মিড-ডে মিল বন্ধ রাজনগরের স্কুলে
স্কুলে মিড-ডে রান্না করানোর ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ‘ত্রুটি’ ছিল। এই নিয়ে প্রতিবাদ করায় দিন পনেরো ধরে নিজের ইচ্ছানুসারে মিড-ডে মিল বন্ধ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠল রাজনগরের সীতাশাল মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের টিচার ইনচার্জের বিরুদ্ধে।
তৃণমূলের রাজনগর ব্লক সভাপতি সৌমিত্র সিংহের দাবি, “২০০৫ সালে স্থাপিত ওই স্কুলে মিড-ডে মিল চালু হয় ২০০৮ সালে। তখন থেকেই এ্যাডহক পরিচালন সমিতি (একবারও পরিচালন সমিতির নির্বাচন হয়নি) ও টিচার-ইনচার্জ নিজেদের পছন্দের ব্যবসাদারের কাছ থেকে মিড-ডে রান্নার জন্য কাঁচামাল কিনে আসছেন এবং একটি মাত্র স্বনির্ভর দলকে দিয়ে রান্না করাচ্ছেন। শুধু তাই নয় খাবারের মানও খারাপ। কেন অন্যান্য স্বনির্ভর দল ও ব্যবসায়ীরা এই সুযোগ পাবে না। তার প্রতিবাদ জানিয়ে গত ৩ এপ্রিল আমারা একটি স্মারকলিপি দিয়েছিলাম টিচার-ইনচার্জ বিমল ওঝাকে।”
তাঁর অভিযোগ, “তার পরের দিন থেকেই হঠাৎ মিড-ডে মিল বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। এ কদিন রান্না বন্ধ থাকায় বুধবার আমরা আবার টিচার-ইনচার্জকে অবিলম্বে রান্না চালু করতে বলেছিলাম। ঠিক হয়েছিল বৃহস্পতিবার থেকে রান্না শুরু হবে। কিন্তু এ দিনও রান্না শুরু না করায় বিষয়টি মৌখিক ভাবে রাজনগরের বিডিওকে জানানো হয়েছে।”
বিডিও প্রভাংশু হালদার অবশ্য বলেন, “মিড-ডে রান্না করানোর ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ত্রুটি ছিল। প্রতিবাদে স্মারকলিপি পড়ায় ভয় পেয়ে রান্না বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।”
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে এখানে মোট ২৩২ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। তাদের একটা বড় অংশই তপসিলি জাতি-উপজাতিভুক্ত এবং গরিব। ফলে মিড-ডে মিল বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছে তারা। এই নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে অভিভাবকদের মধ্যেও। নিতাই দাস, সুচিত্রা মণ্ডলরা বললেন, “এ ভাবে মিড-ডে মিল বন্ধ করে ঠিক করেনি স্কুল। ওই খাবারটুকুর উপরেই আমাদের পরিবারের ছেলে-মেয়েরা অনেকাংশে নির্ভরশীল।” রান্না বন্ধ থাকায় অসুবিধা যে হচ্ছে তা স্বীকার করেও পরিস্থিতির জন্য পরোক্ষে তৃণমূলের কাঁধেই দায় চাপিয়েছেন টিচার-ইনচার্জ বিমল ওঝা। তিনি বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা একটি পদ্ধতি পরিবর্তন করতে চাইলেই হয় না। সেই জন্য কিছুটা সময়ের প্রয়োজন। তা ছাড়া মিড-ডে মিল পরিচালিত হয় স্কুল পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত অনুসারেই। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না করে কিছু করতে পারিনি।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “যেখান থেকে রান্নার কাঁচামাল নেওয়া হত তৃণমূলের স্মারকলিপি দেওয়ার পরে সেও আর কাঁচামাল দিতে রাজি হয়নি। কিন্তু তৃণমূল কোনও কথা না শুনে আমাকে হেনস্থা করেছে।”
তিনি জানিয়েছেন, আজ শুক্রবার স্কুল পরিচালন সমিতি-সহ সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানা যা সিদ্ধান্ত হবে সেই অনুযায়ী কাজ করা হবে। অন্য দিকে, স্কুল পরিচালন সমিতির এক সদস্য তাপস সাধ বলেন, “যখন মিড-ডে মিল চালু হয়েছিল তখন একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীই রান্না করতে রাজি ছিল। বাকি যে স্বনির্ভর গোষ্ঠী বর্তমানে রান্না করতে ইচ্ছুক তাদেরকে আবেদন করতে হবে। তার পরে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কার্যকর করা হবে।” তাঁর দাবি, “কিন্তু সে কথা না শুনে তৃণমূল অরাজকতা সৃষ্টি করতে চাইছে।” যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তাদের দাবি, নিজেদের দোষ ঢাকতে আজুহাত খোঁজা হচ্ছে।
বিডিও বলেন, “কোনও ভাবেই যাতে মিড-ডে মিল বন্ধ না হয় সে ব্যাপারে টিচার-ইনচার্জকে নির্দেশ দিয়েছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.