এক পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ তুলল পাশের আর এক পঞ্চায়েত। অভিযোগ, সিপিএম পরিচালিত ভুতুড়া পঞ্চায়েত না জানিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কংগ্রেস পরিচালিত মহম্মদবাজার পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গাছ কেটেছে। না জানিয়ে গাছ কাটা ঠিক হয়নি বলে স্বীকার করে নিয়েছে ভুতুড়া পঞ্চায়েত।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বনসৃজন প্রকল্পে কয়েক বছর আগে বন দফতর মহম্মদবাজার ব্লকের ময়ূরাক্ষী মেন ক্যানালের বিস্তীর্ণ এলাকায় গাছ লাগায়। অধিকাংশ গাছ ভুতুড়া পঞ্চায়েতের হলেও ৯০০ মতো গাছ মহম্মদবাজার পঞ্চায়েতের। মহম্মদবাজার পঞ্চায়েত প্রধান মুক্তারানি বাগদির অভিযোগ, “আমাদের পঞ্চায়েতকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে বাজার দরের থেকে অনেক কম দরে আমার এলাকার গাছ বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫৪টি গাছ বিক্রি করে কেটে ফেলাও হয়েছে।” গত ১২ এপ্রিল মহম্মদবাজার রেঞ্জ অফিসারের কাছে লিখিত ভাবে এই অভিযোগ করেন তিনি। নতুন করে আর কোনও গাছ যাতে না কাটা হয়, তার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান। তাঁর আরও অভিযোগ, জানানোর পরেও বনদফতর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ভুতুড়া পঞ্চায়েত তাদের এলাকায় ফের গাছ কাটতে শুরু করলে মুক্তারানিদেবী সোমবার জেলা বন আধিকারিকের দ্বারস্থ হন। |
ভুতুড়া পঞ্চায়েতের প্রধান আনন্দ ধীবরের অবশ্য দাবি, “বনদফতর থেকে ভুতুড়া পঞ্চায়েতকে সমস্ত গাছের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বন দফতরের অনুমতি নিয়েই ওই গাছ বিক্রি করা হয়েছে। আলাদা ভাবে মহম্মদবাজার পঞ্চায়েতকে জানানো হয়নি।” আনন্দবাবু অবশ্য মেনে নিয়েছেন, “ওই পঞ্চায়েতকে না জানানোটা ঠিক হয়নি।” এ দিকে বাজার দরের থেকে অনেক কম টাকায় ওই গাছগুলি বিক্রি করার যে অভিযোগ উঠেছে, সে প্রসঙ্গে আনন্দবাবু বলেন, “গাছগুলি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত পঞ্চায়েতের বোর্ড মিটিংয়ে ঠিক হয়েছে। সেই মতো পঞ্চায়েত সমিতিরও অনুমতি নিয়ে মাস খানেক আগে বন দফতরের কাছে গাছগুলি বিক্রি ও কাটার অনুমতি নেওয়া হয়। টেন্ডারের মাধ্যমে এবং বন দফতরের লোকজনের উপস্থিতিতেই গাছগুলি বিক্রি হয়েছে।”
যদিও মহম্মদবাজার রেঞ্জ অফিসার অধীর খীরহরির দাবি, “ভুতুড়া পঞ্চায়েতকে কেবল তাদের এলাকার গাছের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে তাদের এলাকার গাছ বিক্রি ও কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, “মহম্মদবাজার পঞ্চায়েত এলাকার গাছ কেটে ফেলা ঠিক হয়নি।” অধীরবাবু জানান, মুক্তারানিদেবীর অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার ৫৪টি কাটা গাছ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। জেলা বন আধিকারিক কিশোর মানকর বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ অফিসারকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী ওই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |