পূর্ণিমায় কালীপুজো
পূর্ণিমায় কালীপুজোর রেওয়াজ কম। কিন্তু উত্তর দিনাজপুরের বিন্দোলে প্রতি বছর চৈত্র-পূর্ণিমায় জনৈক সাধনকুমার দে’র উদ্যোগে রক্ষাকালী পুজো হয়। পুজোটি স্বপ্নাদিষ্ট বলে কথিত। এক রাতে সাধনবাবু স্বপ্ন পান, বাড়ির অদূরে মাটির নীচে কালীমন্দির রয়েছে। সেখানে পুজো দিলে সংসারে সুখ-শান্তি আসবে। বহু দিন পূর্বে এক রাজা সেখানে পুজো করতেন। ১৯৮৪ থেকে আবার কালীপুজো শুরু হয়। ২০০৭-এ নতুন মন্দির গড়া হয়। মন্দিরে রক্ষাকালীর সঙ্গে মনসা ও হনুমানের পুজোও হয়। জনশ্রুতি, মনসা পুজোর সময় পাশের জঙ্গলে বিষধর সাপ দেখা যায়। চৈত্র-পূর্ণিমায় বিশাল সমারোহে পুজোর সময় বাউল গান পরিবেশিত হয়। গানের আসরে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের সমাগম ঘটে। মন্দিরটি এই জেলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে অটুট রাখতে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছে। এ রকম আর এক স্বপ্নাদিষ্ট রক্ষাকালীর পুজো হয় জলপাইগুড়ি জেলার রায়কতপাড়ায়। বাংলা ১৩১৪ সালে গ্রামে মারাত্মক কলেরা হওয়ায় প্রচুর মানুষ মারা যান। তখন জনৈক সন্ন্যাসীকে দেবী স্বপ্নাদেশ দেন। সন্ন্যাসীর নির্দেশ মতো জলপাইগুড়ির তৎকালীন মহারাজা মন্দির নির্মাণ করে রক্ষাকালী, দেবী শীতলা ও রাধা-কৃষ্ণের পুজো করেন। অলৌকিক ভাবে পর দিনই নাকি সকলে আরোগ্য লাভ করেন ও গ্রাম থেকে রোগ নির্মূল হয়। সেই থেকেই প্রতি চৈত্র মাসের শেষ শনিবার দেবীর বাৎসরিক পূজা হয়ে থাকে। এখানে আছে কষ্টিপাথরের মূর্তি। কৃষ্ণবর্ণা দেবী বাম পা মহাদেবের বুকে এবং ডান পা সিংহের পিঠে রেখে দণ্ডায়মান। তিনি জিহ্বা বের করেননি। মন্দিরের পাশেই রয়েছে একটি শিবমন্দির এবং হনুমানজির মন্দির। এলাকাবাসীই কমিটি গড়ে মন্দির পরিচালনার কাজ করে আসছেন। রক্ষাকালীর মন্দিরে পুজো না দিয়ে এখানে কেউ কোনও শুভ কাজ করেন না।

ভাঙাপট
ত্রিতীর্থের গোবিন্দঅঙ্গনের কল্যাণমঞ্চে সম্প্রতি অভিনীত হল নাটক ‘ভাঙাপট’। নির্দেশনায় বাংলার স্বনামধন্য নাট্যকার হরিমাধব মুখোপাধ্যায়। ভন ক্লিস্ট-এর লেখা নাটকটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন প্রয়াত নীহার ভট্টাচার্য।
১৯৭২-এ হরিমাধব মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশনাতেই ‘ভাঙাপট’ প্রথম অভিনীত হয় বালুরঘাটে। সে অভিনয় দারুণ সাড়া ফেলেছিল। সে দিনের অভিনেতা ছানাবাবু, সত্যবাবু, বিত্তবাবু, যতীনবাবুরা আজ কেউ নেই। এত দিন পর নতুনদের নিয়ে আবার মঞ্চস্থ হল ‘ভাঙাপট’। নতুন রূপে নতুন আঙ্গিকে। নাটকটিতে দেখানো হয়েছে গ্রামের মোড়ল সরকারের টাকা আত্মসাৎ করায় শহর থেকে সার্কেল অফিসার এসেছেন তদন্ত করতে। মোড়ল বাঁচার জন্য গ্রামের মাস্টারকে হাত করে। ঘটনা এগোতে থাকে। সঙ্গে যুক্ত হয় প্রেম, মান-অভিমান, টুকরো হাসির নানা ঘটনা। শেষে দেবীমূর্তি ভাঙাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসী কী ভাবে মোড়লকে দোষী হিসেবে তুলে ধরে তারই বিবরণ। নতুন ‘ভাঙাপট’ দেখতে নবীনদের সঙ্গে অনেক প্রবীণ দর্শকও এসেছিলেন। নাটক শেষে একটাই প্রশ্ন, পুরনো না নতুন কোন ‘ভাঙাপট’ মন ছুঁয়ে গেল?

