এক কথায় বুধবার রাতের ম্যাচটাকে বলা যায়-খেলল বার্সা, জিতল চেলসি।
আগে থেকে ঠিক করে রাখা স্ট্র্যাটেজি এত সুন্দর পুরো ম্যাচে মেনে চলা খুব একটা দেখা যায় না। বুধবার রাতে চেলসির ১-০ জয়ে রক্ষণাত্মক স্ট্র্যাটেজির প্রতিফলন দেখলাম। তবে বার্সেলোনায় মেসিদের হোম ম্যাচে চেলসির এই স্ট্র্যাটেজি চলবে না।
বরং আমার তো মনে হয়, মেসি-জাভি-ইনিয়েস্তারা নৌ কাম্পে আরও ভয়ঙ্কর ভাবে ঝাঁপাবে। এমনিতে বার্সেলোনার কাজটা সহজ নয়। অন্তত দু’গোলের ব্যবধানে জিততে হবে। তাই বুধবারের মতো হঠাৎ প্রতি আক্রমণে যাতে গোল না খেয়ে যায় সে দিকে সজাগ থাকতে হবে পুওল-মাসচেরানোদের। অবশ্য লন্ডনে গোটা ম্যাচে পুওলদের ডিফেন্সের ভুল বলতে ছিল ওই এক বারই।
শেষ ১৫ ম্যাচে ১৪ জয়। লিওনেল মেসির দুরন্ত ফর্ম। বার্সেলোনার প্রচুর পাসিং। সব কিছু রুখে দিয়ে চমকে দিয়েছে চেলসি। তার সঙ্গে আর একটা কথাও মানতে হবে। ভাগ্য মেসিদের সঙ্গে ছিল না। আলেক্সি সাঞ্চেজের চিপ একটু বেশি উঁচু হয়ে বারে লাগল। শেষ দিকে পেদ্রোর শট পোস্টে। পের চেক তিনটে দুর্দান্ত সেভ করল। |
চেলসির কোচিংয়ের দায়িত্বে থাকা রবের্তো দি’মাত্তিও-র স্ট্র্যাটেজিই ছিল জমাট রক্ষণ তৈরি করা। সুযোগ এলে প্রতি আক্রমণ। জন টেরি-গ্যারি কাহিলদের দক্ষতায় সেই স্ট্র্যাটেজি পুরোপুরি সফল। আড়াই মিনিটে পের চেকের লম্বা গোল কিক ঠিক মতো ধরতে পারলে তখনই হয়তো এগিয়ে যেত লন্ডনের ক্লাব। কিন্তু তার পর থেকে খেলা পুরোটাই হল চেলসির বক্সের সামনে। আর গোটা ম্যাচে একটা ছবিই বারবার দেখা গেল। জাভি, ইনিয়েস্তা, মেসিরা নিজেদের মধ্যে পাস খেলে বল বাড়াচ্ছিল সাঞ্চেজ বা ফাব্রেগাসের জন্য। যা আটকে দিচ্ছিল টেরি-কাহিলরা। তাদের টপকে গেলে গোলের নীচে চেক তো ছিলই। মেসি বা পুওলের যে হেড চেক বাঁচাল অতটা পরীক্ষার সামনে পড়তেই হল না বার্সা গোলকিপার ভালদেসকে।
প্রতি আক্রমণে উঠে বারবার অফসাইডের ফাঁদে পড়ছিল দ্রোগবা। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে ট্র্যাপটা করতে পারেনি পুওলরা। ল্যাম্পার্ড মাঝমাঠ থেকে রামিরেসকে বলটা বাড়িয়েছিল। রামিরেস বাঁ দিক দিয়ে উঠে দ্রোগবাকে যে বলটা বাড়াল সেটা একেবারে নির্ভুল। শুধু প্রতি আক্রমণ নির্ভর খেললে কতটা নির্ভুল হতে হয় তা বোঝাল রামিরেস। আর দ্রোগবাও বলটা রাখল ঠিক জায়গায়। এই একটা ভুল বাদ দিলে বার্সা-ডিফেন্স কিন্তু নিখুঁত ছিল। পুওল-মাসচেরানোরা এই ফর্ম ধরে রাখলে দ্রোগবাদের খুব সুবিধা হবে না নৌ কাম্পে।
শুধু টেরি, কাহিল বা অ্যাশলে কোল নয়, বার্সাকে আটকাতে সারাক্ষণ ডিফেন্স করে গেল মিকেল, ল্যাম্পার্ডরাও। সাধারণত বক্সের সামনে জাভিরা প্রচুর গ্রাউন্ড পাস তাড়াতাড়ি ভিতরে ঢুকে পড়ে। চেলসি পায়ের জঙ্গল তৈরি করে রাখায় জাভি-ইনিয়েস্তারা ফাইনাল পাসটা মাটি ঘেঁষে বাড়াতে পারছিল না। যত বার সেটা করতে সফল হয়েছে ততবারই গোলের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর চেক দুর্দান্ত বাঁচিয়েছে। এই একই খেলা প্রতিদিন চেলসি ঠিকঠাক খেলবে এটা ভাবা ভুল। লন্ডনে এই অসম্ভব রক্ষণাত্মক স্ট্র্যাটেজির বিরুদ্ধেও প্রচুর গোলের সুযোগ তৈরি করেছে মেসিরা। বার্সেলোনায় আরও করবে।
স্পেনের দুটো দলই প্রথম ম্যাচটা হেরে বিপদে রয়েছে। রিয়াল মাদ্রিদ অ্যাওয়ে ম্যাচে ১ গোল করে রাখায় সামান্য সুবিধে তাদের। ১-০ জিতলেই চলবে। বার্সেলোনার দরকার ২ গোল। আবার বলছি, কোনও সমস্যা হবে না। |