পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি এ বার ফেসবুক বিতর্ক কাশ্মীরেও।
ফেসবুকের মাধ্যমে কাশ্মীর উপত্যকায় অশান্তি ছড়ানোর জন্য সম্প্রতি এক সুইস মহিলাকে চিহ্নিত করেছে এখানকার পুলিশ। তাঁর নাম রেবেকা ম্যারি। যদিও ৪৭ বছরের রেবেকাকে এখনও ধরা যায়নি। শুধুমাত্র তাঁর পরিচয়টুকুই পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেসবুকে বিভিন্ন ‘পেজ’ তৈরি করে তাতে সরকার তথা ভারত-বিরোধী নানা প্ররোচনামূলক মন্তব্য প্রচারের অভিযোগ রয়েছে রেবেকার বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে পুলিশ এ-ও জানিয়েছে, নিজের নামে নয়, খাদিজা হাসানের ছদ্মনামে তিনি ওই সব কাজ করতেন।
ইন্টারনেটে রঙ্গ-চিত্র ‘শেয়ার’ করা নিয়ে গত বেশ কয়েক দিন ধরেই উত্তাল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। সেই রাজ্যের
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন ‘ব্যঙ্গচিত্র’ মুছতে ফেসবুক-কে সম্প্রতি চিঠিও দিয়েছে সিআইডি। এর মধ্যেই আবার কাঠগড়ায় ফেসবুক।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানাচ্ছেন, মোট তিন বার কাশ্মীরে ঘুরে
গিয়েছেন রেবেকা। “২০০৭ সালে প্রথম বারের জন্য এ রাজ্যে আসেন রেবেকা। তার পর ২০১০-এ আর শেষ বার ২০১১ সালের ডিসেম্বরে। শ্রীনগরের নিশাত এলাকায় এ বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছিলেন রেবেকা।” জানালেন এক অফিসার। তবে ব্যস। ওই পর্যন্তই। রেবেকার বর্তমান গতিবিধি নিয়ে আপাতত ধোঁয়াশায় কাশ্মীর পুলিশ।
শেরগার্দি থানার এক পুলিশ অফিসার জানালেন, দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চালিয়ে রেবেকা সম্পর্কে কিছু সূত্র পেয়েছে পুলিশ। তবে এই কাজে রেবেকা যে একা নন, তা-ও পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন ওই অফিসার। অভিযোগ, উপত্যকারই বিভিন্ন যুবকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে ফেসবুকে অনেকগুলি পেজ তৈরি করেছিলেন রেবেকা। পুলিশ জানাচ্ছে, ‘আল্লাও’, ‘হোসহার জাম্মাত’, ‘বালায়ে খুদা’, ‘উই লাভ সইদ আলি শাহ গিলানি’-সহ ফেসবুকের আরও কয়েকটি পেজে বেশ কিছু দিন ধরে ভারত-বিরোধী নানা রকম প্রচার চালানো হচ্ছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মূলত ভারত ও পাকিস্তান থেকে এই ধরনের পেজ তৈরি করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে জড়িত কেউ কেউ আবার ইউরোপের কোনও কোনও দেশেরও বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই সূত্রে উপত্যকারই বেশ কয়েক জন যুবককে খুঁজছিল পুলিশ। সম্প্রতি তাদের মধ্যে ছয় যুবককে আটক করে পুলিশ। এরা প্রত্যেকেই শ্রীনগরের কোনও না কোনও কলেজে স্নাতক স্তরের ছাত্র। তবে দু’দিন ধরে তাদের জেরা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় ওই যুবকেরা এই সব পেজ তৈরি করার কথা স্বীকার করেছে। ওই ছয় যুবকের জন্য কাউন্সেলিংয়েরও ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। এই সূত্রে কাশ্মীরের আইজি এস এম সহায় বলেন, “ওদের একটা সুযোগ দেওয়া হল। ওরা যদি নিজেদের না বদলায়, তা হলে ওদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” রেবেকার কোনও খোঁজ মিলল কি? সহায় বললেন, “আমি এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না। তদন্তের পরেই সব জানা যাবে।” |