কলকাতার পরে এ বার কচ্ছ। পশ্চিমবঙ্গের সীমানা ছাড়িয়ে আজ থেকে গুজরাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে দিল আরপি-সঞ্জীব গোয়েনকা গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর মালিকানাধীন সিইএসসি-ই কলকাতা ও শহরতলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। নরেন্দ্র মোদীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজ্যের শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েনকা গুজরাতে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছেন। তাপবিদ্যুতের বাইরে অপ্রচলিত শক্তি ক্ষেত্রে এই প্রথম পা রাখলেন সঞ্জীব। আরপিজি-গোষ্ঠীর বাইরে সঞ্জীবের নিজস্ব সংস্থা তৈরির পরে তাঁর এটাই প্রথম গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ।
সিঙ্গুর থেকে গুজরাতের সানন্দে টাটা গোষ্ঠীর ন্যানো প্রকল্প সরিয়ে নিয়ে যাওয়া এখন ইতিহাস। কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে অব্যাহত থাকছে সঞ্জীব গোয়েনকার কর্মকাণ্ড। সিইএসসি তো রয়েইছে, এর পাশাপাশি হলদিয়ায় তাঁদের ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলছে। একই উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলছে মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরেও। নয়ডাতেও অনেক আগেই বিদ্যুৎ প্রকল্পে নেমে পড়েছেন তিনি। |
আজ সৌরবিদ্যুৎ পার্কটির উদ্বোধন করে নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, আরপি-সঞ্জীব গোয়েনকা গোষ্ঠী-সহ ২১টি দেশি-বিদেশি সংস্থা ওই পার্কে বিনিয়োগ করেছে। এটি এশিয়ার মধ্যে সবথেকে বড় সৌরবিদ্যুৎ পার্ক বলেই তাঁর সরকারের দাবি। গুজরাতের তিন-চারটি জেলা জুড়ে বিস্তৃত এই সৌরবিদ্যুৎ পার্কের মোট এলাকা তিন হাজার একর। মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৬০০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে আরপি-সঞ্জীব গোয়েনকা গোষ্ঠীর বিনিয়োগের পরিমাণ ১১০ কোটি টাকা। তাঁরা কাজ করেছেন কচ্ছে। অত্যাধুনিক পরিবেশবান্ধব ‘ফোটোভোল্টাইক’ প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে গড়া এই প্রকল্পে সঞ্জীবের সংস্থা উৎপাদন করবে ৯ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ। গুজরাতের সরকারি বিদ্যুৎ পরিবহণ নিগমই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে নিকটবর্তী সাব-স্টেশনে সৌরবিদ্যুৎ নিয়ে যাবে। আবার রাজ্য সরকারেরই বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম দীঘর্মেয়াদি চুক্তির ভিত্তিতে সেই বিদ্যুৎ কিনে নেবে।
গত জুলাইয়ে নিজস্ব সংস্থা তৈরির পর সঞ্জীব গোয়েনকা এখন দ্রুত ব্যবসার সম্প্রসারণ ঘটাতে চাইছেন। এই মুহূর্তে বিদ্যুৎ ছাড়াও পরিকাঠামো, খুচরো ব্যবসা, কার্বন ব্ল্যাক ও বিনোদন ক্ষেত্রে তাঁর বিনিয়োগ রয়েছে। এক দিকে যেমন মহারাষ্ট্র ও হলদিয়ায় দু’টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির কাজ চলছে, তেমনই অপ্রচলিত শক্তি ক্ষেত্রেও আরও বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। সঞ্জীবের বক্তব্য, “অপ্রচলিত ক্ষেত্রে এই প্রথম আমরা পা রাখলাম। ভবিষ্যতে পশ্চিম ভারতে আরও বায়ু ও সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। উত্তর-পূর্বে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলারও চেষ্টা চলছে।” বঞ্চিত হবে না কলকাতা-হাওড়াও। সিইএসসি এখন ১২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। আগামী ছ’বছরের মধ্যে তা সাত হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বাড়ানোর কথা রয়েছে। যার জন্য মোট ৩৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে বলে সিইএসসি-র তরফে জানানো হয়েছে। |