নাট্যসন্ধ্যা
বড়দের অনুষ্ঠানে ছোটরা ছাপিয়ে গেল বড়দেরই। সম্প্রতি জলপাইগুড়ির ‘আনর্ত’ নাট্যগোষ্ঠীর নাট্যসন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের খুদেরা এমনটাই করে দেখাল। আর্ট কমপ্লেক্স মঞ্চে আনর্ত-এর ব্যবস্থাপনায় অণুনাটক ও একাঙ্ক নাটক মিলিয়ে চারটি নাটক মঞ্চস্থ হল। প্রথম প্রযোজনা ‘ইভটিজিং’। বারাসাতের রাজীব-হত্যা ঘটনাকে অবলম্বন করে এই নাটকের মঞ্চায়ন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় নাটকটি ছিল বালুরঘাট সৃজনের ‘আগামী কোনোদিন’ এবং ‘আত্মহনন’। রবীন্দ্রনাথ, শেক্সপিয়র, উৎপল দত্ত ও পাবলো নেরুদার রচনার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে তৃতীয় নাটকটি সৃজনে। শেষ নাটক জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের রাজ্যস্তরে পুরস্কার প্রাপ্ত নাটক ‘অচিনপুর যাত্রা’। ১৯৪২-এ পোল্যান্ডের ওয়ারশ- তে ডাক্তার করজ্যাকের অনাথ আশ্রমের ছেলেরা কী ভাবে রবি ঠাকুরের ডাকঘরের অমলের গানের মধ্যে দিয়ে মৃত্যুঞ্জয়ী ভাবনাকে খুঁজে পেল এবং নাৎসিবাহিনীর নৃশংস অত্যাচারকে অবহেলা করে মৃত্যুঞ্জয়ী হয়ে উঠল তাই এই নাটকের বিষয়। ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’ এই গান গেয়ে উপস্থাপিত হল নাটকটি। শেষ দৃশ্যে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের গ্যাস চেম্বারে অনাথ শিশুদের মৃত্যুদৃশ্য ও মৃত্যুর পূর্বে তাদের মৃত্যুঞ্জয়ী হয়ে ওঠার দৃশ্য আপ্লুত করে দর্শকদের।

মৎস্য শিকার
শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্ত উপন্যাসে শখের মৎস্য শিকারি হিসেবে ইন্দ্রকে দেখা গিয়েছিল। দেখা গিয়েছিল, ‘বাবু সমাজ’কে রবি ঠাকুরের ‘দুই বিঘা জমি’ কবিতায় মৎস্য শিকার করতে। বাংলা সাহিত্যে এমন আরও উদাহরণ রয়েছে। সম্প্রতি মাথাভাঙায় রবিবার দুপুরে দেখা গেল এক দল মৎস্য শিকারিকে শহরের কেন্দ্রস্থলে মালিবাগানের দিঘিতে ত্রিপল টাঙিয়ে বসে পড়েছেন। বিভিন্ন পেশার মানুষজন সপ্তাহান্তে এ ভাবেই বিনোদনের খোঁজ করেন। তবে জানা হয়নি, খাওয়ার সুখে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলার মতো মাছ তাঁরা ধরতে পেরেছিলেন কি না?

অন্য রুজি
স্টেশনে, বাসস্টপে, অফিস আদালতের সামনে যোগাসন ও জিমন্যাসটিক্স দেখিয়ে রোজগার করে কোচবিহার জেলার টাপুর হাটের জাহিরুল মিঞা। শরীর এতটাই নমনীয় যে দর্শকরা তাকে বলে ‘হাওয়া’। বাবার মৃত্যুর পর দুই বোন ও মায়ের সংসারের হাল ধরে বছর নয়ের জাহিরুল। মা রাজমিস্ত্রির জোগানের কাজ করেন। পঞ্চম শ্রেণীর পর পড়া হয়নি। কিন্তু সে স্বপ্ন দেখে দুই বোন অনেক দূর পর্যম্ত পড়বে। অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করে পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া ছোট্ট জাহিরুল দৃষ্টান্ত।

উত্তরের কড়চা বিভাগে ছবি ও লেখা দিলে পুরো নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করবেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.