষ মাইতি। মিছিল থেকে এসে সুভাষই তাঁকে ‘চরম সম্মানহানি’র হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ কিশোরীর।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, চার দিক সুনসান। একটি ক্লাবঘরের সামনে কয়েক জন ছেলেকে অবশ্য ক্যারাম খেলতে দেখা গেল। তাদের বক্তব্য, পয়লা বৈশাখ ওই ক্লাবে ক্যারাম খেলার সময়েই বাম-সমর্থক ওই মহিলার বড় ছেলে মদ্যপ অবস্থায় এসে তাদের মারধর করে। তার পরেই গ্রাম ছেড়ে পালায়। রবিবার গ্রামের মন্দিরে সালিশি সভা ডাকা হয়। অভিযোগ, ওই সালিশি সভাতেই মহিলাকে তৃণমূলে যোগ দিতে এবং এক লাখ টাকা জরিমানা দিতে বলা হয়, রাজি না হওয়ায় বিবস্ত্র করে মারধর করা হয়। ওই ঘটনায় এবং এ দিন সকালে হুমকি দেওয়ায় অন্যতম অভিযুক্ত ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি সুভাষ মাইতির অবশ্য দাবি, “ক্লাবের গণ্ডগোল নিয়েই সালিশি সভা হয়েছিল। ওই মহিলাকে বলা হয়েছিল, আপনার বড় ছেলে এবং স্বামীকে পাঁচ দিনের মধ্যে হাজির করুন। তাঁদের উপস্থিতিতেই আলোচনা হবে। ওই মহিলা রাজি হননি। পর দিন শুনি উনি নাকি বিষ খেয়েছেন।” সুভাষ অবশ্য মেনেছেন, “ওঁর বড় ছেলের দৌরাত্ম্যের প্রতিবাদে ওই মহিলাকে কেউ কেউ গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার কথা বলেছিল।” এ দিন সকালে মহিলার বাড়ি গিয়ে ‘হুমকি’ দেওয়ার কথাও অস্বীকার করেছেন সুভাষ। তবে ব্লক তৃণমূল সভাপতি সমরেশ দাস মেনেছেন, এ দিন তাঁরা ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। তবে তাঁর দাবি, “ওদের নির্ভয়ে থাকার কথাই বলতে যাই। হুমকি দেওয়া হয়নি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.