আখাউড়া সীমান্ত পেরিয়ে আসা ‘অনুপ্রবেশকারী’ হাতিটি আপাতত ঠাঁই নিয়েছে ত্রিপুরায় উদয়পুর ডিভিশনের মহারানি জঙ্গলে। কিল্লার জঙ্গল থেকে ১৮ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে কাল সন্ধ্যায় সে ওই জঙ্গলে পৌঁছে যায়। জঙ্গল সংলগ্ন এলাকার অধিবাসীরা হাতিটিকে দেখেছেন। আজ রাতে এই খবর দেন উদয়পুর ডিভিশনের এক পদস্থ কর্তা চন্দরলাল দাস। তবে তার চলার গতি ছিল খুবই মন্থর। সন্তানসম্ভবা বলে তাকে কোনও ভাবেই যাতে বিরক্ত করা না হয় সে দিকে নজর রাখছেন জনা বারো বনকর্মী। এ দিন সন্ধ্যার সময়ে তাকে ধরার চেষ্টা করেও বিফল হন বনকর্মীরা।
আজ দুপুরে পায়ের ছাপ দেখে বন দফতরের কর্মীরা হাতিটিকে ধরার মতলবে মহারানি জঙ্গলে ঢোকেন। তাঁরা জঙ্গলে অপেক্ষা করছিলেন তাকে ধরার জন্য। সন্ধ্যার মুখে হাতিটিকে প্রায় ধরেও ফেলেছিলেন তাঁরা। কিন্তু পায়ে দড়ি লাগানোর সময় লাথি মেরে ফাঁদ কেটে সে পালিয়ে যায়। কেউ অবশ্য জখম হননি এ ঘটনায়। এরপর হাতিটি গভীর জঙ্গলে ঢুকে যাওয়ায় তাকে আর ধরার চেষ্টা হয়নি এ দিন। |
এর আগে বিএসএফ, বন দফতর ও আখাউড়া সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা গিয়েছিল, ‘অনুপ্রবেশকারী’ এই হাতিটি সম্ভবত বাংলাদেশের একটি সার্কাস দলের। শনিবার রাতে শিকল ছিঁড়ে ওই সার্কাসের খাঁচা থেকে পালিয়ে হাতিটি চলে আসে আখাউড়ায়। তারপর কখন চেকপোস্ট অতিক্রম করে ঢুকে পড়ে ভারত ভূখণ্ডে আগরতলায়। বিএসএফ জওয়ানরা তাকে তাড়া করলে হাতিটি ছুটতে থাকে। বাঁধন ছেঁড়া হাতির ভাবভঙ্গিমা দেখে তাকে ঘাঁটাননি পুলিশকর্মীরাও। এরপর নানা জায়গা দাপিয়ে সে ঠাঁই গেড়েছে মহারানি জঙ্গলে। তবে হাতিটি সত্যিই কোনও সার্কাস দলের, না কারও পোষা--সে বিষয়ে পাকাপাকি খবর মেলেনি।
বিএসএফ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল বিজিবি-র (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) সঙ্গে। বিজিবি পরে হাতির ব্যাপারে খোঁজখবর নিলেও সরকারি ভাবে কিছু জানায়নি। হাতিটি বাংলাদেশি কিনা এ সম্পর্কেও লিখিত ভাবে কিছু তথ্য মেলেনি এ পারে।
বন দফতরের অতিরিক্ত অধিকর্তা দেবাশিস চক্রবর্তী জানান, পোষা হাতি ও বনের হাতির চরিত্র আলাদা। তাঁর ধারণা, জঙ্গলে আশ্রয় নেওয়া গর্ভিণী এই হাতিটি যদি ওই জঙ্গলে বন্য অন্য কোনও হাতির দেখা পায়, সে ক্ষেত্রে ওই বন ছেড়ে সে বেরিয়ে আসতেও পারে। সন্তানসম্ভবা বলেই তাকে নিয়ে চিন্তা বন-কর্তাদের। |