রাতভর নাটক। বহরমপুরে ১৪১৯ এল এ ভাবেই। সঙ্গে ছিল কবিতা উৎসব। নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। সেই সঙ্গে ১৫-২০ এপ্রিল ৬ দিনের রবীন্দ্রসদনের মঞ্চে আয়োজিত হচ্ছে কলাক্ষেত্র-র নৃত্যানুষ্ঠান। একই সময়ে রবীন্দ্রসদনের বাইরে ছাতিম গাছের তলায় অস্থায়ী মুক্ত মঞ্চে শুরু হয়েছে মুর্শিদাবাদ সঙ্গীত মেলা। এই ভাবে সারা সপ্তাহ ধরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেই বাংলা নববর্ষকে বরণ করছে বহরমপুর।
ঋত্বিকের উদ্যোগে নববর্ষের আগে সারা রাত ধরে বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে মঞ্চস্থ হয়েছে একের পর এক নাটক, নাটকের গান, বাউল, হাস্যকৌতুক ও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত। ছিলেন বিভাস চক্রবর্তী ও তীর্থঙ্কর চন্দ। মোহিতবন্ধু অধিকারি বলেন, “মানুষ যে ভাবে আমাদের এই প্রথায় সাড়া দিচ্ছেন, তাতে আমরা অভিভূত।” নববর্ষের বিকেলে বহরমপুর কালেক্টরেট ক্লাব হলে কবি সম্মেলন ও কবিতা উৎসবের আয়োজন করে সময় পত্রিকা গোষ্ঠী। মুর্শিদাবাদ জেলার ৩০ জন বিশিষ্ট কবির স্বরচিত কবিতা পাঠ ছাড়াও ছিল আবৃত্তি ও সঙ্গীত। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের আর্থিক সহযোগিতায় ওই নৃত্য উৎসবের আয়োজন করেছে কলাক্ষেত্র। শ্রুতি পারফর্মিং আর্ট সেন্টার-এর শিল্পীদের মণিপুরী নৃত্যের আঙ্গিকে গীতগোবিন্দ পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে সূচনা হয়েছে ওই নৃত্যোৎসবের। ‘কলাক্ষেত্রম্’ রবীন্দ্রনাথের প্রথম পূজা, বাংলাদেশের ‘থিয়েটার আর্ট ইউনিট’-এর শেষের কবিতা, জিতেন মহারাজের ‘সঙ্গীতিকা’ কত্থক আঙ্গিকে হোলি, দীব্য ভূষণের ‘ভূষণ একাডেমি’ ভরতনাট্যম, মমতাশঙ্করের নৃত্য সংস্থা অমৃতস্য পুত্র পর পর পরিবেশিত হবে। ওই অনুষ্ঠানগুলির আগে প্রতি দিন সন্ধ্যায় কলাক্ষেত্রের নিজস্ব ৬টি প্রযোজনা থাকবে দর্শকদের জন্য।
সেই সঙ্গে গত ৫ বছর ‘গানমেলা’ বন্ধ থাকার পরে অবশেষে নববর্ষে ‘সঙ্গীত মেলা’র মধ্যে দিয়ে তা আবার শুরু হয়েছে। সঙ্গীত মেলার সম্পাদক বিধান পাল বলেন, “জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে সঙ্গীতের নতুন সম্ভাবনা, যাঁরা নিজেদের মতো করে সঙ্গীত চর্চা করে চলেছেন। দর্শকদের সামনে তাঁদের সঙ্গীত প্রতিভাকে তুলে ধরার উদ্দেশ্যেই এই সঙ্গীত মেলার আয়োজন।” গত ১লা এপ্রিল জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ২০০ জন শিল্পীর মধ্যে থেকে ৫৫ জনকে সঙ্গীত মেলার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। নতুন ওই শিল্পীদের পাশাপাশি ওই একই মঞ্চে থাকবেন জেলার বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পীরাও।
সঙ্গীত-নৃত্যের অনুষ্ঠান শেষ হতে না হতেই ২১-২৪ এপ্রিল বহরমপুরের আবৃত্তি সংস্থা অমৃতকুম্ভ ‘মুক্ত মঞ্চ আবৃত্তি উৎসব’-এর আয়োজন করেছে। মুর্শিদাবাদ ছাড়াও বীরভূম, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পূর্ব মেদিনীপুর, মালদহ, বাঁকুড়া জেলার পাশাপাশি বাংলাদেশের আবৃত্তি সংস্থার শিল্পীদের একক ও সমবেত আবৃত্তিতে মুখর হয়ে উঠবে রবীন্দ্রসদনের ছাতিম তলা। |