|
|
|
|
পুর উন্নয়নে ‘বঞ্চনা’ |
কমিশনারকে স্মারকলিপি কাউন্সিলরদের একাংশের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের শিলিগুড়ি পুরসভার বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুললেন পুর কমিশনারকে স্মারকলিপি দিলেন কংগ্রেস কাউন্সিলরদেরই একাংশ। বুধবার পুর কমিশনার কাজলকান্তি সাহার সঙ্গে দেখা করে ওয়ার্ডে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ না হওয়ার জন্য অভিযোগ তুলে স্মারকলিপি দেন তাঁরা। কংগ্রেসের ওই কাউন্সিলররা হলেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাজল চন্দ, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রুমা নাথ, ২২ নম্বরের পম্পা দাস এবং ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের শিখা রায়। পরে তাঁদের সঙ্গে এ দিন যোগ দেন ৫ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস নেত্রী শর্মিলা শর্মাও। শর্মিলাদেবী বাদে বাকিরা মঙ্গলবার রাতেই নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন। এ দিন স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের অভিযোগ, ওয়ার্ডের উন্নয়ন কাজ ঠিক মতো হচ্ছে না। বারবার বলা হলেও কাজের কাজ হয়নি। উল্টে বাসিন্দাদের কাছে প্রতিনিয়তই পুর পরিষেবার বেহাল দশা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। সে কারণে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁরা পুরসভায় ক্ষমতায় থাকলেও স্মারকলিপি দিতে বাধ্য হচ্ছেন। মেয়র তথা কংগ্রেস নেত্রী গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “পুরসভায় উন্নয়নের কাজ হচ্ছে। কোনও ওয়ার্ড বঞ্চিত নয়। তার পরেও কেন আমাদের কাউন্সিলরদের একাংশ আন্দোলন করছেন তা ওনারাই জানেন।” কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকার অবশ্য কংগ্রেস কাউন্সিলরদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, “কাউন্সিলরদের সঙ্গে আমার কথা হয়নি। তবে তাঁরা প্রত্যেকে নিজের এলাকার বাসিন্দাদের কাছে দায়বদ্ধ। এলাকায় উন্নয়ন না হলে তাঁরা বাসিন্দাদের হয়ে সেই দাবি জানাতেই পারেন।” |
|
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বোর্ড মিটিং চলছে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
তৃণমূলের পক্ষ থেকে কংগ্রেস কাউন্সলিরদের ওই ভূমিকা সমালোচনা করা হয়েছে। পূর্ত দফতরের মেয়র পারিষদ তথা তৃণমূলের দার্জিলিং জেলার সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ পাল বলেন, “ওই অভিযোগ ঠিক নয়। তৃণমূল ২০১১ সালের জুলাই মাসে শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ডে যোগদান করেছে। সে সময় থেকে বাম, ডান-সহ সমস্ত ওয়ার্ডেই সমান নজর দিয়ে উন্নয়ন কাজ হচ্ছে।”
এদিন পুরসভায় গিয়ে কংগ্রেসের ওই কাউন্সিলররা তাঁদের ওয়ার্ডে উন্নয়ন কাজ হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অভিযোগ, ওয়ার্ডে রাস্তা সংস্কার, নিকাশি-সহ উন্নয়নের প্রচুর পরিমাণ কাজ আটকে রয়েছে। নতুন বেশ কিছু কাজ এখনও টেন্ডার করা হয়নি। বেছে বেছে কিছু ওয়ার্ডের কাজ করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকী তৃণমূল কাউন্সিলরদের কয়েকটি ওয়ার্ডে বেছে বেছে বিনা টেন্ডারে বেশ কয়েকটি কাজ হয়েছে বলেও তাঁরা সরব হন। অভিযোগ, ওয়ার্ডে সাফাইয়ের গাড়িগুলি ভেঙে গেলেও সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের নজর নেই। তাতে পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলছেন। বস্তির উন্নয়ন প্রকল্পে বাসিন্দাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাঁদের সময় মতো বাড়ি তৈরি করা দেওয়া হচ্ছে না। পুরসভার ‘বিল্ডিং সেলে’র তরফে অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে অভিযান করা হলে অন্য বিভাগের মেয়র পারিষদরা সেখানে সামিল হচ্ছেন। অথচ তাঁদের বিভাগের কাজ ঠিক মতো দেখছেন না। তাঁরা ব্লিডিং সেলের মেয়র পারিষদের কাজে হস্তক্ষেপ করছেন। কাজলবাবু বলেন, “শহরের কোনও উন্নয়নের কাজ হচ্ছে না। মেয়র পারিষদের অধিকাংশ কোনও কাজ করছেন না। নিজেদের বিভাগের কাজ ছেড়ে তাঁরা বিল্ডিং সেলের কাজে হস্তক্ষেপ করছেন। অথচ তাঁদের দফতরের কাজকর্ম ঠিক মতো হচ্ছে না বলে বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।” |
|
|
|
|
|