|
|
|
|
রামপুরহাটে নতুন পুরপ্রধান |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট |
পুরসভায় দলীয় প্রতীকে জেতা সাত কাউন্সিলর আছেন। অথচ তাঁদের পরিবর্তে রামপুরহাটের পুরপ্রধান নির্বাচিত হলেন সাত নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর অশ্বিনী তিওয়ারি। সোমবার তিনি শপথ নেন। অশ্বিনীবাবু বলেন, “আমি উন্নয়নের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব।”
উপপুরপ্রধান আব্বাস হোসেনের ‘উদ্ধত’ আচরণের প্রতিবাদ না করার অভিযোগ তুলে গত ২৬ মার্চ পুরসভার তিন নির্দল, দুই বিজেপি এবং এক ফরওয়ার্ড ব্লক সদস্য অনাস্থা এনেছিলেন সদ্য প্রাক্তন তৃণমূল পুরপ্রধান নির্মল বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। ওই অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছিলেন বর্তমান পুরপ্রধান অশ্বিনীবাবু। তিনি কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসেবে তৃণমূল প্রার্থীকে পারাজিত করেছিলেন। ভোটের পরে তিনি তৃণমূলের সদস্য পদ গ্রহণ করেন।
তবে নির্মলবাবুর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেও ভোট হয়নি। তার আগেই সম্প্রতি বোলপুরে দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের উপস্থিতিতে দলের সাত কাউন্সিলর এবং নির্দল কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল নির্মল বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পদ থেকে পদত্যাগ করবেন। ১১ এপ্রিল বোর্ড অফ কাউন্সিলের সভায় নির্মলবাবুর পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়। নির্মলবাবু বলেন, “আমি ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলাম। উন্নয়নমূলক কাজে নতুন পুরপ্রধানকে আমরা সাহায্য করব।” |
|
শপথের পর অশ্বিনী তিওয়ারি। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম। |
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরপ্রধান হিসেবে সর্বপ্রথম অশ্বিনী তিওয়ারির নাম প্রস্তাব করেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর সবিতা দাস। তার পরে একে একে সেই প্রস্তাবে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর সৈয়দ সিরাজ জিম্মি, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর নির্মলবাবু, ৫ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সুপর্ণা চৌধুরী এবং মাধব সর্দার, ৬, ৯, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলররা। প্রস্তাবকে সমর্থণ করেন ২, ১২, ১৫, ১৩, ১৪, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা। তবে ৩ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের দুই সিপিএম কাউন্সিলর উপস্থিত থাকলেও প্রস্তাবকে সমর্থণ বা বিরোধীতা করেননি। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শুভাশিস চৌধুরী বলেন, “আমরা যেটা চেয়েছিলাম সেটাই হয়েছে। কারণ এখানে কার্যত তৃণমূল বোর্ড দখলে ধরে রাখতে পারল না।” সুপর্ণা চৌধুরী এবং মাধব সর্দারের দাবি, “তৃণমূলের পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার পরে ৭ জনের মধ্যে ৫ জন তৃণমূল কাউন্সিলর অশ্বিনীবাবুকে সমর্থণ করতে এসেছিলেন। চাপে পড়ে তাঁকে ইস্তফা দিতে হয়েছে। ভোটাভুটি হলে ১৫-২ ফল হত।”
জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “দলীয় সাত কাউন্সিলর ছাড়াও অশ্বনীবাবু আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন এবং ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মঞ্জুরা খাতুন তৃণমূল সমর্থিত নির্দল সদস্য। সুতরাং আমাদের ৯ জন কাউন্সিলর। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি, ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছিল। দল সেগুলি শুধরে দিয়েছে। বোর্ড তৃণমূলের ছিল তৃণমূলের রয়েছে।” অন্য দিকে, জেলা কংগ্রেস সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি বলেন, “পুরসভা অচল হয়ে পড়েছিল। উন্নয়নমূলক কাজের জন্য এটা দরকার ছিল।” পুরসভার বিরোধী দলনেতা সঞ্জীব মল্লিক বলেন, “আমরা বিরোধী আসনেই থাকতেও চাই। তাই এই প্রস্তাবে কোনও সাড়া দিইনি।” |
|
|
|
|
|