পুলিশি ‘জুলুমের’ প্রতিবাদে এবং নিজেদের বিভিন্ন দাবি আদায়ের জন্য রাজ্য জুড়ে আজ, বৃহস্পতিবার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ট্যাক্সিচালকদের কয়েকটি সংগঠন। ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি ড্রাইভার্স ইউনিয়ন’-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘কলকাতা ট্যাক্সি অপারেটর্স ইউনিয়ন’ এবং ‘ট্যাক্সি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’-এর সঙ্গে তারাও এই ধর্মঘটে যোগ দেবে। যদিও ‘ক্যালকাটা ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’ এতে যোগ দেবে না বলেই জানিয়েছেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র।
ধর্মঘটী সংগঠনগুলির দাবি, কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার প্রায় ৯০ শতাংশ ট্যাক্সি ধর্মঘটে যোগ দেবে। এর জেরে নিত্যযাত্রীদের যথেষ্ট নাকাল হতে হবে বলেই আশঙ্কা। মন্ত্রী অবশ্য জানান, ধর্মঘটে যাতে মানুষের সমস্যা না হয়, সে জন্য প্রতিটি পরিবহণ নিগমকে বাড়তি বাস চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বুধবার মদনবাবু বলেন, “প্রচুর পুলিশ মোতায়েন থাকবে। কেউ জোর-জবরদস্তি, ভাঙচুর করে ধর্মঘট সফল করতে চাইলে কঠোর ভাবে তার মোকাবিলা করা হবে। আসলে ট্যাক্সিচালকেরা তো এ সব করেন না। করে দুষ্কৃতীরা।”
কলকাতা এবং লাগোয়া চারটি জেলায় কমবেশি ৩৫ হাজার মিটার ট্যাক্সি চলাচল করে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার ট্যাক্সি আজ রাস্তায় নামবে না বলে দাবি ধর্মঘটী সংগঠনগুলির। তারা জানিয়েছে, রাজ্যের অন্যান্য জেলায় যে সব ট্যাক্সি চলে, তাদের চালকেরাও এই ধর্মঘটে যোগ দেবেন। ফলে সেখানেও সাধারণ মানুষের হেনস্থা হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে।
শহরে ট্যাক্সিচালকদের উপরে পুলিশি ‘জুলুমের’ অভিযোগে এবং জরিমানা আদায়ের বিরোধিতা করে বুধবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ মিছিল করে লালবাজার অভিযান করেন কয়েকশো ট্যাক্সিচালক। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন ম্যাটাডর এবং মিনিডর চালকেরাও। তার জেরে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে দেড় ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রীরা।
পরিবহণমন্ত্রী এ দিন জানান, ‘ক্যালকাটা ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’-এর প্রতিনিধিরা তাঁর সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছেন, তাঁরা ধর্মঘটে যোগ দিচ্ছেন না। সরকারের ‘অবস্থা’র কথা জানেন বলেই তাঁরা ধর্মঘট থেকে দূরে থাকছেন বলেও এই সংগঠনের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন মন্ত্রীকে।
মদনবাবু বলেন, “ওঁরা কিছু দাবি জানিয়েছেন, যেগুলির ব্যাপারে সরকার ইতিমধ্যেই ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে। যেমন, ট্যাক্সিচালকদের জন্য লাঞ্চ-ব্রেকের ব্যবস্থা করা।” বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি জানিয়েছেন, দুপুর ১টা থেকে ৩টের মধ্যে কোনও ট্যাক্সিচালক যদি গাড়ির সামনে ‘লাঞ্চ’ বোর্ড ঝুলিয়ে দুপুরের খাওয়াদাওয়া সারেন, তা হলে সেই সময়ে কোনও যাত্রীকে ফেরানোর জন্য (রিফিউজাল) তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ ‘কেস’ দিতে পারবে না। রাতে ট্যাক্সি চড়লে বেশি ভাড়া দেওয়ার যে দাবি ট্যাক্সিচালকেরা জানিয়েছেন, নীতিগত ভাবে সরকার তার সঙ্গে একমত। পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “দেশের সব শহরেই রাতে ট্যাক্সি চড়লে বাড়তি ভাড়া দিতে হয়। তবে ক’টার পরে তা নেওয়া যাবে, সে ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।” |