সাপ নিয়ে সচেতন করতে প্রদর্শনী করেন ‘সাপুড়ে মাস্টার’
কেউ তাঁকে বলেন ‘সাপুড়ে মাস্টার’, কেউ বলেন ‘সর্পবিশারদ’। আবার কেউ বা বলেন ‘বন্য প্রাণীদের বন্ধু’। বিভিন্ন নামে পরিচিত সিউড়ির অজয়পুর হাইস্কুলের জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক দীনবন্ধু বিশ্বাসের উদ্যোগে তাঁর স্কুলেই গড়ে উঠেছে সাপ ও নানা প্রাণীর ভ্রূণের প্রদর্শনী কক্ষ।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮০ ফুট লম্বা ও ২৩ ফুট চওড়া হলঘরে রয়েছে সাপ-সহ নানা প্রাণীর ভ্রূণ। প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই প্রদর্শনী কক্ষ গড়ে উঠেছে বীরভূমের প্রাক্তন সংসদ রামচন্দ্র ডোম ও প্রাক্তন বিধায়ক তপন রায়ের সরকারি অনুদানের টাকায়। তবে ওই টাকায় প্রদর্শনী কক্ষ গড়ে উঠলেও সাপ-সহ বিভিন্ন জীবজন্তু রাখার সরঞ্জাম জোগাড় করেছেন উত্তর ২৪ পরগনার চাঁদপাড়ার বাসিন্দা দীনবন্ধুবাবু। স্কুলে গিয়ে দেখা গেল ২০-৩০টি প্রজাতির ১০০টির মতো মরা সাপ-সহ মানব শিশুর ভ্রূণ, বিভিন্ন প্রাণির ভ্রূণ, সামুদ্রিক নানা মাছ, বিচিত্র ধরণের ব্যাঙ মিলিয়ে সহস্রাধিক জীব-জন্তু রয়েছে। দীনবন্ধুবাবু ওই ঘরে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ক্লাসও করেন।
শুধু তাই নয়, সাপ সম্পর্কে মানুষের ভয় দূর করতে তিনি নানা ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্কুলের প্রদর্শনীকক্ষে শিক্ষক দীনবন্ধু বিশ্বাস। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিজের খরচে হ্যান্ডবিল ছাপিয়ে প্রচার করছেন, যাতে লেখা রয়েছে, ‘সাপ আমাদের বন্ধু। সব সাপের বিষ নেই। তাই সাপ দেখলে আতঙ্কে মেরে ফেলবেন না। সাপ দেখলেই আমাকে খবর দিন।’ তাই ২৫ জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে একটি দল গড়েছেন তিনি। ওই দল সাপের খবর পেলেই এলাকায় গিয়ে সাপ উদ্ধার করে। জেলার প্রায় ২০টি হাইস্কুলে সাপ নিয়ে কুসংস্কার ভাঙতে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও করেছেন দীনবন্ধুবাবু। শান্তিনিকেতনের প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞ ঊর্মিলা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “দীনবন্ধুবাবু সাপের খোলস দেখে বলে দিতে পারেন কোনটা বিষধর আর কোনটা নির্বিষ সাপ। উনি বন্যপ্রাণ রক্ষার জন্য যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।”
বীরভূমের বনাধিকারিক কিশোর এস মানকরও তাঁর কাজের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, “কোথাও সাপ বেরনোর খবর পেলেই আমি দীনবন্ধুবাবুকে খবর দিই। তিনি সাপটিকে উদ্ধার করে জঙ্গলে ছেড়ে দেন।” অজয়পুর হাইস্কুলের ওই প্রদর্শনী কক্ষ প্রসঙ্গে বনাধিকারিক বলেন, “এই রাজ্যের অন্য কোনও স্কুলে এই ধরনের প্রদর্শনী কক্ষ আছে বলে জানা নেই।” তিনি জানান, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও সচেতনতা নিয়ে গত ২০১০ সালে রাজ্য সরকারের বন দফতর থেকে দীনবন্ধুবাবুকে পুরস্কৃতও করা হয়েছে। তবে দীনবন্ধুবাবুর কথায়, “আমার এই কাজে স্কুলের সব শিক্ষকেরই পূর্ণ সহযোগিতা রয়েছে। তা না হলে এই কাজ করা যেত না।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.