নোনাডাঙায় আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হওয়া বিজ্ঞানী পার্থসারথি রায় বুধবার জেল থেকে বেরিয়েই জানিয়ে দিলেন, ফের ওই আন্দোলনে যোগ দেবেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “ওই আন্দোলনে আমাকে কেউ ডাকেনি। আমি নিজের গরজে গিয়েছিলাম। আবার যাব। আমি নোনাডাঙার উচ্ছেদ হওয়া মানুষদের পুনর্বাসনের দাবির পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব।”
মঙ্গলবার আদালত তাঁর শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর করেছে। পার্থর বক্তব্য, “জামিনের শর্তগুলি দেখিনি। সেখানে যদি বলা থাকে, আমি আর নোনাডাঙায় যেতে পারব না, তা হলে আমাকে হয়তো ফের জেলে ফিরে যেতে হবে।”
বস্তুত, পার্থ জানান, তিনি আমেরিকায় অধ্যাপনার দু’টি চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু সেগুলি প্রত্যাখ্যান করে ২০০৮ সালে তিনি দেশে ফিরে এসেছেন বিজ্ঞানী হিসাবে দেশের সেবা করতে এবং সমস্ত ‘ন্যায্য’ গণ আন্দোলনের শরিক হিসাবে দেশের ‘অগ্রগতি’তে আত্মনিয়োগ করতে। ৮ এপ্রিল নোনাডাঙার উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির অবস্থান মঞ্চ থেকে পার্থ এবং আরও ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রথমে চার দিন লালবাজার সেন্ট্রাল লক আপ ও তার পরে ছ’ দিন আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে কাটিয়ে এ দিনই পার্থ মুক্ত হয়েছেন। বাকি ছ’ জন এখনও জেলে। |
‘আইজার’ (ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ)-এর বিজ্ঞানী পার্থর অভিযোগ, তাঁকে ‘মিথ্যা’ অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এর ফলে তাঁর পেশায় ‘অপূরণীয়’ ক্ষতি হয়েছে। ভোগান্তি হয়েছে তাঁর ছাত্রছাত্রীদের। তা ছাড়া, ‘আইজার’ কেন্দ্রীয় সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের অধীন। ফলে পুলিশ এবং জেল হেফাজতে ১০ দিন কাটানোর জন্য তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সংস্থানও আইনে রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে পার্থ বলেন, “আমাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এর ফলে আমার এবং আমার ছাত্রছাত্রীদের যে বিপুল ক্ষতি হল, তার জন্য আমিই তো সরকারের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করতে পারি। করবই বলছি না। কিন্তু প্রয়োজনে করব।”
তবে পুলিশ তাঁর এবং বাকি ছ’ জনের সঙ্গে যথেষ্ট ‘ভাল ব্যবহার’ এবং ‘সহযোগিতা’ করেছে বলে পার্থ জানান। তাঁকে মুক্তি দিয়ে রাজ্য সরকার কি ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করল? পার্থর জবাব, “সরকার নোনাডাঙার উচ্ছেদ হওয়া মানুষদের পুনর্বাসনের দাবি মেনে নিলে এবং আমার ছয় সহ-বন্দিকে মুক্তি দিলে সেটা হত প্রায়শ্চিত্ত। নোয়াম চমস্কি থেকে শুরু করে দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট জন আমার মুক্তির দাবিতে সরব হওয়ায় সরকারের উপরে চাপ তৈরি হয়েছিল। সে জন্যই তারা মঙ্গলবার আমার জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেনি।” |