চাকরি পাওয়ার মামলা জিততেই তিন কুড়ি পার
চাকরির যোগ্যতা প্রমাণ করার আইনি লড়াই লড়তেই কেটে গেল ২৬ বছর। তার পর এল জয়! কিন্তু সেই জয় আদৌ কোনও কাজে আসবে কি? চাকরি করার বয়সই তো নেই আর!
এক জন-দু’জন নয়, ৩১ জনের লড়াই! কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে নিজেদের চাকরি পাওয়ার যোগ্য বলে প্রমাণ করতে পেরেছেন ওঁরা। কিন্তু যত দিনে এটা ‘প্রমাণ’ করা গেল, তত দিনে ওঁদের মধ্যে চার জনের বয়স ৬০ পেরিয়েছে। ২৭ জনের বয়স ৫৬ থেকে ৫৯। ফলে আদালতে এই ‘জয়’ বেদনার না আনন্দের, তা নিয়ে সংশয় রয়েই যাচ্ছে ওঁদের।
২৬ বছর ধরে আইনি লড়াইয়ের পরে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি শুক্লা কবীরের ডিভিশন বেঞ্চ এক সপ্তাহের মধ্যে এই ৩১ জনকে প্রাথমিক শিক্ষকের পদে নিয়োগ করার নির্দেশ দিল। কিন্তু এই নির্দেশ তাঁদের মুখে হাসি ফোটাতে পারেনি। মানিকলাল মাইতির জন্ম যেমন ১৯৫০ সালে। মলিনা বাগ বা চিত্তরঞ্জন বেরা-র জন্ম ১৯৫১ সালে। এঁরা হাওড়ার অধিবাসী। আর চাকরিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ নেই।
বাকিদের বয়সও ৫৬-৫৯-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
১৯৮৬ সালে এঁরা প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন। ইন্টারভিউয়ের পরে নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশিত হয়। দেখা যায়, তালিকায় এই ৩১ জনের নাম নেই। অথচ এমন অনেক প্রার্থীর নাম রয়েছে, যাঁদের বয়স ১৮ বছর হয়নি। রাজ্য সরকারের পক্ষে আইনজীবী কমলেশ ভট্টাচার্য বলেন, এর পরেই ওই ৩১ জন কলকাতা হাইকোর্টে হাওড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ও রাজ্য শিক্ষা দফতরের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তৎকালীন রাজ্য সরকার মামলার বিরোধিতা করে। এক দিকে মামলা চলতে থাকে, অন্য দিকে তালিকা অনুযায়ী নির্বাচিতেরা শিক্ষক পদে নিযুক্ত হন।
আশির দশক শেষ হয়ে নব্বইয়ের দশক শুরু হয়। হাইকোর্টের এক সদস্যের বেঞ্চের রায় সরকারের বিরুদ্ধে গেলে সরকার ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে। মামলা চলতেই থাকে। হাইকোর্ট পেরিয়ে সুপ্রিম কোর্ট। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট আবেদনকারীদের পক্ষে মত দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টকেই মামলাটির নিষ্পত্তি করতে বলে। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে সেই রায় বেরোল।
আবেদনকারীদের অনেকেই এ দিন হাইকোর্টে হাজির ছিলেন। আর এক সপ্তাহ পরে তাঁদের কেউ কেউ চাকরি পাবেন। এক বছরের মাথায় অবসর নেবেন কেউ কেউ। ১৯৮৬ সালের ওই তালিকা থেকে যাঁরা চাকরিতে বহাল হয়েছিলেন, তাঁদেরও কেউ কেউ অবসর নিয়ে নিয়েছেন ইতিমধ্যে। বিচার হল ঠিকই! কিন্তু যত দিনে হল, তখন তার সুফল ভোগ করার সময় আর কই?
বার্ধক্যের দরজায় পা রাখা ওঁদের মুখ দেখে আনন্দ বা দুঃখ কিছুই বোঝার উপায় নেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.