আইজি-র সুপারিশ
হাতে গরম রুটি খাওয়াতে রাতেও চলুক জেলের হেঁশেল
তেতো মুখে ও বেলার বাসী রুটি এ বেলা চিবোনোর দিন বুঝি শেষ হচ্ছে। জেলবন্দিরা যাতে দু’বেলাই টাটকা খাবার পান, সে ব্যাপারে এ বার উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
গত ৯ এপ্রিল আইজি (জেল) এই মর্মে একটি নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন রাজ্যের প্রতিটি সংশোধনাগারে। তাতে প্রস্তাব করা হয়েছে, জেলের রান্নাঘরে যে সব কয়েদি কাজ করেন, তাদের সন্ধের পরেও বাইরে রাখার ব্যবস্থা হোক। সমস্ত কয়েদি ও বিচারাধীন বন্দিকে রাতের গরম খাবার দেওয়া হোক বিকেলের বদলে আটটা নাগাদ।
বন্দিদের রাতের খাবার বিকেলে দিয়ে দেওয়া হয় কেন?
কারা-সূত্রের খবর: বর্তমান নিয়মে সূর্য ডোবার আগেই সমস্ত বন্দিকে সেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় (কারা-পরিভাষায় ‘লক আপ’)। জেলে রান্না বা পরিবেশনের কাজে নিযুক্ত কয়েদিরাও বাদ যান না। ফলে বিকেলের মধ্যে রাতের রান্নাও সেরে ফেলতে হয়। আর সেই খাবারই পৌঁছে দেওয়া হয় সেলে সেলে সমস্ত কয়েদির কাছে। রাতে তা-ই তাঁরা খান।
কিন্তু বেশ ক’বছর হল, সংশোধনাগারে প্রচলিত সাবেক ও ‘অনায্য’ প্রথাগুলো পাল্টানোর প্রয়াস শুরু হয়েছে দেশ জুড়ে। কয়েদিদের টাটকা খাবার জোগানোর ভাবনাটি তারই অঙ্গ বলে জানিয়েছেন রাজ্যের আইজি (জেল) রণবীর কুমার। যিনি বলছেন, “জেলে আসা মানেই কিছু অমানবিক পরিস্থিতির মুখে পড়া এই ধারণাটা পাল্টানোর সময় এসেছে। এ জন্য ইতিমধ্যে কিছু ব্যবস্থা হয়েছে। এ তারই একটা।” পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত করতে প্রতিটি জেল-কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শও চেয়েছেন আইজি।
জেল-কর্তাদের কী মত?
কারা-সূত্রের খবর, কয়েকটি জেলের কর্তৃপক্ষ এতে আপত্তি তুলেছেন। তাঁরা মনে করছেন, সূর্যাস্তের পরে ‘লক-আপ’ করায় ঝুঁকি আছে। ওই সময়ে জেলের নিরাপত্তা নিচ্ছিদ্র রাখতে যত রক্ষী রাখা প্রয়োজন, অধিকাংশ জেলে তা নেই। বস্তুত এই ধরনের কিছু সমস্যার কারণে রাজ্যের অনেক সংশোধনাগার যে এখনই সূর্যাস্তের পরে রান্নাঘর চালু রাখার পক্ষপাতী নয়, আইজি (জেল) তা-ও জানিয়েছেন।
এক-একটা জেলে রোজ রাতে মোটামুটি কত খাবার লাগে?
এক জেল-কর্তা জানাচ্ছেন, কয়েদিপিছু আড়াইশো গ্রাম আটার রুটি বরাদ্দ। একটা বড় জেলে রোজ অন্তত অন্তত হাজার দশেক রুটি বানাতে হয়। সঙ্গে ডাল-তরকারি তো আছেই, কখনও মাছ-মাংস বা ডিমও। এক জেল-কর্তার কথায়, “এত কিছু বানানো সময়সাপেক্ষ কাজ। তাই মধ্যাহ্নভোজের পর্ব শেষ হলেই রাতের জন্য লেগে পড়তে হয়। বিকেল তিনটে-সাড়ে তিনটের মধ্যে রাতের খাবার তৈরি করে ফেলতে হয়। তার পরে পরিবেশন। কয়েদিরা খাবার ঢাকা দিয়ে রেখে দেন। খেতে খেতে রাত আটটা-ন’টা।”
ততক্ষণে রুটি ঠান্ডা হয়ে চিমড়ে, ডাল পানসে, সব্জি বিস্বাদ। বাধ্য হয়ে বন্দিরা তা-ই গলাধঃকরণ করেন। নতুন নিয়ম চালু করে এই সমস্যার সুরাহা করতে চাইছে রাজ্য সরকার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.