জামিন পেলেন বিজ্ঞানী পার্থসারথি রায়। নোনাডাঙায় বস্তি উচ্ছেদ প্রতিরোধ আন্দোলনে জড়িত অভিযোগে ধৃত পার্থসারথিবাবুকে মঙ্গলবার জামিন দিয়েছে আলিপুর আদালত। সরকারি আইনজীবীও তাঁর জামিনের বিরোধিতা করেননি। তবে একই মামলায় গত ৮ এপ্রিল পার্থসারথিবাবুর সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া মাতঙ্গিনী মহিলা সমিতির নেত্রী দেবলীনা চক্রবর্তী-সহ বাকি ছ’জনের জামিনের আর্জি এ দিন খারিজ হয়ে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইসার)-এর বিজ্ঞানী পার্থসারথিবাবুর গ্রেফতারির প্রতিবাদে সম্প্রতি সরব হয়েছিলেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের বিজ্ঞানী ও বিশিষ্টজনেরা। এমনকী, পার্থসারথিবাবুর মুক্তি চেয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে চিঠি লিখেছিলেন চিন্তাবিদ নোয়াম চমস্কিও।
বস্তুত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গে ‘আইনের শাসন’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে নোনাডাঙা এবং রঙ্গচিত্র-কাণ্ডে যথাক্রমে পার্থসারথিবাবু ও যাদবপুরের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রের গ্রেফতারির প্রতিবাদে দেশ-বিদেশের প্রায় ৫০ জন বিজ্ঞানী মনমোহনকে চিঠি দিয়ে তাঁর হস্তক্ষেপ দাবি করেন। ওঁদের অভিযোগ, আইনকে ‘ঢাল’ করে সাধারণ মানুষ ও সমাজকর্মীদের আন্দোলনের অধিকারে আঘাত করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। নোনাডাঙায় যে ভাবে মূল সমস্যার সমাধান না-করে ‘মিথ্যে অভিযোগে’ পার্থসারথিবাবুকে ধরা হয়েছে, তা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিরোধী বলেও মন্তব্য করেছেন তাঁরা।
এ দিন আদালতে অভিযুক্তদের তরফে আইনজীবী শুভাশিস রায় জামিনের আর্জি জানিয়ে বলেন, সে দিনের ঘটনায় যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই সমাজের গুণিজন। যেমন, পার্থসারথিবাবু বিজ্ঞানী। সিদ্ধার্থ গুপ্ত চিকিৎসক। শুভাশিসবাবু আদালতকে এ-ও জানান, সিআইডি হেফাজতে দেবলীনা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। নানা অসুখে তিনি ভুগছেন, বিশেষত চোখের সমস্যায়।” পাল্টা সওয়ালে সরকারি আইনজীবী তপন সাহা আদালতকে জানান, পার্থসারথিবাবুর ব্যাপারে তাঁদের কিছু বলার নেই। তবে বাকিরা যাতে জামিন না-পান, বিচারককে সেই আবেদন জানান তিনি।
শুনানি শেষে আদালত পার্থসারথিবাবুর জামিন মঞ্জুর করে। বাকিদের ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। |