বিমানের কর্মীদের আচরণ-প্রশিক্ষণ দেবেন প্রতিবন্ধীরা
‘সেরিব্রাল পালসি’ বা আংশিক পক্ষাঘাতের কারণে আর কোনও জিজা ঘোষকে যাতে অপমানিত হতে না-হয়, সেই জন্য প্রতিটি বিমান সংস্থার কর্মী-অফিসারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আর সেই প্রশিক্ষণ দেবেন জিজার মতো সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত এবং শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী অন্য মানুষজন। সেই প্রশিক্ষণে বলা হবে, তাঁদের মতো লড়াই চালিয়ে যাওয়া মানুষের সাধারণত কী ধরনের লক্ষণ থাকে। ওই সব লক্ষণ নিয়ে বিমানে উঠলে তা কোনও ভাবেই সহযাত্রীদের বিরক্তির কারণ হবে না। বাধা সৃষ্টি করবে না বিমান চলাচলেও।
বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)-এর নির্দেশে বাধ্য হয়েই এই প্রশিক্ষণে রাজি হয়েছে বিমান সংস্থাগুলি। ডিজিসিএ-র ডিরেক্টর ভরত ভূষণ বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে ফোনে বলেন, “যে-সব যাত্রীর শারীরিক সমস্যা আছে, তাঁদের জন্য নিজস্ব ওয়েবসাইটে আলাদা ভাবে তথ্য রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সব বিমান সংস্থাকে।” তিনি জানান, মূলত বিমান সংস্থার নিচু তলার অফিসার ও কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। যথাসম্ভব বেশি কর্মী-অফিসারের কাছে পৌঁছে দিতে হবে সেই প্রশিক্ষণ। বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক বৈঠকে জিজা জানান, ৫ মে মুম্বইয়ে জেট বিমান সংস্থার প্রশিক্ষণ রয়েছে।
জিজা শহর থেকে শহরে ঘুরে বেড়ান মানুষকে সচেতন করতে। ১৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতা থেকে স্পাইসজেটের বিমানে মুম্বই যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ‘অসুস্থ’ বলে নামিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। অপমানিত জিজা বাড়ি ফিরে যান। এই ঘটনায় দেশ জুড়ে হইচই পড়ে যায়। বিমান সংস্থাগুলির কর্তাদের নিয়ে মার্চেই দিল্লিতে বৈঠকে বসে ডিজিসিএ। সেখানে জিজাও ছিলেন। ঠিক হয়, প্রতিটি বিমান সংস্থাকে এই বিষয়ে আলাদা প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ফেব্রুয়ারির ঘটনার পরে ১ এপ্রিল আবার কলকাতা থেকে বিমান ধরতে যান জিজা। ইন্ডিগোর উড়ানে দিল্লি যাচ্ছিলেন তিনি। জিজা বলেন, “ভীষণ ভয় করছিল। মনে হচ্ছিল, আবার যদি নামিয়ে দেয়!” তত ক্ষণে অবশ্য ডিজিসিএ-র বার্তা পৌঁছে গিয়েছে বিমান সংস্থাগুলির কাছে।
কিন্তু জিজার সঙ্গে যা হয়েছে, সেই ঘটনার পরেও ছবিটা বিশেষ বদলায়নি। পিঠটা ধনুকের মতো বাঁকা সায়মদেব মুখোপাধ্যায়ের। তিনিও এ দিন প্রেস ক্লাবে জিজার পাশে বসে ছিলেন। সায়মদেব জানান, গত ১২ এপ্রিল শ্রীনগর থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ানে দিল্লি ফিরে দেখেন, তাঁর জন্য নির্দিষ্ট হুইলচেয়ার তখনও আসেনি। তাঁর পিঠের এমনই অবস্থা যে, অন্য কোনও হুইলচেয়ারে বসলে অসম্ভব যন্ত্রণা হয়। তিনি বলেন, “আমার জন্য নির্দিষ্ট বিশেষ ধরনের চেয়ারটা আনতে অনুরোধ করেছিলাম এয়ার ইন্ডিয়াকে। কিন্তু ওরা অপেক্ষা না-করেই জোর করে আমাকে সাধারণ হুইলচেয়ারে বসিয়ে নিয়ে যায়!”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.