মূলস্রোতে ফিরতে চেয়ে জেলবন্দি ২২ জঙ্গির চিঠি
য়ে নয়, পুলিশের মানবিক আচরণই ওঁদের বদলে দিয়েছে। জীবণের অভিমুখটিই পরিবর্তন করতে চান ওঁরা। সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে চেয়ে ওঁরা তাই জেল থেকেই চিঠি দিয়ে আবেদন জানিয়েছেন পুলিশ প্রশাসনের কাছে। অন্তত তেমনই দাবি পুলিশ কর্তাদের।
‘ওঁরা’ হলেন ২২ জন কট্টর মাওবাদী জঙ্গি। রোহতাস জেলার সাসারাম এবং বিক্রমগঞ্জ জেলে কড়া প্রহরায় এই মুহূর্তে বন্দি রয়েছেন। শুধু বন্দি-জীবন থেকে মুক্তি নয়, সমাজের তথাকথিত ‘ভাল’ করার দায় থেকে নিজেদের সরিয়ে এবার সংসারের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে চেয়ে এই কট্টর জঙ্গিরা তাঁদের ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন পুলিশ প্রশাসনকে। সেই মতো রবিবার রোহতাস জেলার পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাসারাম জেলে গিয়ে মাওবাদী নেতা, সাব-জোনাল কম্যান্ডার সুদামা ওরাং-এর সঙ্গে এক দফা বৈঠক করেছেন। এরপরেই বন্দিরা চিঠি দিয়ে তাঁদের ইচ্ছের কথা লিখিত ভাবে প্রশাসনকে জানিয়েছে। পুলিশ সুপার মনু মহারাজের কথায়, “দু’পাতার চিঠি দিয়ে ওই মাওবাদী বন্দিরা জানিয়ে দিয়েছেন, প্রায় ২২ জন বন্দি এই মুহূর্তে সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে চান।” কিন্তু কী ভাবে তাঁদের ফিরিয়ে আনা হবে? পুলিশ সুপার বলেন, “ওঁদের বিরুদ্ধে যে সব মামলা আছে তা দ্রুত বিচারের মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলা হবে। মামলাগুলি মিটে গেলে তাঁদের জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হবে।” জেল থেকে বেরিয়ে তাঁরা কী ভাবে জীবন কাটাবেন? মনু মহারাজের বলেন, “ওঁদের জন্য রাজ্য সরকারের পুনর্বাসন প্রকল্প আছে। মূলস্রোতে ফিরলে সেই প্রকল্পে ওঁদের জীবন ধারণের ব্যবস্থা করা হবে।”
বন্দিরা সকলেই রোহতাস, চুটিয়া এবং নওহাট্টা থানা এলাকায় তাদের জঙ্গি কাজকর্ম চালাত। তারডিহি, মানো, ধানসা, রেহাল প্রভৃতি গ্রামে ওদের বাড়ি। এরা এখন সাসারাম ও বিক্রমগঞ্জ জেলে বন্দি। সুদামা পুলিশ প্রশাসনকে জানান, “জেলের বাইরে আছে, এমন আরও জনা বিশেক জঙ্গি মূলস্রোতে ফিরতে চান।” ওরাংদের সঙ্গে বৈঠকে যে আলোচনা হয়েছে সে সম্পর্কে পুলিশ সুপার বলেন, “ওঁরা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি বিরক্ত। দলের নেতারা নিজেদের স্বার্থে কাজ করছেন। টাকা আদায় করে তা নিয়ে নয়ছয় করছেন। বিলাসবহুল জীবন কাটাচ্ছেন অনেকেই।” দু’পাতার চিঠিতে ওরাং লিখেছে: মাওবাদী নেতারা নামী সংস্থার সাবান ব্যবহার করেন। গায়ে সুগন্ধী মাখেন। সন্তানদের ওঁরা ভাল স্কুলে পড়ায়।
কিন্তু কী ভাবে ওদের মূল স্রোতে ফেরানোর কাজটি সম্ভব হল? পুলিশ সুপার মনু মহারাজ বলেন, “ওঁদের পরিবারের লোকজনকে আমরা প্রথমে বুঝিয়েছি। তারপর ওঁদের যে সব সমস্যা ছিল তা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। জমির সমস্যা, ছেলেমেয়েদের স্কুল ভর্তি করানো ইত্যাদি সবই প্রশাসনের তরফে করা হয়েছে। পুলিশের তরফে ওঁদের সমস্যাগুলিকে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হয়েছে।” উদাহরণ দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, গত বছর জুলাই মাসে ১২ জন মাওবাদী জঙ্গি সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসেন। তাঁদের জন্য সরকারের ঘোষিত পুনর্বাসন প্রকল্পে তাদের নিয়ে আসা হয়েছে। এই প্রকল্পে বাস্তুজমির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়াও কাজ না পাওয়া পর্যন্ত মাসে তিন হাজার টাকা করে অনুদান এবং কাজের জন্য প্রয়োজনে ঋণের ব্যবস্থা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.