|
|
|
|
টি-টোয়েন্টিতেও ক্রিকেটীয় শট
খেলে জেতাচ্ছে অভিজ্ঞরা
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় |
|
|
মঙ্গলবার আইপিএলে যে দুটো খেলা হল তাতে মনে হল, রানের সীমা হতে পারে যেন আকাশই! দুটো ম্যাচেই দুশোর মতো রান তোলা দল যখন জেতার অপেক্ষায়, তখন সেই রান তাড়া করায় বিপক্ষরা সফল হয়ে গেলে তো গোটা হিসেবনিকেশ আর পরিকল্পনাই নতুন করে ভাবা দরকার হয়ে পড়ে! এ বারের আইপিএল প্রত্যেক দিন নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে। এবং আমি নিশ্চিত প্রতিটা টিমের ম্যানেজমেন্টকে আবার ড্রইংবোর্ডে ফেরত যেতে হবে। পুণে আরসিবি-কে ম্যাচের একেবারে শেষের দিকটা ছাড়া বেশির ভাগ সময় ব্যাকফুটে রেখেছিল। কিন্তু শেষের ওই সামান্য সময়টুকুই আমাদের হাত থেকে একটা ন্যায্য জয় ছিনিয়ে নিয়ে গেল, যে জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল।
রাজস্থান ঘরের মাঠে ১৯৬ তাড়া করে খুব ভাল একটা জয় পেল। খুব ভাল লাগল দেখে যে, অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানরা টি-টোয়েন্টিতেও একেবারে ক্রিকেটীয় শট খেলে দলের জয়ের রাস্তা গড়ল। আমি সব সময় বিশ্বাস করি, তুমি যদি ক্রিকেটের সর্বোচ্চ স্তরে মাস্টার হও, তা হলে খেলাটার যে কোনও ফর্ম্যাটেই ব্যাটিংয়ে প্রাথমিক ব্যাকরণ অনুসরণ করেই নিজের সাফল্যের পতাকা ওড়াতে পারবে।
অন্য ম্যাচটায় আমরাও ক্রিকেটের প্রাথমিক ব্যাকরণই যথাসাধ্য অনুসরণ করেছিলাম, এমন একটা উইকেটে যেখানে ব্যাটসম্যানদের জন্য সব আর বোলারদের জন্য সামান্যই কিছু রাখা ছিল। পুণে ব্যাটে খুব ভালই করেছিল, তবে আমরা আরও কিছু রান বোর্ডে তুলতে পারতাম যদি গোটাকয়েক নির্দিষ্ট শট ফিল্ডারের হাতে ক্যাচ হয়ে না পড়ত। কিন্তু এ সব তো ম্যাচটা ফয়সলা হয়ে যাওয়ার পরের চিন্তা। আমরা বোর্ডে বেশ ভাল রান তোলার পরেও অবশ্য জানতাম, বিপক্ষ ডাগআউটে যখন দিলশান, ‘বিগ ম্যান’ গেইল, ডেভিলিয়ার্স, কোহলির মতো ব্যাটাররা রয়েছে, তখন কোনও রানই নিরাপদ নয়, যদি ওদের ব্যাটে ঝড় ওঠে। গেইলের ওই পরপর পাঁচটা ওভার বাউন্ডারি মারার আগে পর্যন্ত ম্যাচে আমরাই শাসন করছিলাম। কিন্তু ওই ছক্কাগুলোই আরসিবি-কে টার্গেটের কাছাকাছি এনে দেওয়ার পিছনে আসল কারণ। প্রতি ওভারে যে রানরেট ওদের সামনে চড়চড় করে বাড়ছিল, সেটাও ওদের তার পর থেকে খানিকটা নিয়ন্ত্রণে এসে যায়। তার পরেও অবশ্য পুণে বোলাররা ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ভাল করেছিল। ওদের যেটা সমস্যা হয়েছিল, ম্যাচের শেষের দিকে হওয়া সামান্য গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। সাদা বল একবার ভিজে গেলে তাতে লেংথ-লাইন রাখা খুব কঠিন। ভিজে সাবানের মতো হয়ে ওঠা বলকে গ্রিপ করাই তখন বোলারদের কাছে রীতিমতো সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তা সত্ত্বেও দিন্দা পিঠের টান নিয়ে দুর্দান্ত উনিশতম ওভারটা করে দেওয়ার পরে শেষ ওভারে ২১ রান তোলাটা প্রতিপক্ষের কাছে যথেষ্ট আশাবাদী ব্যাপারই ছিল। কিন্তু ডেভিলিয়ার্স নির্ঘাত অন্য রকম কিছু ভেবেছিল। ফিল্ডিংয়েও আমরা কিছু রান গলিয়েছি। তবে এ সব ব্যাখ্যা এখন আমাদের হারের অজুহাত হিসেবেই শোনাবে।
আজ আমরা আবার চেন্নাইয়ের সঙ্গে চেন্নাইয়ে খেলব। এই টুর্নামেন্টে একটার সঙ্গে পরের ম্যাচটার সময়ের তফাত এতটাই কম যে, কারও পক্ষে আগের ম্যাচের কাটাছেঁড়া করার তেমন সুযোগ নেই। আমাদের এখন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একসঙ্গে হয়ে সামনের দিকে তাকাতে হবে। চেন্নাই ভাল টিম এবং নিজেদের মাঠে ওরা সব গোলাগুলি নিয়ে ঝাঁপাবে। ফলে জেতার জন্য পুণেকে নিজেদের সেরা ফর্মে থাকতে হবে। চেন্নাইয়ের উইকেট আগের ম্যাচগুলোতে যেমন দেখিয়েছে, তেমনই থাকলে আমি নিশ্চিত আজ আরও একটা বড় রানের ম্যাচ হতে যাচ্ছে। আর আইপিএলের বর্তমান যেমন ধারা, তাতে জেতার জন্য নিরাপদ রান আকাশকে ছোঁয়ার মতো কিছু একটাই হয়তো হবে! |
|
|
|
|
|