|
|
|
|
অনুদান নেই, হতাশ চাষিরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বালুরঘাট |
সরকারি অনুদান না-পেয়ে হতাশ দক্ষিণ দিনাজপুরে চাষিরা ফুল চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। দু’বছর থেকে তাঁদের অনুদান বন্ধ। তার উপরে এলাকায় নেই পাইকারি বাজার। ফুল চাষ করে রোজগারের সম্ভাবনা শুরুতেই ধাক্কা খাওয়ায় জটিলতা আরও বেড়েছে। জেলা উদ্যান পালন আধিকারিক জয়দীপ বর্মন সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি। তিনি বলেন, “ফুল চাষে উৎসাহ বাড়াতে চাষিদের এককালীন আর্থিক অনুদান দেওয়া হত। গত এক বছর থেকে সেটা বন্ধ। দ্রুত অনুদান চালু করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।” জেলা উদ্যান পালন দফতর সূত্রের জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগেও ওই জেলায় গোলাপ ও গাঁদা মিলিয়ে প্রায় ৭০ বিঘা জমিতে ফুল চাষ হত। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২০ বিঘায়। কিন্তু জেলায় ফুলের চাহিদা কমেনি। বরং বেড়েছে। ফুল চাষ কমে যাওয়ায় বাজারে স্থানীয় ফুলের যোগান কমেছে। নিরুপায় হয়ে খুচরো বিক্রেতারা কলকাতা সহ বাইরের জেলা থেকে ফুল আনছেন। এ জন্য পরিবহণ খরচ বেড়ে যাওয়ায় ফুলের দামও বেড়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর, বংশীহারি ও কুশমন্ডি ব্লকে মূলত ফুল চাষ হয়। শীতে গাঁদা ও গোলাপ চাষে জোর দেন চাষিরা। অন্য সময় টগর, বেল, রজনীগন্ধা ফুলের চাষ হয়। উদ্যান পালন দফতরের বিশেষজ্ঞরা জানান, বিঘা প্রতি জমিতে গাঁদা ফুল চাষে প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ করে লাভ হয় প্রায় ১২ হাজার টাকা। গোলাপ চাষে প্রতি বিঘাতে সাড়ে ৯ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রথম বছর উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে ফুল বিক্রি করে লাভ হয় প্রায় ১৬ হাজার টাকা। পরের বছর থেকে লাভের পরিমাণ বাড়তে থাকে। ফুল চাষে উৎসাহ দিতে উদ্যান পালন দফতর থেকে চাষিদের গোলাপ চাষে এক হেক্টরে জমি পিছু ৩৫ হাজার টাকা এবং গাঁদা ফুল চাষে ১২ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়। দু’বছর আগে জেলায় ১১ জন ফুল চাষি ওই অনুদান পায়। বালুরঘাটের পাগলীগঞ্জের ফুলচাষি অলোক পাল বলেন, “এর পরে আর অনুদান আসেনি। ফুল চাষ লাভজনক হলেও ঝুঁকি বেশি। রোগ পোকার আক্রমণ ও পরিচর্যায় একটু ঘাটতি হলে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। তাই সরকারি তরফে সাহায্য পাওয়া গেলে আমাদের ভরসা বাড়ে।” অলোকবাবুর মত গঙ্গারামপুরের ফুল চাষি মানস মন্ডল বলেন, “ফুল বিক্রি নিয়ে সমস্যা বেশি। নির্দিষ্ট বাজার না-থাকায় দাম মিলছে না। ওই কারণে অনেকেই ফুল চাষ ছেড়ে দিচ্ছে।” উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজারের সমস্যা মেটাতে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ব্লক স্তরে দু’টি করে ‘কিসান মান্ডি’ গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। সেখানে ফুল-ফল-সবজির পাইকারি বাজার গড়ে তুলে চাষিদের ফসল বিক্রিতে নিশ্চয়তা দেওয়া হবে। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক বিপ্লব মিত্র বলেন, “দক্ষিণ দিনাজপুরের ৮ টি ব্লকে ১৬ টি কিসান মান্ডি গড়ার উদ্যোগ চলছে। এটা হলে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফুল সহ অন্যান্য ফসল চাষিরা সরাসরি মান্ডিতে বিক্রির সুযোগ পাবেন। পরে মান্ডি থেকে পাইকারেরা ফুল কিনে বাজারে বিক্রির সুযোগ পাবে। |
|
|
|
|
|