যুবতীর পরিবার থানায়
ধর্ষণের বিচারে সালিশি সভা তৃণমূল পঞ্চায়েতের
গ্রামের এক যুবতীকে সেখানকারই একটি যুবক ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ। আর সেই অভিযোগের বিচার করতে সালিশি সভা ডাকল তৃণমূল-শাসিত গ্রাম পঞ্চায়েত। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উলুবেড়িয়ার বাসুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর রামনগর গ্রামে।
ধর্ষিতার পরিবার অবশ্য সালিশি সভার রায় মানেনি। তারা সটান চলে যায় থানায়। ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে গত রবিবার সকালে। সে-দিন রাতেই গ্রামে বসেছিল সালিশি সভা। শেষ পর্যন্ত বুধবার যুবতীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ তাপস সেনাপতি নামে অভিযুক্ত যুবককে ধরে নিয়ে যায়। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। প্রয়োজনে তাকে গ্রেফতার করা হবে। মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর জন্য পুলিশ এ দিনই সন্ধ্যায় ওই যুবতীকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, যুবতীর বয়স আনুমানিক ৩০। তিনি অবিবাহিতা। দুই ভাই এবং মায়ের সঙ্গে থাকেন তিনি। দুই ভাই জরির কাজ করেন। তাতেই সংসার চলে। থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবতীরই এক ভাই। পুলিশের কাছে অভিযোগে তিনি জানান, গত রবিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ তাঁর দিদি ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। তাঁকে একা পেয়ে তাপস জোর করে ধরে একটি খড়িবনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে।
ঘটনাটি রবিবার ঘটলেও এত দেরি করে তাঁরা থানায় গেলেন কেন? ওই যুবতীর ভাই জানান, বিষয়টি দিদির কাছ থেকে জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা অভিযুক্ত যুবকের বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ওই যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁদের ভয় দেখানো হয় বলে অভিযোগ। যুবতীর ভাইয়ের অভিযোগ, পঞ্চায়েতে সালিশি সভা ডেকে টাকার বিনিময়ে মিটমাট করে নেওয়ার জন্যও তাঁদের উপরে চাপ সৃষ্টি করা হয়।
ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে পঞ্চায়েত সালিশি সভা ডাকল কেন? বাসুদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের বিলেশ্বর পাঁজা বলেন, “আমরা সালিশি সভা ডাকলেও কোনও মতামত দিইনি। দু’টি পরিবারকে মুখোমুখি বসিয়ে দিয়েছিলাম মাত্র। তাপস সেনাপতির পরিবারের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু ওই যুবতীর পরিবার ৫০ হাজার টাকা চায়। উভয় পক্ষ একমত হতে না-পারায় সালিশি সভা ভেস্তে যায়।” শেষ পর্যন্ত তাঁরাই ওই যুবতীর পরিবারকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন বিলেশ্বরবাবু। প্রথমেই তিনি তাঁদের পুলিশের কাছে যেতে বললেন না কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে বিলেশ্বরবাবু বলেন, “প্রথম থেকেই ওই মহিলার পরিবারকে থানায় যেতে বলি। কিন্তু উভয় পক্ষই সালিশি সভা ডাকতে জোর করে। তাই সালিশির আয়োজন করা হয়। গ্রামের বিশিষ্ট মানুষেরাও ছিলেন।” ওই যুবতীর ভাই অবশ্য পাল্টা বলেন, “সালিশি সভায় আমরা কোনও টাকা চাইনি। তাপসকে পাঁচ বছরের জন্য গ্রাম থেকে নির্বাসন দেওয়ার কথা বলেছিলাম।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.