ফের বাড়ল ক্রেতাদের খুচরো বাজার দরের ভিত্তিতে হিসাব করা মূল্যবৃদ্ধির হার। বুধবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে মার্চে তা ছুঁয়েছে ৯.৪৭%। খুচরো বাজারে মূলত দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, শাক-সব্জি, মাংস, ভোজ্যতেল ও জ্বালানির চড়া দামের জেরেই লাফিয়ে বাড়ছে এই হার। তবে পাইকারি মূল্য সূচকের ভিত্তিতে হিসাব করা সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার মার্চে দাঁড়িয়েছে ৬.৮৯%। সোমবারে প্রকাশিত এই হারের সঙ্গে খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধির অনেকটাই ফারাক রয়েছে। যা দৈনন্দিন কেনাকাটায় মানুষের উপর বোঝা বাড়ারই ইঙ্গিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই বোঝা আগামী মাসগুলিতে আরও বাড়বে বলেও তাঁদের ধারণা। কারণ বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের মূল্যবৃদ্ধির জেরে এখনও দেশে পেট্রো-পণ্যের দাম বাড়ানো হয়নি। অচিরেই তা বাড়বে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেল সংস্থাগুলি।
ফেব্রুয়ারিতেই প্রথম খুচরো দামের ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার প্রকাশ করা হয় জানুয়ারি মাসের জন্য। সারা দেশের জন্য হিসাব করা এই পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে মূল্যবৃদ্ধির হার জানুয়ারিতে দাঁড়ায় ৭.৬৫%। ফেব্রুয়ারির হার ছিল ৮.৮৩%। খুচরো বাজার দরের ঊর্ধ্বগতিতে উদ্বিগ্ন অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, আমজনতার উপর মূল্যবৃদ্ধির বোঝা কমাতে সরবরাহ ব্যবস্থার ফাঁক-ফোকর দূর করতে হবে কেন্দ্রকে।খুচরো বাজার দরের ভিত্তিতে হিসাব করা খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার মার্চে পৌঁছেছে ৮.২২ শতাংশে। ফেব্রুয়ারিতে তা ছিল ৬.৬২%। মার্চে দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৫.২২%। ভোজ্যতেলের দর বেড়েছে ১৪.২%। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির হার ১১.৮%, পোশাক-জুতো ইত্যাদির ১২.৫%। পাশাপাশি, মাছ-মাংস-ডিমের দাম বেড়েছে ১০.০৬%, শাক-সব্জি ১০.২%।
প্রসঙ্গত, বিশেষজ্ঞদের মতে খুচরো সূচকের ভিত্তিতে হিসাব করা মূল্যবৃদ্ধির হারই বাস্তব চিত্রটি আরও বেশি করে ফুটিয়ে তুলবে। কারণ পাইকারি সূচকে উৎপাদকদের দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যবৃদ্ধির গতিবিধি স্থির করা হয়। তাই তার ভিত্তিতে নীতি স্থির করলে খুচরো বাজারে দাম কমানোয় তার প্রভাবও পড়ে কিছুটা কম। কিন্তু এখানে খুচরো বাজার দরই হিসাবের ভিত্তি। তাই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তার সুদ স্থির করার জন্য এই হারের উপরই এখন থেকে জোর দেবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। অন্যান্য সরকারি নীতির ক্ষেত্রেও একই যুক্তি খাটবে বলে তাঁদের ধারণা। পাশাপাশি, মূল্যবৃদ্ধির এই সূচকে পরিষেবা ক্ষেত্রকেও অন্তর্গত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ভারতের জাতীয় আয়ে পরিষেবা ক্ষেত্রের অবদান ৫৫ শতাংশ।
ডলারে টাকার দাম বুধবার পড়ে যায় ৩১ পয়সা। ফলে ১ ডলারের দাম দাঁড়ায় ৫১.৭৮/৭৯ টাকা। |