|
|
|
|
ফের প্রকাশ্যে গোষ্ঠীকোন্দল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
বক্সিরহাট ও দিনহাটার সংঘর্ষের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার একই দিনে দুই শিবিরের সম্মেলন আয়োজন ঘিরে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এল কোচবিহার শহরে। রবিবার পৃথকভাবে যুযুধান দুই শিবিরের আয়োজিত শহর ব্লক তৃণমূল সম্মেলন ঘিরে ওই ছবি স্পষ্ট হয়েছে। শহরের রবীন্দ্র ভবনে এদিন সম্মেলন করেন দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের অনুগামী বলে পরিচিতরা। অন্যদিকে, একই দিনে কোচবিহার ক্লাবেও সম্মেলন করেন জেলা সভাপতির বিরোধী গোষ্ঠী বলে পরিচিত মিহির গোস্বামীর অনুগামীরা। জেলা সভাপতি শিবির আয়োজিত সম্মেলনের উদ্যোক্তাদের পরিতোষ কর। মিহির গোস্বামীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রঞ্জিত গুপ্তচৌধুরী। দুজনেই নিজেদের শিবিরের সম্মেলনের জন্য ছাপানো চিঠিতে শহর ব্লক তৃণমূল সভাপতি বলে দাবি করেছেন। পরিতোষ করের নামে ছাপানো চিঠিতে সম্মেলনের উদ্বোধক হিসাবে দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের নাম রয়েছে। আমন্ত্রণপত্রে ছাপা হয় বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন, বিধায়ক বিনয় বর্মন, অর্ঘ্য রায়প্রধান, আব্দুল জলিল আহমেদের নাম। আমন্ত্রণ পত্রে নাম নেই জয়গাঁ ডেভলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান মিহির গোস্বামীর। অন্যদিকে, রঞ্জিতবাবুর নামে ছা্পানো চিঠিতে নির্দিষ্টভাবে কোনও নেতার নাম দেওয়া হয়নি। তবে পরিতোষবাবুর আয়োজিত সম্মেলনে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ছাড়াও প্রদেশ সম্পাদক আব্দুল জলিল আহমেদ, যুব তৃণমূল নেতা কুমার রাজীব নারায়ণ, টিএমসিপি সভাপতি সাবির সাহাচৌধুরী, আইএনটিইউসি জেলা সভাপতি প্রাণেশ ধর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। রঞ্জিত গুপ্তচৌধুরীর সম্মেলনে অবশ্য প্রাক্তন বিধায়ক তথা জয়গাঁ ডেভলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান মিহির গোস্বামী নিজেই উপস্থিত ছিলেন না। মোবাইলে ধরা হলে মিহিরবাবু বলেন, “আমি বাইরে আছি।” এসএমএসে দুটি সম্মেলনের ব্যাপারে তাঁর প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলেও জবাব মেলেনি। তবে রঞ্জিতবাবু দাবি করেন, “মিহিরবাবু জেলার বাইরে থাকার জন্য আসতে পারেননি। সম্মেলনের ব্যাপারে কালকেও খোঁজ নেন। এদিন মোবাইলে তাঁর ভাষণ দেওয়ার কথাও ছিল। নেটওয়ার্ক সমস্যায় যোগাযোগ করা যায়নি।” সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, আমাকে ওই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন খোদ রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। সেই মনোনয়ন জেলা সভাপতি বাতিল করতে পারেন না। সংগঠন দুর্বল করার জন্য ওসব করা হচ্ছে। আমিই প্রকৃত শহর সভাপতি। তাই আমাদের সম্মেলনই প্রকৃত সম্মেলন।” ওই সম্মেলনে তপন মুখোপাধ্যায়, সন্তোষ মুখোপাধ্যায়, প্রবাল গোস্বামী, ভূষণ সিংহ প্রমুখ অবশ্য উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দলের শহর সহ সভাপতি হিসাবে তপন মুখোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করা হয়। তপনবাবু বক্তব্য রাখতে উঠে বলেন, “সঠিক তৃণমূলের বিরুদ্ধে যারা আসবে লাঠিসোটা নিয়ে কর্মীরা তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। আজকের সম্মেলন থেকে আসল-নকল চিহ্নিত করতে হবে।” প্রাক্তন কাউন্সিলার ভূষণ সিংহ বক্তব্য রাখতে গিয়ে কটাক্ষের সুরে বলেন, “ভাল কাজের জন্য ট্রান্সপোর্ট থেকে জেলা সভাপতিকে অপসারণ করা হয়। আগামী দিনে তাকে জেলা সভাপতি পদ থেকে সরানো হলে আরও খুশী হব।” এই ব্যাপারে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেন, “শকুনের কথায় গরু মরে না। মমতা বন্দোপাধ্যারের অনুগত সৈনিক আমি। প্রথম দিন থেকে তাঁর সঙ্গে আছি। কিছু পাওয়ার আশায় পরে দলে আসিনি। সেই সঙ্গে রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “অন্য কোথাও সম্মেলন করা আখেরে দল বিরোধী কাজের মধ্যে পড়বে। কিছু ধান্দাবাজ লোক দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে। রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে সব জানিয়ে রিপোর্ট দেব।” |
|
|
|
|
|