|
|
|
|
নাশকতা কি না, তদন্ত পুরুলিয়ায় |
মালগাড়ি বেলাইন, বিপর্যস্ত ট্রেন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
জবলপুর থেকে চুনাপাথর বোঝাই করে জামশেদপুর যাচ্ছিল ৬৯ বগির বিশাল মালগাড়িটি। পুরুলিয়ার সুইসা ও তোড়াং স্টেশনের মাঝখানে রবিবার গভীর রাতে সেটি বেলাইন হয়ে যাওয়ায় বিপর্যস্ত হল ট্রেন চলাচল। দু’টি ইঞ্জিন-সহ ৩২টি বগি লাইনচ্যুত হয়। প্রাণহানি না-হলেও রেলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রচুর। দীর্ঘ লাইন ভেঙে এবং ওভারহেড তার ছিঁড়ে জট পাকিয়ে গিয়েছে। এটা নিছক দুর্ঘটনা, নাকি এর পিছনে নাশকতা আছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুর্ঘটনাস্থল মাওবাদী এলাকায়। তাই নাশকতার আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
এই দুর্ঘটনার জন্য সোমবার হাওড়া-হাতিয়া এক্সপ্রেস, নয়াদিল্লি-পুরী নীলাচল এক্সপ্রেস, টাটানগর-জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেস ও ভুবনেশ্বর-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস ঘুরপথে চলাচল করে। যাত্রাপথ ছোট করে দেওয়া হয় বোকারো-টাটা প্যাসেঞ্জার, টাটা-বরকাখানা প্যাসেঞ্জার প্রভৃতি ট্রেনের। বেশ কিছুটা রেললাইন ভেঙে এবং বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে এমন অবস্থা হয়েছে যে, মেরামতি শেষ করতে আড়াই দিনেরও বেশি সময় লাগবে বলে জানান দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আধিকারিকেরা। কী ভাবে এবং কেন এই দুর্ঘটনা ঘটল, রেলের ইঞ্জিনিয়ারেরা তা পরীক্ষা করছেন। |
|
পুরুলিয়ার সুইসা ও তোড়াং স্টেশনের মাঝখানে উল্টে যাওয়া মালগাড়ি। নিজস্ব চিত্র |
মালগাড়িটি বেলাইন হল কী ভাবে? চালক তদন্তকারী অফিসারদের জানান, রেল রাত সওয়া ২টো নাগাদ আচমকা প্রচণ্ড জোরে ঝাঁকুনি লাগে। তার পরেই হুড়মুড় করে ইঞ্জিন এবং বগিগুলি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। যে-ভাবে মালগাড়ির ইঞ্জিন ও বগিগুলি বেলাইন হয়েছে, তা দেখে নাশকতার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না কর্তারা। রাঁচি ডিভিশনের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার কালীশঙ্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “বোকারো ও চক্রধরপুর থেকে ক্রেন এনে বগিগুলি তোলার চেষ্টা চলছে।” যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেটি রাঁচি ডিভিশনের চান্ডিল-মুড়ি সেকশনের অন্তর্ভুক্ত। মাওবাদীদের ডাকা বন্ধের মধ্যে মাওবাদী উপদ্রুত পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডি থানা এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটায় চাঞ্চল্য রেল ও পুলিশ মহলে ছড়িয়ে পড়ে।
রেল সূত্রের খবর, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২৭০ মিটার রেললাইন। তার মধ্যে বেশ কিছুটা অংশ ভেঙে গিয়েছে। বেলাইন ইঞ্জিন ও বগিগুলিকে তোলার জন্য ক্রেনের ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু ইঞ্জিন এবং বেশ কয়েকটি বগি রেললাইনের মধ্যে পড়ে যাওয়ায় দুপুর পর্যন্ত ক্রেনটিকে সুইসা স্টেশন থেকে দুর্ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া যায়নি। ফলে উদ্ধারকাজে গতি আসেনি।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার ঘটনাস্থলে যান। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার দিল্লিতে ছিলেন। তিনি ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হন। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সৌমিত্র মজুমদার বলেন, “মালগাড়ি হলেও দুর্ঘটনাটি মারাত্মক। চুনাপাথর বোঝাই প্রচুর বগি উল্টে যাওয়ায় মেরামতি কাজ চালাতেও অসুবিধা হচ্ছে। তা ছাড়া যে-ভাবে রেললাইন ভেঙেছে এবং ওভারহেড তার ছিঁড়েছে, তাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে।” |
|
|
|
|
|