|
|
|
|
প্রকাশ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও |
‘দুর্নীতি’, নন্দীগ্রামে তৃণমূল প্রধানের নামে এফআইআর |
আনন্দ মণ্ডল • তমলুক |
নন্দীগ্রামের একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে দলীয় কর্মীদের একাংশের তোলা দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর হল থানায়। গোকুলনগর পঞ্চায়েতের প্রধান অশোক মণ্ডলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বন দফতরের কোনও অনুমতি ছাড়াই তিনি সরকারি জমির গাছ কেটে ফেলেছিলেন। এই নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশ হাইকোর্টেরও দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনকে শুনানি করে উপযুক্ত পদক্ষেপের নির্দেশ দেয়। গত ১৩ এপ্রিল জেলা-প্রশাসন অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারীদু’পক্ষকে শুনানিতে ডাকে। তার পরেই জেলাশাসক পারভেজ আহেমদ সিদ্দিকি-র নির্দেশে রবিবার জেলা বনাধিকারিক পঞ্চায়েত প্রধান অশোক মণ্ডলের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে গাছ কাটার অভিযোগ দায়ের করেন নন্দীগ্রাম থানায়। একে দলীয় প্রধানের নামে এফআইআর, তার উপরে এই ঘটনায় নন্দীগ্রামে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেনের বক্তব্য, “বিষয়টি নজরে এসেছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের গোকুলনগর পঞ্চায়েতের কেশবপুর, শিমুলকুন্ডু, জামবাড়ি, বৃন্দাবনচকে সরকারি গাছ কেটে ফেলা ও বিক্রি করায় পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে নিয়মভঙ্গের অভিযোগ তুলে গত বছর জুলাইয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন এলাকার ৬ সক্রিয় তৃণমূল কর্মীরবিশঙ্কর দাস, কনককান্তি জানা, অজিত দাস অধিকারী, ভৃগুরাম পাইক, বিধুপদ মাইতি ও উত্তম মণ্ডল। হাইকোর্ট সম্প্রতি জেলা প্রশাসনকে অভিযোগের শুনানির নির্দেশ দেয়। সেই মতোই ১৩ এপ্রিল জেলাশাসক শুনানিতে ডাকেন সংশ্লিষ্ট দু’পক্ষকে। তার পরেই জেলা বনাধিকারিককে ওই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে এফআইআর-এর নির্দেশ দেন। রবিবার জেলা বনাধিকারিক প্রশান্ত পাল নন্দীগ্রাম থানায় এফআইআর করেন। প্রশান্তবাবুর বক্তব্য, “কেশবপুর মৌজায় অনুমতি ছাড়াই গাছ কাটা হয়েছে এবং অন্য কয়েকটি মৌজায় অনুমতি নিয়ে গাছ কাটা হলেও পরে আর নিয়মমাফিক গাছ লাগানো হয়নিএই মর্মে গোকুলনগরের পঞ্চায়েত প্রধানের নামে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।” ‘অভিযুক্ত’ প্রধান অশোক মণ্ডলের বক্তব্য, “কেশবপুর মৌজায় গাছ কাটার ব্যাপারে বন দফতরের অনুমতি নেওয়া হয়নি, এটা ঠিক। তবে মামলা-অভিযোগের পিছনে দলেরই একাংশ জড়িত।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আমাদের দলেরই স্বদেশ দাস এবং পঞ্চায়েতের প্রাক্তন দলীয় প্রধান জহরলাল করের নির্দেশেই তাঁদের ঘনিষ্ঠরা জল ঘোলা করছেন।” স্বদেশবাবুর বক্তব্য, “সরকারি গাছ কাটা ও বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম ভাঙার পাশাপাশি দুর্নীতিও করেছেন প্রধান। এ নিয়ে দলীয় কর্মীরাই প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন। আমার কোনও ভূমিকা নেই। তার পরে যা হয়েছে হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ীই হয়েছে।” প্রসঙ্গত, দুর্নীতির অভিযোগেই গোকুলনগরের পূর্বতন প্রধান জহরলাল কর অপসৃত হয়েছিলেন। নন্দীগ্রামে বার বার দলীয় জনপ্রতিনিধিরা দুর্নীতির অভিযোগে জড়িয়ে পড়ায় পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিড়ম্বনা বাড়ছে তৃণমূল নেতৃত্বের। |
|
|
|
|
|